ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

রোগীর পেট থেকে ১২ কেজি ওজনের টিউমার অপসারণ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫০ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০২৪
রোগীর পেট থেকে ১২ কেজি ওজনের টিউমার অপসারণ

বরিশাল: বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এক রোগীর পেট থেকে ১২ কেজি ওজনের টিউমার অপসারণ করেছেন সার্জারি বিভাগের চিকিৎসকরা।
 
রোববার (৩০ জুন) হাসপাতালের পুরাতন ভবনের পঞ্চম তলায় সার্জারি অপারেশন থিয়েটারে প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা অস্ত্রোপচারের মধ্য দিয়ে রেট্রো পেরিটোনিয়াল নামের টিউমারটি অপসারণ করা হয়।

বর্তমানে ৪৫ বছর বয়সী রোগী কামাল হোসেন সুস্থ আছেন।  

সফল এই অস্ত্রোপচারের নেতৃত্ব দেওয়া শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজের উপাধ্যক্ষ ও সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. জি এম নাজিমুল হক জানান, রোগীর পেটের চারপাশে টিউমারটি ছড়িয়ে ছিল। বিশেষ করে তার পেটের ওপরের অংশ থেকে শুরু করে নিচ পর্যন্ত টিউমার বিস্তৃত ছিল। আমরা রোগীর খাদ্যনালী বিপদমুক্ত রেখে ১২ কেজি ওজনের বড় আকারের টিউমারটি অপসারণ করেছি।

তিনি বলেন, টিউমারটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বায়োপসি টেস্ট করতে পাঠানো হয়েছে। রোগী বর্তমানে সুস্থ আছেন। বায়োপসি রিপোর্ট আসা পর্যন্ত রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকবেন।

ডা. জি এম নাজিমুল হক আরও বলেন, এই ধরনের টিউমার রোগী বেশিদিন বহন করলে ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই প্রাথমিক অবস্থায় এই রোগের চিকিৎসা করানো হলে রোগীর ঝুঁকির আশঙ্কা কমে যায়।  

তাই শরীরের কোথাও কোনো চাকা হলে বা পেট ভারী হওয়ার মতো সমস্যা দেখা গেলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

রোগীর স্বজন মৌরিন বেগম জানান, পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠী উপজেলার সোহাগদল গ্রামের বাসিন্দা মো. কামাল হোসেন একজন রেডিও মেকানিক। গত দুই বছর পূর্বে তার পেটে ব্যথা শুরু হয়। তখন অর্থের অভাবে গ্রামের হোমিও চিকিৎসকের পরামর্শ নেন। পরে হোমিও চিকিৎসক তাকে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। গত ২২ জুন কামাল হোসেন শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের ১ নং ইউনিটে অধ্যাপক ডা. জি এম নাজিমুল হকের তত্ত্বাবধানে ভর্তি হন।

রোগীর খালাতো ভাই মো. জাহিদ হোসেন জানান, শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে দুই সন্তানের জনক মো. কামাল হোসেনকে ভর্তির পর এখানকার চিকিৎসকরা তার চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করেন।  আর এ পর্যন্ত তেমন কোনো খরচ ছাড়াই সফল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে। রোগী বর্তমানে পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডে আছেন।

অধ্যাপক ডা. জি. এম. নাজিমুল হকের নেতৃত্বে অস্ত্রোপচারের টিমে ছিলেন সহকারী অধ্যাপক ডা. প্রদীপ কুমার কর্মকার, সহকারী অধ্যাপক ডা. গ্রিন চন্দ্র বিশ্বাস, সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. অনুপ কুমার সরকার ও ডা. মো. হোসাইন শাওন, মেডিকেল অফিসার ডা. মো. বায়েজীদ হোসেনসহ ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।  

ডা. অনুপ কুমার সরকার বলেন, রোগী কামাল হোসেন পেট ফুলা, পেটে ব্যথা, খাবারে অনীহা ও দিনে দিনে ওজন কমে যাওয়ার সমস্য নিয়ে ভর্তি হন। তখন সিটি স্ক্যানসহ বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায় তার পেটে বড় সাইজের রেট্রো পেরিটোনিয়াল নামের টিউমার রয়েছে। তখন ৪৫ বছর বয়সী এই রোগীর ওজন ছিল মাত্র ৫০ কেজি। অপারেশনটি ছিল খুবই জটিল। প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা সময় লেগেছে এই অপারেশনে।  

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৯ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০২৪
এমএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।