ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

চিকিৎসা গবেষণায় আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেল বাংলাদেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৫
চিকিৎসা গবেষণায় আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেল বাংলাদেশ

ঢাকা: চিকিৎসা গবেষণায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলাদেশি ছয় গবেষকের একটি গবেষণাপত্র।
 
মানবদেহের হাড়ের ক্ষয় রোগের (অ্যাভাসকুলার নেকরোসিস-এভিএন) আধুনিক লেজার চিকিৎসার ওপর প্রণীত গবেষণাপত্রটি আন্তর্জাতিক ওয়েবসাইট  ‘অ্যাকাডেমিয়াডটএডু’ (www.academia.edu) তে জায়গা করে নিয়েছে।


 
এর আগে মালয়েশিয়ান জার্নাল অব মেডিকেল অ্যান্ড বায়োলজিক্যাল রিসার্চ এবং এশিয়ান বিজনেস কনসোর্টিয়ামের এবিসিজার্নালস-এ এটি প্রকাশিত হয়।

এছাড়া অস্ট্রেলিয়া, জার্মান ও ফিনল্যান্ডে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক চিকিৎসা সম্মেলনেও গবেষণাপত্রটি স্বীকৃতি লাভ করে।
 
ঢাকার ইনস্টিটিউট অব লেজার সার্জারি অ্যান্ড হসপিটালের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ ইয়াকুব আলীর নেতৃত্বে গবেষণাপত্রটি হাড়ের ক্ষয় রোগের (এভিএন) আধুনিক লেজার চিকিৎসা নিয়ে প্রণীত হয়।

এ কাজে তাকে সহায়তা করেন ডা. জাহাঙ্গীর এম সারোয়ার, ডা. মানস সি সরকার, ডা. এস হোসাইন, ডা. এন কায়েস, ডা. মোহাম্মদ এম রহমান এবং জার্মানির ডা. হ্যান্স হেইঞ্জ।
 
হাড়ের ক্ষয়রোগের (এভিএন) চিকিৎসায় অপারেশনের ক্ষেত্রে (হাড় ভেঙে যাওয়ার আগে) হাড় প্রতিস্থাপন (বোন গ্রাফট) করে অথবা প্রতিস্থাপন না করে কোর ডিকম্প্রেশন পদ্ধতিটি সর্বাধিক ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

কোর-ডিকম্প্রেশন প্রযুক্তির নতুন আবিষ্কার লেজার কোর-ডিম্প্রেশন। ঢাকায় ইনস্টিটিউট অব লেজার সার্জারি অ্যান্ড হসপিটাল লেজার কোর-ডিকম্প্রেশন পদ্ধতিতে এভিএন রোগের চিকিৎসা দিয়ে থাকে।
 
ডা. ইয়াকুব আলীর নেতৃত্বে চিকিৎসক দল সম্প্রতি এই হাসপাতালের ৪০ জন রোগীর ৬২টি হিপ জয়েন্টের অপারেশনের ওপর একটি গবেষণা পরিচালনা করেন।

অপারেশনের আগে ও পরে ‘হ্যারিস হিপ স্কোরস-এইচএইচএস এবং ‘ফিকেট  অ্যান্ড অ্যালার্ট স্ট্যাজিং’ মানদণ্ড অনুযায়ী পরিচালিত গবেষণা পরিচালিত হয়।

এতে দেখা যায়, কোনো ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াই লেজার কোর-ডিকম্প্রেশন পদ্ধতিতে ৪০ দশমিক ৩ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে অত্যন্ত সফল, ২১ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে ভালো এবং ২৯ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে সন্তেুাষজনক ফল পাওয়া যায়।
 
এর ওপর প্রণীত গবেষণাটি অস্ট্রেলিয়ার গোল্ড কোস্ট আর্ন্তজাতিক সম্মেলনে সর্বপ্রথম গৃহীত হয়। পরবর্তীতে জার্মান চিকিৎসকরাও এটিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে মূল্যায়ণ করেন।

গবেষণাটি ফিনল্যান্ডের হেলসিঙ্কিতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক লেজার সার্জারি সম্মেলনে বিশ্বের খ্যাতিমান লেজার বিশেষজ্ঞদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

গবেষকরা জানান, এভিএনের নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি হিসেবে এটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের স্বীকৃতি লাভ করে। স্বল্প সময়ে অপারেশন, ন্যূনতম রক্তপাত এবং কোনো রকম কাটা-ছেঁড়া না লাগায় হিপ জয়েন্ট এভিএনের চিকিৎসায় লেজার কোর-ডিকম্প্রেশন পদ্ধতিটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করছে।
 
তারা জানান, এ পদ্ধতিতে লেজার রশ্মির মাধ্যমে প্রয়োজন অনুযায়ী আক্রান্ত হাড়ে কোর বা ছিদ্র করা হয়। এতে হাড়ের অভ্যন্তরীণ চাপ কমে যায়।

পরবর্তীতে এই  ছিদ্রের ভিতর দিয়ে অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন (বোনমেরু সেল রিপ্লেসমেন্ট) করা হয়। লেজার স্টিমুলেশনের ফলে হাড়ে দ্রুত নতুন রক্তনালী তৈরি হয়।

এতে এভিএন আক্রান্ত স্থানে রক্তপ্রবাহ দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পায় এবং অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের ফলে সহজেই হাড়ের নতুন কোষ বা বোন সেল তৈরি হয়।

এ কারণে কাটা-ছেঁড়াহীন লেজার কোর-ডিকম্প্রেশন পদ্ধতির মাধ্যমে দ্রুত আরোগ্য লাভ করেন এভিএন আক্রান্ত রোগী।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।