ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

সুখী জীবনের প্রতিচ্ছবি প্রাণোচ্ছ্বল হাসি

এস এম আববাস, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ৬, ২০১২
সুখী জীবনের প্রতিচ্ছবি প্রাণোচ্ছ্বল হাসি

ঢাকা: হাসুন, প্রাণ খুলে। হাসলে শরীর ভালো থাকবে, হার্ট ভালো থাকবে।

স্বাভাবিক হাসিতে যতোটা উপকার, চেষ্টা করে হাসলেও ততটাই।

এ বিষয়টি সামনে নিয়ে শরীর ও হৃদযন্ত্র ভালো রাখতে গত ২৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ব হার্ট বিদসে জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল ৯দিন ব্যাপী ব্যাতিক্রমি কর্মসূচি হাতে নেয়। তাদের কর্মসূচির মুখ্য বিষয় ছিলো ‘হ্যাপি লাইফ’। আয়োজন ছিলো হ্যাপি লাইফের আলোকচিত্র প্রদর্শনী।

হাসপাতালের করিডোরের দেয়ালে প্রদর্শনীতে স্থান পায় সারা দেশের ২৯টি ছবি। নির্বাচিত ছবিগুলোতে ফুটে ওঠে, যারা হাসতে জানেন তারা ভালো থাকেন। প্রদর্শনীর বিভিন্ন ছবিতে সুখী জীবনের বাস্তব চিত্র ফুটে তুলে ধরা হয়।     

প্রদর্শনীতে স্থা পাওয়া ছবিগুলোতে দেখা যায়, মা তার শিশুকে কোলে নিয়ে হাসছেন, আনন্দে শিশুরা পানিতে লাফিয়ে পড়ছে, ফালগুনে কিশোরীরা মাথায় ফুল সাজিয়ে আনন্দ-আড্ডায় মেতেছে ইত্যাদি। আলোকচিত্র প্রদর্শনীর এসব ছবিতে সুখী জীবনের অকৃত্রিম চিত্র ফুটে ওঠে।

এ ছবিগুলোর একটি ছবি রাজশাহী অঞ্চলের এক আদিবাসী নারীর মুখ স্থান পায়। প্রচণ্ড শীতে ফসলের মাঠে কতটা সুখী আদিবাসী ওই নারী, তা তার হাসিমাখা মুখেই চিত্রিত। ছবিতে হাসি দেখেই বোঝা যাবে আদিবাসী ওই নারী কতটা সুস্থ শরীরিকভাবে এবং কতটা সবল হৃদযন্ত্রের অধিকারী হিসেবে।

আদিবাসী এই নারীর ছবিটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাফিক্স ডিজাইনের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী তাহমিনা হক তিষার। তিষা চিত্রসাংবাদিক ফরিদ আখতার পরাগের ‘রাজশাহী ফটোগ্রফি সোসাইটি’তে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন আলোকচিত্র ধারণের ওপর। প্রশিক্ষণরত তিষা শুরুতেই আলোকচিত্র ধারণ করে সফলতা পান।

নির্বাচিত ২৯ জনের মতো তিষাও ঢাকায় আসেন সম্মাননা নিতে। গত ২৯ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া প্রদর্শনীর দিন ৩০ সেপ্টেম্বর জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নির্বাচিতদের প্রত্যেককে একটি সার্টিফিকেট, টি শার্ট ও উত্তরীয় তুলে দেয়। সম্মননা পেয়ে তিষাসহ সবাই খুশি।  

তাহমিনা হক তিষা বাংলানিউজকে জানান, হ্যাপি লাইফের আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে তার ছবির বিষয় ‘স্মাইল অব হারভেস্ট’। তিষা বলেন, “বরেন্দ্র অঞ্চলের আদিবাসী নারীর হাসিতে ফসলের হাসি চিত্রিত হয়েছে। ছবিটি গত জানুয়ারিতে প্রচণ্ড শীতের দিনে ক্যামেরাবন্দি করা হয়।

ছবিতে আদিবাসী নারীর পিছনে ফসলে মাঠ দেখা যাচ্ছে। কঠোর শারিরীক পরিশ্রমের পরেও তার মুখে আন্দন্দের হাসি। ফসলের মাঠের প্রতিকৃতিই যেন আদিবাসী নারীর মুখের হাসিতে ফুটে উঠেছে।

আলোকচিত্র প্রদর্শীতে নির্বাচিতরা ছাড়া অনেকে এসেছিলেন সুখী জীবনের বাস্তব চিত্র দেখতে। প্রদর্শনী দেখতে আসা রাজশাহী মহিলা পরিষদের লিগ্যাল এইড সম্পাদক শাকিলা ইসলাম যুঁথী বাংলানিউজকে জানান, উদ্যোগটি ব্যতিক্রমী। হ্যাপি লাইফের ছবিগুলো দেখে বিলাসবহুল নয় সাধারণ জীবনেই সুখ ও সুস্থতা বেশি বলে আমার মনে হয়েছে।

বিশ্ব হার্ট দিবসে এ বছরের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘এক বিশ্ব এক ঘর, এক হৃদয়’। দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মতো জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালও দিবসটি পালনে গুরুত্ব দেয়। নয় দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে ছিলো প্রতিদিন রোগীদের উচ্চতা ও ওজন মাপা, বিএমআই নির্ধারণ, ব্লাড প্রেসার ও পালস নির্ণয়। প্রয়োজনীয় ইসিজিসহ ডাক্তারি ব্যবস্থাপত্রও প্রদান করা।

হাসপাতালে পক্ষ থেকে ব্যতিক্রমি কর্মসূচি হিসেবে আটদিন বিভিন্নস্থানে চিত্র প্রদর্শনী ও অনলাইন কুইজের আয়োজন করা রয়েছে।

রোববার (৭ অক্টোবর) শেষ দিনে রয়েছে পরিবার পর্যায়ে হার্ট ক্যাম্পিং, শিশুদের জন্যে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী, র‌্যালি, সেমিনার ও ইএসএমআর হার্ট থেরাপির উদ্বোধন।  

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০১২
এসএমএ/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।