ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

সনাতনী ওষুধের ওপর গুরুত্ব বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৪
সনাতনী ওষুধের ওপর গুরুত্ব বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: সনাতনী ওষুধের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা। এ বিষয়ে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ড. পুনম ক্ষেত্রপাল সিং বলেন, সনাতনী চিকিৎসা পদ্ধতি ধরে রাখতে এর চর্চা, ওষুধ ও চিকিৎসকদের জন্য বিধি প্রণয়নের মাধ্যমে কঠোর মানদণ্ড বেঁধে দিতে হবে।



যদি সনাতনী ওষুধকে বিদ্যমান স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সঙ্গে যথাযথভাবে সম্পৃক্ত করা যায়, তবে এটি সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর প্যান প্যাসেফিক সোনারগাঁও হোটেলে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের ১১টি দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং নীতি-নির্ধারকেরা এই অঞ্চলের দেশগুলোর জাতীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় সনাতনী (দেশজ) ওষুধকে সম্পৃক্ত করার উপায় নিয়ে আলোচনা করেন।

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার হালনাগাদ সনাতনী ওষুধ কৌশল ২০১৪-২০২৩ পর্যালোচনা করেন এবং সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রচলিত সনাতনী ওষুধ কাঠামোতে কীভাবে সম্পৃক্ত করা যায়, সে সম্পর্কে আলোচনা করেন মন্ত্রীরা।

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ড. ক্ষেত্রপাল সিং বলেন, সনাতনী পদ্ধতির চিকিৎসকেরা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের কোটি মানুষকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে থাকে।

তিনি বলেন, এই অঞ্চলের প্রতিটি দেশের সনাতনী চিকিৎসা পদ্ধতির নিজস্ব ইতিহাস রয়েছে, যার অধিকাংশই এখনো সক্রিয়ভাবে প্রয়োগ হচ্ছে। শুধু মানুষ যাতে নিরাপদে ও সাশ্রয়ী মূল্যে মানসম্মত সনাতনী ওষুধ গ্রহণ করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে।

সভায় জানানো হয়, বিগত দশকে এই অঞ্চলের বেশিরভাগ দেশ সনাতনী ওষুধের নিরাপদ ও কার্যকর ব্যবহারকে উৎসাহিত করার জন্য জোর প্রচেষ্টা চালিয়েছে। এই অঞ্চলের ১১টি দেশের মধ্যে ১০টি দেশে সনাতনী ওষুধের জাতীয় নীতিমালা রয়েছে। ৬টি দেশে সনাতনী পদ্ধতির চিকিৎসকদের জন্য বিধান চালু আছে এবং ৯টি দেশে সনাতনী ওষুধের ওপর শিক্ষাগ্রহণের ব্যবস্থা চালু আছে।

ইতোমধ্যে, অনেক অগ্রগতি হওয়া সত্ত্বেও এ ক্ষেত্রে এখনো অনেক অসমতা বিদ্যমান।

সনাতনী ওষুধের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের জন্য এবং এর মান, নিরাপত্তা এবং কার্যকারিতাকে আরো উন্নত করতে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ‘সনাতনী ওষুধ কৌশল ২০১৪-২০২৩ প্রণয়ন করেছে; যার তিনটি মূল লক্ষ্য হলো- একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়া এবং জাতীয় নীতিমালা প্রণয়ন করা। বিধান প্রণয়নের মাধ্যমে সনাতনী ওষুধের নিরাপত্তা, গুণমান ও কার্যকারিতাকে আরো জোরদার করা এবং সনাতনী চিকিৎসা পদ্ধতি ও চিকিৎসা সেবাকে জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থায় যথাযথভাবে অঙ্গীভূত করার মধ্য দিয়ে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা।

গত বছরের ফেব্রুয়ারি বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার সহযোগিতায় ভারত সরকার নয়াদিল্লিতে সনাতনী ওষুধের ওপর আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করে। সম্মেলনে ১১টি সদস্য রাষ্ট্রের সর্বসম্মতিক্রমে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জন্য সনাতনী ওষুধের ওপর ‘দিল্লি ঘোষণা’ গৃহীত হয়।

জাতীয় অগ্রাধিকার, আইন এবং পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি অনুযায়ী সনাতনী ওষুধের প্রতিটি ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতার জন্য সবকটি দেশ ঐকমত্য প্রকাশ করে।

মানসম্মত সনাতনী ওষুধের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করার জন্য তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্র তৈরি এবং নীতিমালা ও বিধান তৈরিতে সদস্য দেশগুলোকে সহযোগিতার ধারা অব্যাহত রাখবে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা।   তবে, এই সহযোগিতাকে কার্যে পরিণত করতে অবশ্যই রিসোর্সের (সম্পদ) বৃদ্ধি করতে হবে।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের দেশসগুলোতে যেসব সনাতনী চিকিৎসা পদ্ধতি প্রচলিত রয়েছে, সেগুলো হলো, ভারতে ‘আয়ুষ’ (আয়ুর্বেদ, ইয়োগা, ইউনানী, সিদ্ধা এবং হোমিওপ্যাথি); ভুটানে ‘সোয়া রিগপা’; ইন্দোনেশিয়ায় ‘জামু’; গণপ্রজাতন্ত্রী কোরিয়ায় ‘কোরিয়ো’; বাংলাদেশে ‘আয়ুর্বেদ’ ও ‘ইউনানী’; মিয়ানমারে ‘দেসানা’ ‘ভেসিজ্জা’ ‘নেটখাট্টা’ এবং ‘ভিজ্জাধারা’; নেপালে ‘আয়ুর্বেদ’ ‘ইউনানী’ ও ‘আমচি’ এবং শ্রীলঙ্কায় ‘দেশীয়া চিকিৎসা’ ও ‘সিদ্ধা’।

এ ছাড়া অনেক দেশেই হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা হয়ে থাকে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।