ঢাকা, শনিবার, ৩ কার্তিক ১৪৩১, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ রবিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

সরকার কার্যকরী কিছু করলে এত ডেঙ্গু রোগী আসত না: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

ইউনিভার্সিটি করেস্পন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০২৪
সরকার কার্যকরী কিছু করলে এত ডেঙ্গু রোগী আসত না: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

ঢাকা: সরকার কার্যকরী কিছু করতে পারলে এত রোগী ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে আসত না বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দৌরগড়ায় পৌঁছে দেওয়ার কথা।

কিন্তু সরকারের উদ্যোগের ঘাটতি রয়েছে। এগুলো পূরণ করতে হবে। সবকিছু ভেঙে নতুন করে গড়ার কথা। কিন্তু তার কতটুকু সম্ভব, আমরা জানি না।

শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলো চৌধুরী সিনেট ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

দুইশর অধিক মেডিকেল ক্যাম্প গঠন উদযাপন উপলক্ষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ড্রিমার্স কনসাল্টেনশন ও রিসার্চের নামক একটি সংগঠনের উদ্যোগে অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়। সংগঠনটি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্বাস্থ্য-উপকমিটির সঙ্গে বন্যাদুর্গত এলাকায় মেডিকেল ক্যাম্প করে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিয়েছে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ড. মামুন আহমেদ, বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খোরশেদুল ইসলাম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমম্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, আব্দুল কাদের, তাহমীদ আল মোদ্দাসীর এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্যরা।

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে অনেক বছর হয়ে গেছে। আমরা নানাভাবে দ্বিধাবিভক্ত হয়েছি। কিন্তু শুরু থেকেই গরিবদের একটি স্বাস্থ্য-কার্ড দেওয়া গেলে আমরা এগিয়ে যেতাম।

তিনি বলেন, ডাক্তার-নার্সরা আন্দোলন করেছেন। তাদের আন্দোলন যৌক্তিক আন্দোলন। তাদের যৌক্তিকভাবে যতটুকু প্রাপ্য, ততটুকু আমরা দেব। ডাক্তাররা স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইনের কথা বলেছেন। আমরা আগামী একসপ্তাহের মধ্যে তা কেবিনেটে দিতে পারব।

উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে সবগুলো সরকারি হাসপাতালে ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট কর্মীদের অভাব আছে। নোয়াখালীতে আমি গিয়ে দেখলাম উপজেলা হাসপাতালে মাত্র ২ জন ডাক্তার, যেখানে ১৪ জন থাকার কথা। আমরা গণমাধ্যমে এমন অনেক দেখেছি, ভবন আছে, কিন্তু সেখানে ডাক্তার নেই। এ বিষয়গুলোতে আমাদেরও দায় আছে। কারণ আমরা সোচ্চার হতে পারিনি।

এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিতে নান উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমম্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আমরা কী অনেক বেশি হাসপাতাল তৈরি করব, নাকি বেশি মানুষকে রোগী হওয়া থেকে বাঁচাব, তা আমাদের ভাবতে হবে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোই অধিক কার্যকরী হবে।

তিনি বলেন, আমরা দেশের যেকোনো সংকটে ডাক্তারদের পাশে পেয়েছি। কিন্তু ইন্টার্ন ডাক্তাররা এখনো সম্মানজনক অর্থ পান না। সে পরিমাণ টাকা পেলে গ্রামেও আমরা ডাক্তারদের রাখতে পারব।

আরেক সমম্বয়ক আব্দুল কাদের বলেন, আমাদের মোট জাতীয় আয়ের ০.৭ শতাংশ স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় হয়। এর থেকে দুঃখজনক আর কিছু হতে পারে না। করোনার সময় আমরা ভঙ্গুর স্বাস্থ্যব্যস্থা স্পষ্ট হয়েছে। কিন্তু আমরা এখনো তা থেকে উত্তরণ করতে পারিনি।

তিনি বলেন, হাসপাতালে সুশাসন, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে সেখানে দলীয় রাজনীতি নিষেধ করতে হবে।

প্রসঙ্গত, ড্রিমার্স কনসাল্টেশন অ্যান্ড রিসার্চ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে যৌথভাবে বন্যাদূর্গত এলাকায় প্রায় এক কোটি টাকা সমমূল্যের চিকিৎসা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। এ বছরে তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে আরও ১০০টি মেডিকেল ক্যাম্প, এক লাখ রোগী এবং ১ কোটি টাকার ওষধ সেবা দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০২৪
জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।