ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

অতিরিক্ত মাংস খাওয়ার ক্ষতিকর প্রভাব

মো. আজিবুর রাহমান রাজিব | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০১৩
অতিরিক্ত মাংস খাওয়ার ক্ষতিকর প্রভাব

ঢাকা: মাংস এক ধরনের প্রোটিন জাতিও খাবার। যা পানি, প্রোটিন ও চর্বির সমন্নয়ে তৈরি।

কোষ তৈরির জন্য প্রতিদিন আমাদের একটু প্রোটিন খাওয়া প্রয়োজন।

আমেরিকান একটি কৃষি বিষয়ক সংস্থা বলছে, প্রাপ্তবয়স্ক একজন মানুষ প্রতিদিন প্রায় ২৮ গ্রাম মাংস খেতে পারে। কিন্তু অতিরিক্ত মাংস খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

আল্লাহর নামে পশু কোরবানি দেওয়া হয় বলে ঈদুল আজহাকে কোরবানির ঈদ বলা হয়। বাংলাদেশের বেশিরভাগ মুসলমান গরু কোরবানি দিয়ে থাকে।

এজন্য এ উৎসবে প্রচুর গরুর মাংস খাওয়া হয়। কিন্তু অতিরিক্ত মাংস খেলে আমাদের শরীরে অনেক ক্ষতিকর প্রভাব পরে। তাই মাংস খেতে হবে বুঝে শুনে।


২০১৩ সালে পুষ্টি ও ক্যান্সারের ওপর ইউরোপিয়ান প্রসপেকটিভ ইনভেস্টিগেশন (ইপিআইসি) নামে একটি সংস্থা গবেষণা চালায়। মাংস খাওয়ার সঙ্গে হৃৎপিণ্ডের বিভিন্ন রোগ ও ক্যান্সারের সম্পর্ক রয়েছে বলে গবেষণায় দাবি করা হয়।

এই গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী আসুন জেনে নিই অতিরিক্ত মাংস খাওয়ার কিছু কুফল:

ক্যান্সার

সম্প্রতি দেখা যায়, অতিরিক্ত মাংস, বিশেষ করে লাল মাংস খাওয়ার কারণে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি অনেক অংশে বেড়ে যায়।   এতে ফুসফুস ক্যান্সার, খাদ্যনালীর ক্যান্সার, লিভার ক্যান্সার, মলাশয় ক্যান্সার ও অগ্নাশয় ক্যান্সার হতে পারে।

হৃৎপিণ্ডের রোগ

হৃৎপিণ্ডের বিভিন্ন রোগের সঙ্গে মাংস খাওয়ার অনেক সম্পর্ক রয়েছে। বেশি মাংস খেলে রক্তচাপ বাড়তে পারে, স্টক, হার্ট ফেইল হতে পারে। ৪৫ থেকে ৬৫ বছর বয়সের মধ্যে নিয়মিত মাংস খাওয়ার কারণে হৃৎপিণ্ডের রোগ হওয়ার ঝুঁকি ৩ গুণ বেড়ে যায়।   হারর্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ১ মিলিয়ন মানুষের ওপর একটি গবেষণা চালায়। এ গবেষণায় দেখা যায়, যারা নিয়মিত ৫০ গ্রাম বা এর চেয়ে বেশি মাংস খান, তাদের হার্টের অসুখ হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় মধ্যে ৪২% এবং ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে ১৯%।  

পশুকে খাওয়ানো অ্যান্টিবায়োটিকে মানুষের ক্ষতি

ওজন বৃদ্ধি ও রোগমুক্ত রাখার জন্য পশুকে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানো হয়। এসব পশুর মাংস খেলে মানুষের শরীরে এই অ্যান্টিবায়োটিক প্রবেশ করে যা অত্যন্ত ক্ষতিকর।

পশুকে খাওয়ানো হরমনে মানুষের ক্ষতি

১৪ মাসের মধ্যে সদ্য জন্ম নেওয়া ৩৭ কেজি ওজনের একটি বাছুরকে ৩ থেকে ৪ মণ ওজনে পরিণত করার জন্য বিভিন্ন প্রোটিন জাতিও খাবার ও হরমনাল ওষুধ খাওয়ানো হয়। যা পশুর শারীরিক বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
সাধারণত গবাদি পশুকে Estradiol, Progestereone, Zeranol, Trenbolone Acetate নামে হরমনাল ওষুধ খাওয়ানো হয়। এছাড়া ওজন বাড়ানোর জন্য Melengesterol Acetate নামে এক ধরনের হরমোনাল ওষুধ খাওয়ান হয়। এমন পশুর মাংস খেলে মানুষের শরীরে এসব হরমোন প্রবেস করে। এতে দ্রুত মানুষের ওজন বেড়ে যেতে পারে, ক্যান্সার হতে পারে। এছাড়া অল্প বয়সে প্রজনন ক্ষমতা অর্জন বা স্পার্ম এর সংখ্যা কমে যেতে পারে।  

অন্যান্য সমস্যা
অতিরিক্ত মাংস খাওয়া হৃৎপিণ্ডের সমস্যা ছাড়াও বিভিন্ন রোগের কারণ হতে পারে:

•    ব্রেইনের ক্ষমতা কমিয়ে দেয়
•    স্মৃতি শক্তি ও চিন্তা শক্তি কমে যায়।
•    শরীরের ওজন বাড়তে পারে।
•    পশুদের খাওয়ানো অ্যান্টিবায়োটিক মানুষের শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।

তাই এই ঈদে অবশ্যই সবাই নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন থাকবেন। যদিও মাংস একটি লোভনীয় ও মজাদার খাবার। তারপরও সুস্থতার জন্য মাংস খেতে হবে পরিমিত।

http://www.fitday.com/fitness-articles/nutrition/healthy-eating/are-you-eating-too-much-meat.html

http://en.wikipedia.org/wiki/Meat

http://articles.mercola.com/sites/articles/archive/2003/12/20/beef-dangers.aspx

http://www.sikhnet.com/news/effects-humans-eating-meat

http://articles.mercola.com/sites/articles/archive/2003/12/20/beef-dangers.aspx

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।