ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

শিবচরে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০২৪
শিবচরে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ

মাদারীপুর: মাদারীপুর শিবচরে ভুল চিকিৎসায় পলি আক্তার (৩০) নামে এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।  

সোমবার (৮ জানুয়ারি) রাতে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

 

নিহত পলি শিবচর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের খানকান্দি এলাকার লিটন শেখের স্ত্রী ও শিবচর উপজেলার উমেদপুর ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামের খবির মোল্লার মেয়ে।

জানা গেছে, ৮ জানুয়ারি সকাল ৯টার দিকে রোগীকে সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য শিবচর পৌরবাজারের ৭১ সড়কের মা ও শিশু (প্রা:) হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আনা হয়। সেখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পলিকে ভর্তি করে রোগীর স্বজনদের ৫-৬ ব্যাগ রক্ত ও প্রয়োজনীয় ওষুধ ব্যবস্থা করতে বলে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী রক্ত ও ওষুধ ব্যবস্থা করেন তারা। দুপুর ১টার দিকে রোগীকে সিজারের জন্য অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ফাহমিদুল হাসান তনু নামে একজন চিকিৎসক সিজারিয়ান অপারেশন করেন। এবং একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেন পলি। তবে অপারেশনের পরই প্রচুর রক্তক্ষরণ শুরু হয় মায়ের (পলি।

পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীকে স্বাভাবিক করার চেষ্টার এক পর্যায়ে ব্যর্থ হয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে নেওয়ার পথে পলির মৃত্যু হয়।

এদিকে রাত ১১টার দিকে শিবচরে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগে ওই হাসপাতালের সামনে ও ভেতরে বিক্ষোভ করেন স্বজনরা। পরে স্থানীয়দের বিচারের আশ্বাসে তারা ফিরে যান।  

রোগীর শাশুড়ি সাহেদা বেগম বলেন, ‘আমার বৌমাকে তারা মেরে ফেলেছে। কেন আগে বললো না রোগীর অবস্থা খারাপ। আল্লাহ আমাকে ফুটফুটে একটি নাতি দিয়েছেন। আমি ওদের বিচার চাই। ঘটনার তদন্ত করে এর বিচার চাই। ’

রোগীর ননদ শিউলি বলেন, 'আমার ভাইয়ের স্ত্রীকে ৮ জানুয়ারি সকালে হাসপাতালে আনি। তার ১০ হাজার টাকা আমাদের সঙ্গে সিজার করা বাবদ চুক্তি হয়। সিজারের পর চিকিৎসকরা আরও ৫ হাজার টাকা দাবি করেন। তখন আমরা বলেছি- রোগী সুস্থ হোক আমরা দেব। তবে রোগীর যে অবস্থা খারাপ তারা এগুলো গোপন রেখেছিলেন। আমরা জিজ্ঞেস করি রোগী বেডে আনেন না কেন? ওরা বলে রোগী ভালো আছেন। টেনশণের কোনো কারণ নেই। রক্ত ম্যানেজ করতে বললে আমরা তাও করেছি। রক্ত ক্রস ম্যাচিং করার জন্যও অনেক টাকা নিয়েছে, সেটাও দিয়েছি। রাতে হঠাৎ চিকিৎসকরা জানান. রোগীর অবস্থা ভালো না, তাকে আপনারা ঢাকা নিয়ে যান। তখন দেখি আমার ভাবির জ্ঞান ফেরেনি। পরে আমরা ঢাকা নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। আমরা দোষীদের বিচার চাই।  

এ বিষয়ে জানতে ডাক্তার ফাহমিদুল হাসান তনুকে তার মোবাইলফোনে কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।  

হাসপাতালে ব্যবস্থাপনা পরিচালক শারমিন আক্তার বলেন, কেন যে এমন হলো আমরা বলতে পারব না। এই ডাক্তার আমাদের এখানে কলিংয়ে আসেন। তার বাড়ি ফরিদপুর। নিয়মিত সিজার করেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের রিপোর্ট না করার জন্যও অনুরোধ করেন।

মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) বিকেলে শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত গোলদার বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি। তবে এখনও কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০২৪
এসআরএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।