ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

রুগ্ন অবস্থায় চলছে কুষ্টিয়ার স্বাস্থ্যসেবা

শফিকুল ইসলাম শিমুল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০১৫
রুগ্ন অবস্থায় চলছে কুষ্টিয়ার স্বাস্থ্যসেবা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কুষ্টিয়া: প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, যন্ত্রপাতি, চিকিৎসা উপকরণ ও পর্যাপ্ত সংখ্যক চিকিৎসক ও কর্মচারী না থাকায় অনেকটা রুগ্ন অবস্থায় চলছে কুষ্টিয়ার স্বাস্থ্যসেবা। আর এ কারণেই যথাযথ সেবা পাচ্ছেন না কুষ্টিয়ার সাধারণ মানুষ।



‘সুশাসনের জন্য প্রচার অভিযান’ (সুপ্র) কুষ্টিয়ায় প্রতিবছর স্বাস্থ্যসেবার ওপর মাঠপর্যায়ে সামাজিক নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।

সংগঠনটি সরকারি সেবার পর্যাপ্ততা, মান, দুর্বলতা এবং সরকারি সেবা প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা ইত্যাদি সম্পর্কে জনগণের সমন্বিত মতামত তুলে আনে।

চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি কুষ্টিয়া জেলা ক্যাম্পেইন কমিটি নিরীক্ষার প্রতিবেদন উপস্থাপন করে সুপ্র। এই প্রতিবেদনে বলা হয়, কুষ্টিয়ায় দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠির স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত করতে তাদের মধ্যে সচেনতা বৃদ্ধি করতে হবে।

জনবল সংকট, অপর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি ও উপকরণের অভাব, বৈষম্য এবং পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দের অভাবসহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যার কারণে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। ব্যাপক জনসচেনতার মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবায় জনগণের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের পাশাপাশি সামাজিক সংগঠন গুলোকে এগিয়ে আসতে হবে।

কমিউনিটি ক্লিনিক
জ্বর, ঠাণ্ডা ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা, প্রাথমিক চিকিৎসা ও ডায়রিয়ার চিকিৎসা দেওয়া হয় কমিউনিটি ক্লিনিকে। নবজাতকের জন্য প্রয়োজনীয় সেবা ও বিভিন্ন প্রতিষেধক এ ক্লিনিকগুলোতে পাওয়া যায়। এছাড়াও প্রসূতিকালীন সেবা, নবজাতক ও শিশুদের টিকা এ ক্লিনিক থেকে দেওয়া হয়।

ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা
ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে শিশু ও প্রসূতি সেবার ব্যবস্থা রয়েছে। তবে, বেশিরভাগ কেন্দ্রে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, যন্ত্রপাতি, চিকিৎসা উপকরণ ও পর্যাপ্ত সংখ্যক কর্মচারী নেই। নেই বিশুদ্ধ খাবার পানি, টয়লেট এর ব্যবস্থা।

এসব কেন্দ্রে কেবলমাত্র জ্বর, সর্দি-কাশি, পরিবার পরিকল্পনা ও ডায়রিয়ার ওষুধ দেওয়া হয়ে থাকে। কেন্দ্রে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ ও ওষুধের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।

উপজেলা স্বাস্থ্যসেবা
উপজেলার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে আসা শতকরা ৮০ ভাগ রোগীর স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের প্রদেয় সেবা সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী সব ওষুধ কেন্দ্র থেকে পান না। তারা স্বাস্থ্যসেবা ও ওষুধের জন্য সরকারি ভর্তুকির কথা জানেন না।

শতকরা ২০ ভাগ রোগী স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা করান এবং এর জন্য শতকরা প্রায় ৬৪ জনকে টাকা দিতে হয়। শতকরা ৩০ ভাগ চিকিৎসক রাতে ওয়ার্ডে থাকেন। রোগীরা হাসপাতালের কল্যাণ তহবিল সম্পর্কে জানেন না।

উপজেলা সেবাপ্রদানকারীরা বলছেন, প্রয়োজনীয় বাজেটের জন্যই তারা সঠিকভাবে সেবা দিতে পারেন না। এসব সেবা কেন্দ্রগুলোতে বাজেট ঘাটতির জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও অবকাঠামো নেই।

সুপ্র মনে করে, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এবং পরিবার পরিকল্পনার জন্য প্রয়োজনীয় পদ্ধতির ব্যবস্থা থাকতে হবে। কমিউনিটি ক্লিনিক ম্যানেজমেন্ট কমিটি আরো কার্যকর করতে হবে। সেবার মান আরো বহুমুখী এবং এ সম্পর্কে জনগণকে আরও বেশি সচেতন করতে হবে।

সেবা গ্রহীতাদের মধ্যে কমিউনিটি ক্লিনিক সম্পর্কে আরো আস্থা তৈরি করতে অবকাঠামোর উন্নয়নে আরো জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া আবশ্যক।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩১ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।