ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ঘরেই পরীক্ষা করুন স্তন ক্যান্সার

ডাঃ মালিহা শিফা | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৪ ঘণ্টা, জুলাই ৬, ২০১২
ঘরেই পরীক্ষা করুন স্তন ক্যান্সার

ঢাকা: আমাদের মতো অনুন্নত দেশে সাধারণ মানুষের দৃষ্টিতে ক্যান্সার একটি ভিতিকর রোগের নাম। যার মূল কারণ রোগ সম্পর্কে অজ্ঞতা এবং কুসংস্কার।

স্তন ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতনতার শেষ পর্বে জেনে নিন আরও কিছু তথ্য।
    
স্তন ক্যান্সারে কি ধরণের অপারেশন করার প্রয়োজন হয়:

স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য সাধারণত যে অপারেশনগুলোর করার প্রয়োজন হয়:

•    ল্যাম্পপেকটমি (Lumpectomy)
•    ম্যাসটেকটমি (Mastectomy)
•    সেন্টিনাল নোড বায়োপসি (Sentinel node biopsy)
•    অক্সিলারি লিম্ফ নোড ডিসেকশন (Axillary lymph node dissection)

স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসা:

লোকাল চিকিৎসার উদ্দেশ্য হলো শরীরের অন্যান্য জায়গা বাদ দিয়ে শুধু টিউমার যেখানে হয়েছে সে জায়গায় চিকিৎসা করা। যেমন সার্জারি এবং রেডিয়েশন থেরাপি।

সিস্টেমিক চিকিৎসায় সমস্ত শরীরের চিকিৎসা দেওয়া হয় রক্তনালীর মাধ্যমে অথবা মুখে যাতে শরীরে ছড়িয়ে যাওয়া ক্যান্সার কোষে চিকিৎসা পৌঁছায়। কেমোথেরাপি, হরমোন, টার্গেটেড থেরাপি এই ধরনের চিকিৎসার আওতায় পড়ে।

সার্জারি: স্তনের টিউমার সরানোর জন্য বেশির ভাগ নারীদেরই কোনো না কোনো ধরনের সার্জারির প্রয়োজন হয়। সার্জারির উদ্দেশ্য হলো যতটা সম্ভব ক্যান্সার টিস্যু কেটে বাদ দেওয়া।

ফলোআপ কেয়ার

স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসা শেষ হলে স্বস্তি বোধ হয় তবে ক্যান্সার আবার ফিরে আসার দুঃশ্চিন্তাটা থাকে। চিকিৎসা শেষ হয়ে গেলে নিয়মিত ফলোআপ ভিজিটে আসা উচিত। এই সব ভিজিটে ডাক্তার কোনো উপসর্গ আছে কিনা জানতে চাইবেন, শারীরিক পরীক্ষা করবেন এবং প্রয়োজনে রক্ত পরীক্ষা, এক্স-রে, ম্যামোগ্রাম, সিটি স্ক্যান করতে উপদেশ দিবেন।

ক্যান্সার ফিরে এসেছে কিনা বা ছড়িয়ে গেছে কিনা তা জানার জন্য ফলোআপ প্রয়োজন। প্রথম দিকে এই ভিজিটগুলো ৩-৪ মাস অন্তর হয়ে থাকে। তারপর রোগীর অবস্থার উপর নির্ভর করে ফলোআপ এর সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয়। প্রাথমিক অবস্থায় স্তন ক্যান্সার সনাক্ত হলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নিরাময় সম্ভব। সুতরাং স্তন ক্যান্সার মানেই নিশ্চিত মৃত্যু নয়।

স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধের উপায়:

যেহেতু রোগটির নির্দিষ্ট কোনো কারণ জানা যায়নি। তাই এই রোগ এড়ানোর জন্য কয়েকটি নিয়ম মেনে চলার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়ঃ

১। জন্মনিরোধক বড়ি অল্পবয়স হতে ও বহুদিন (১০ বছরের বেশি সময়) ধরে না খাওয়া।
২। স্তন ক্যান্সারের সম্ভাবনা থাকলে সে ক্ষেত্রে মেমোগ্রাফি করুন। যেমন- পরিবারের কারও আগে যদি স্তন ক্যান্সার হয়ে থাকে।
৩। উচ্চমাত্রায় ইস্ট্রজেন থেরাপি নেয়া থেকে বিরত থাকা।
৪। সন্তানকে বুকের দুধ পান করান।
৫। টাটকা শাক-সবজি ও ফল খান।
৬। সন্দেহ হলে ক্যান্সার সার্জনের শরণাপন্ন হন।
৭। ধূমপান ও এলকোহল পরিহার করুন।
 
মনে রাখবেন প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নিরূপণ করলে এবং চিকিৎসা করলে আপনি অনেক দিন সুস্থ থাকবেন। সার্জারি করার সময় টিউমারটি বগলে লসিকাগ্রন্থিসহ অপসারণ করলে এই রোগ আবার দেখা দেয়ার সম্ভাবনা খুব কম। অসম্পূর্ণভাবে টিউমার অপসারণ করলে এই রোগ আবার হতে পারে।

বর্তমানে অপারেশন টেকনোলজি অনেক উন্নতি লাভ করছে, যার ফলে এই রোগের চিকিৎসা এখন বাংলাদেশেই সম্ভব। তা ছাড়া অ্যাডভান্স স্তন ক্যান্সারে এখন টিউমার ফেলে দিয়ে ব্রেস্ট এরিয়া রিকন্সট্রাকশনও করা হচ্ছে।

লেখক: কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স কর্মকর্তা, মেরি স্টোপস

বাংলাদেশ সময়: ১০০০ ঘণ্টা, জুলাই ০৬, ২০১২
সম্পাদনা: তানিয়া আফরিন, বিভাগীয় সম্পাদক

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।