ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

অনুমোদন ছাড়া ডিএনএ পরীক্ষা বা সংরক্ষণে শাস্তি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০১৪
অনুমোদন ছাড়া ডিএনএ পরীক্ষা বা সংরক্ষণে শাস্তি ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: সরকারের অনুমোদন ছাড়া কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ‘ডিএনএ’ পরীক্ষা বা সংরক্ষণ করলে পাঁচ বছর পর্যন্ত জেল এবং তিন লাখ টাকা জরিমানার বিধান রেখে জাতীয় সংসদে উত্থাপিত ‘ডি-অক্সিরাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড (ডিএনএ) বিল-২০১৪’-এর রিপোর্ট চূড়ান্ত করেছে সংসদীয় কমিটি।

আসছে অধিবেশনেই এই বিলটি পাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।


 
রোববার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই রিপোর্ট চূড়ান্ত করা হয়।
 
কমিটির সভাপতি রেবেকা মমিনের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ, মোহাম্মদ সিরাজুল আকবর, মাহাবুব আরা বেগম গিনি, মনোয়ারা বেগম এবং রিফাত আমিন অংশ নেন। মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
 
কমিটির সদস্য মাহাবুব আরা বেগম গিনি বলেন, আজ কমিটির মিটিংয়ে বিলের ভুলভ্রান্তি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করছি আগামী অধিবেশনে এ বিলটি পাস হবে। বিলটি পাস হলে অপরাধী সণাক্ত করা সহজ হবে।

অপরাধী চিহ্নিত, পিতৃত্ব-মাতৃত্ব নিরূপণ কিংবা মৃতদেহ শনাক্ত করার মতো কাজে ডিএনএ পরীক্ষা ও সংরক্ষণে আইন প্রণয়নে গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর বিলটি মন্ত্রিসভার অনুমোদন পায়। এরপর মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ বিলটি জাতীয় সংসদে উত্থাপন করেন।

পরে এটি যাচাই-বাছাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়।
 
বিলে ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবরেটরি স্থাপন ও জাতীয় ডাটাবেইজ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীকে চেয়ারম্যান করে ১৮ সদস্যের একটি ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবরেটরি উপদেষ্টা পরিষদ গঠনের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

উপদেষ্টা পরিষদে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, পুলিশ, বিশেষজ্ঞসহ বিশিষ্ট নাগরিকদের রাখার কথা বলা হয়েছে।
 
বিলে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি বা সংস্থা সরকারের অনুমোদন ছাড়া ডিএনএ পরীক্ষা বা সংরক্ষণ করতে পারবে না। এ আইন ভাঙলে পাঁচ বছর পর্যন্ত জেল এবং তিন লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। ডিএনএ নমুনা ধ্বংস, পরিবর্তন, দূষিত বা জাল করা হলে; কারো দায়িত্বে অবহেলার কারণে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা না গেলে বা নমুনা নষ্ট হলেও বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে প্রস্তাবিত আইনে।
 
এতে বলা হয়েছে, তদন্তের প্রয়োজনে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে কেউ অসম্মতি জানালে পুলিশ আদালতে যেতে পারবে। তবে কমপক্ষে দুইজন সাক্ষীর উপস্থিতি এবং বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি ছাড়া কোনো ব্যক্তির ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা যাবে না।
 
প্রস্তাবিত আইনে, জাতীয় ডিএনএ ডাটাবেইজে চারটি ইনডেক্স প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করা হয়েছে। এগুলো হলো- অপরাধস্থল ইনডেক্স, সাজাপ্রাপ্ত অপরাধী ইনডেক্স, অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের ইনডেক্স এবং সরকার কর্তৃক সময় সময় নির্ধারিত অন্য কোনো ইনডেক্স, প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদানের বিধানেরও প্রস্তাব রাখা হয়েছে বিলে।
 
কোনো ব্যক্তির ডিএনএ’র রাসায়নিক বিশ্লেষণ করলে প্রতিটি নির্দেশকের বিপরীতে দুটি করে পৃথক সংখ্যা পাওয়া যায়, যার প্রতিটি ওই ব্যক্তির এক একটি বৈশিষ্ট্যের পরিচয় বহন করে। ১৬টি নির্দেশকের ৩২টি সংখ্যা মিলেই তৈরি হয় ওই ব্যক্তির ডিএনএ রূপরেখা।

আলাদা আলাদা মানুষের ক্ষেত্রে এই রূপরেখা আলাদা হয়। ফলে, কোনো অপরাধ সংঘটনের স্থানে নমুনা হিসেবে পাওয়া রক্ত, ত্বক, দেহের অংশ এমনকি চুল থেকেও ডিএনএ পরীক্ষা করে অপরাধী শনাক্ত করা সম্ভব হয়। আবার দুই ব্যক্তির ডিএনএ রূপরেখা, অর্থাৎ একজনের ডিএনএ পরীক্ষায় পাওয়া ৩২টি সংখ্যার সঙ্গে অন্যজনের সংখ্যা মিলিয়ে দেখলেই বাবা-মা বা আত্মীয়তার সম্পর্ক বলে দেওয়া যায়।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।