ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

সরকারি স্বাস্থ্যসেবা নিরীক্ষা

টাকা দিয়ে সেবা নিতে হয় ১৭ শতাংশ নারীকে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩০ ঘণ্টা, মার্চ ৫, ২০১৫
টাকা দিয়ে সেবা নিতে হয় ১৭ শতাংশ নারীকে ছবি: জি এম মুজিবুর / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে পরিবার পরিকল্পনা সেবা পেতে ১৭ শতাংশ নারীকে টাকা দিতে হয় বলে এক সামাজিক নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

সরকারি স্বাস্থ্যসেবার উপর বেসরকারি সংস্থা সুশাসনের জন্য প্রচারাভিযান (সুপ্র) পরিচালিত এক সামাজিক নিরীক্ষা প্রতিবেদন-২০১৪ এ চিত্র ফুটে উঠেছে।



বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) রাজধানীর কাওরান বাজারে ডেইলি স্টার ভবনে আজিজুর রহমান হলে এক মতবিনিময় সভায় নিরীক্ষা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়েছে।

সুপ্র ১ মাস (২০১৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর-১ অক্টোবর) ধরে দেশের ১২টি জেলার সরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবার ওপর সামাজিক নিরীক্ষা পরিচালিত করে।

প্রতিবেদন উল্লেখ করে সুপ্র ক্যাম্পেইন কো-অর্ডিনেটর সাকেরা নাহার বলেন, ৭৪ শতাংশ নারী বিনামূল্যে সেবা পেলেও ১৭ শতাংশ নারীকে টাকায় সেবা নিতে হয়।

এছাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকে মানুষ ঔষধ, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ, যন্ত্রণাপাতির অভাবসহ মোট ৬৫.২ শতাংশ বাধার সম্মুখীন হয় বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

সেবা নিশ্চিতে ২৬.১ শতাংশ মানুষ ঔষধ, বিদ্যুৎ, যন্ত্রপাতি বৃদ্ধি, ৪.৩ শতাংশ আসবাবপত্র ও জনবল বৃদ্ধি, ৮.৭ শতাংশ চিকিৎসক বৃদ্ধির পক্ষে মতামত দিয়েছেন।

কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে রোগীর কথা মনোযোগ দিয়ে না শোনা, পর‌্যাপ্ত ঔষধ, প্রসূতি চিকিৎসা না দেয়ার অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

প্রতিবেদনে ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মানোন্নয়নে ঔষধ, চিকিৎসক, কর্মচারী, অবকাঠামো উন্নয়ন কাঠামো, বিশুদ্ধ পানি, আসবাবপত্র, বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়াতে সেবা গ্রহীতারা পরামর্শ দিয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, জনগোষ্ঠীর তুলনায় কমিউনিটি ক্লিনিকের সংখ্যা কম। স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে ক্লিনিক, চিকিৎসক সংখ্যা বাড়াতে হবে।

স্বাস্থ্যখাতের বরাদ্দ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, মাঝারি মানের স্বাস্থ্যসেবার জন্য বাজেটে জিডিপির ৫ শতাংশ স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ প্রয়োজন।

বাংলাদেশে জাতীয় বাজেটে কোন বছরই জিডিপির এ বরাদ্দ পূরণ করা হয় না বলে অভিযোগ করা হয়। এ খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়।

কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহকারীদের প্রশিক্ষণ, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে এমবিবিএস নিয়োগ, উপকরণ, অতিরিক্ত ফি আদায় বন্ধ, মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সেবায় পৃথক চিকিৎসক, নার্স নিয়োগের সুপারিশ করা হয়।

সভায় অতিরিক্ত সচিব ও কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্প পরিচালক ডা. মাখদুমা নার্গিস কমিউনিটি ক্লিনিক বিষয়ে সমস্যা দূর করার আশ্বাস দেন।

টাকার বিনিময়ে পরিবার পরিকল্পনা সেবা পাওয়ার বিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে তিনি বলেন, পর‌্যাপ্ত ঔষধ সরবরাহ করা হয়। টাকা কারা নেয় তা খতিয়ে দেখা হবে।

সভায় স্বাস্থ্যখাতের বিভিন্ন অসুবিধা তুলে ধরে পরামর্শ প্রদান করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক এম আবু ইউসুফ। সভায় সুপ্র সভাপতি আহমেদ স্বপন মাহমুদ সভাপতিত্ব করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩০ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।