ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ডিম খেতে নেই মানা!

স্বাস্থ্য ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০১২
ডিম খেতে নেই মানা!

ডিম হৃদযন্ত্রের জন্য ধূমপানের মতোই ক্ষতিকর, সম্প্রতি এই দাবি করে কানাডীয় বিশেষজ্ঞরা পুষ্টিবিদদের তোপের মুখে পড়েছেন।

কানাডীয় দলটি তাদের নতুন গবেষণার পর মত দিয়েছেন, ডিমের কুসুম হৃদযন্ত্রের শিরা গুলোতে ঘন আস্তর তৈরি করে যা হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের কারণ হতে পারে।

সপ্তাহে তিনটি ডিম খেলে ধূমপায়ীর সমান ক্ষতিই ডেকে আনা হবে।

কিন্তু ব্রিটিশ পুষ্টিবিদ আমান্ডা আরসেল মোটেই বিষয়টি মেনে নিতে রাজি নন। তিনি বলেছেন, কানাডার বিশেষজ্ঞদের ধারণা সঠিক নয়। সেখানেই ক্ষান্ত হননি, মানব স্বাস্থ্যের জন্য ডিম কতটা শ্রেয় একটি খাদ্য তার ব্যাখ্যাও তুলে ধরেছেন আমান্ডা।

কম ক্যালরি: আমান্ডা জানান, ডিমে ক্যালরির পরিমাণ কমেছে। ৮০’র দশকে এসে প্রতিটি মাঝারি আকারের ডিমে ১২ ক্যালরি কমে যায়। আগে প্রতিটি ডিমে ৭৮ ক্যালরি ছিলো যা কমে ৬৬ ক্যালরিতে দাঁড়ায়। গবেষকদের মতে, আগে মুরগি খেতো মাংস ও হাড্ডিজাতীয় খাবার। কিন্তু এখন উচ্চ-আমিষযুক্ত কৃত্রিমভাবে তৈরি খাদ্য দেওয়া হয় ফলে এসব মুরগির ডিমে ক্যালরির পরিমাণ কমে যাচ্ছে।

কম চর্বি: আমান্ডা জানান, আজকালের ডিমে আগের তুলনায় ২০ শতাংশ চর্বি কম পাওয়া যাচ্ছে। স্যাচুরেটেড ফ্যাট কমেছে এক পঞ্চমাংশ। স্যাচুরেটেড ফ্যাট শরীরে রক্তে কোলেস্টরেলের পরিমাণ বাড়ায় এবং হৃদরোগের শঙ্কা বাড়িয়ে দেয়। সুতরাং এই চর্বি ডিমে কমে যাওয়া মানেই হচ্ছে ক্ষতির আশঙ্কা কমে যাওয়া।

ডিম পেট ভরিয়ে রাখে: আমেরিকার রচেস্টার সেন্টারের স্থুলতাবিষয়ক গবেষকরা তাদের গবেষণায় দেখিয়েছেন সকালের নাস্তায় যারা দুটি সিদ্ধডিম খেয়ে ফেলছেন তারা নাস্তায় যারা ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার পছন্দ করছেন তাদের তুলনায় দিনে সব মিলিয়ে ৪০০ ক্যালরি কম গ্রহণ করছেন। যেকোনো আমিষ-সমৃদ্ধ খাবার দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে এক্ষেত্রে ডিমের কার্যকারিতা একটু বেশিই।  

কলেস্টেরল কম: ২০০৯ সাল অবধি বিশেষজ্ঞরা সপ্তাহে ৪টি ডিম খাওয়ার পরামর্শ দিতেন। তাদের আশঙ্কা ছিলো ডিমের কোলেস্টেরল রক্তের কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দেয়।

কিন্তু আজকের পুষ্টিবিদরা বলছেন, বিপদটি ঘটায় স্যাচুরেটেড ফ্যাট, যা আসে বিস্কুট, চর্বিযুক্ত মাংসের টুকরো থেকে। আর এ ধরনের খাবার যকৃৎকে বেশিমাত্রায় সক্রিয় করে ফরে তৈরি হয় আরো বেশি স্যাচুরেটেড ফ্যাট। এছাড়াও একটি ডিম ৮০’র দশকে যতটুকু কোলেস্টেরল ধারণ করতো বর্তমানে তার পরিমাণ অন্তত ১০ শতাংশ কমেছে।

ভিটামিন ডি: তেলসমৃদ্ধ মাছের পাশাপাশি ডিমও এমন একটি খাবার যা মানব শরীরে ভিটামিন দেয়। শরীরের হাড়ে ক্যালসিয়াম টেনে নিতে এই ভিটামিনই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আর অতীতে একটি ডিম যতটা ভিটামিন ডি দিতো এখন তার তুলনায় ৭০ শতাংশ বেশি ভিটামিন ডি পাওয়া যায়।

মিনারেল সেলেনিয়াম: ডিম মিনারেল সেলেনিয়ামের একটি বড় উৎস, যা মানবদেহে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে। এছাড়াও পুরুষের যৌন সক্ষমতা বাড়াতে এবং মুড ঠিক রাখতে এই সেলেনিয়ামের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

আমিষ: প্রতিটি ডিমে ৮ গ্রাম প্রোটিন রয়েছে। মানবদেহে ত্বক ও পেশিসহ সকল অংশে কোষগুলোকে সঠিকভাবে কাজ করাতে ও তা রক্ষণাবেক্ষণে এই প্রোটিন ভূমিকা রাখে।

মেধাশক্তি: প্রতিটি ডিমে ২৫০ মিলিগ্রাম কোলাইন পাওয়া যায়। এটি একধরনের বি-ভিটামিন যা মস্তিষ্ক রাসায়নিকের একটি উপাদান হিসেবে স্মৃতিশক্তি নিয়ন্ত্রণ করে। অন্তঃসত্ত্বা কোনো নারী দিনে ৫৫০ মিলিগ্রাম কোলাইন গ্রহণ করলে তা তার গর্ভে বেড়ে ওঠা সন্তানের মস্তিষ্কগঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

বাংলাদেশ সময় ০৯১৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০১২
এমএমকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।