ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

খুমেক হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার বন্ধ!

মাহবুবুর রহমান মুন্না, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬২২ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০১৩
খুমেক হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার বন্ধ!

খুলনা: দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের একমাত্র বৃহৎ সরকারি স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (খুমেক) অপারেশন থিয়েটার ১৪ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে!

১৯ জুলাই রাতে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে চারটি অপারেশন থিয়েটারের দু’টির মূল্যবান যন্ত্রপাতি পুড়ে যায়। ফলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া প্রায় ২০০ রোগীর জটিল অপারেশন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

ইতোমধ্যে অনেক রোগী বাধ্য হয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। অনেকে ভর্তি হতে এসে ফিরে যাচ্ছেন। বাংলানিউজের বিশেষ অনুসন্ধানীতে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

খাদ্যনালীতে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে ভর্তি হন রেখা বিশ্বাস। অপারেশনের মাধ্যমে তার বিকল্প খাদ্যনালী প্রতিস্থাপনের কথা ছিলো। কিন্তু অপারেশন থিয়েটার বন্ধ থাকায় মুমূর্ষু এই রোগী এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।

সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স বিভাগে ছটফট করছেন কলেজ ছাত্র আলমগীর। পাশে বসা কৃষক বাবা ফজলুর সান্ত্বনা দেওয়া ছাড়া আর কিছুই করতে পারছেন না।

শুধু রেখা বা আলমগীর নন। এই হাসপাতালের সার্জারি, অর্থোপেডিক্স, গাইনী ও ইএনটি বিভাগে প্রায় দুইশ’ রোগীর জটিল অপারেশন বন্ধ হয়ে আছে।

অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল রোগীরা ঢাকা বা অন্যত্র চলে যেতে পারলেও অসচ্ছলদের পক্ষে তা সম্ভব হয়ে উঠছে না।

তারা বাংলানিউজকে জানান, অনেকেই নিজের প্রিয়জনকে বাঁচাতে গবাদি পশু, কাছে থাকা স্বর্ণালংকার, ধান ও মাছ বিক্রি করে টাকা সংগ্রহ করে অপারেশনের জন্য হাসপাতালে অপেক্ষা করছেন।

খুমেকের অ্যানেস্থেসিওলজি বিভাগের জুনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. শেখ ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদ বুধবার রাত এগারটা তিন মিনিটে বাংলানিউজকে জানান, ১৯ জুলাই রাতে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের কারণে অপারেশন থিয়েটারের লাইট, অ্যানেস্থেসিয়া মেশিন ও ডামাথার্মি মেশিন পুড়ে যাওয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি জানান, ওটি ব্লকের অধিকাংশ মেশিন নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ইচ্ছা থাকলেও রোগীদের অপারেশন করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে জরুরি রোগীদের অপর দু’টি অপারেশন থিয়েটারে অপারেশন করা হচ্ছে।

খুমেকের সার্জারি বিভাগের সহকারি রেজিস্ট্রার ডা. মোস্তাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘মেশিন নষ্ট। যার মূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা। ’

তিনি জানান, প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম না থাকায় রোগীদের অপারেশন করা যাচ্ছে না।

খুমেকের তত্ত্বাবধায়ক ডা. পরিতোষ কুমার কুণ্ডু অপারেশন থিয়েটারের অগ্নিকাণ্ডের কথা স্বীকার করে বাংলানিউজকে বলেন, ‘অপারেশন সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে এমনটি বলা যাবে না। বিশেষ অপারেশনগুলো করা হচ্ছে। ’

তবে জীবন বাঁচাতে খুব দ্রুত খুমেক হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার সচল করা উচিত বল মনে করছেন খুলনার সচেতন মহল।

বাংলাদেশ সময়: ০৬১৪ ঘণ্টা, আগস্ট ০১, ২০১৩
এমআরএম/সম্পাদনা: মীর সানজিদা আলম ও হুসাইন আজাদ, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।