ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

রমেক হাসপাতালের তথ্য ও অনুসন্ধান কেন্দ্র বন্ধ, বিপাকে রোগীরা

সাজ্জাদ বাপ্পী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৫
রমেক হাসপাতালের তথ্য ও অনুসন্ধান কেন্দ্র বন্ধ, বিপাকে রোগীরা

রংপুর: ছয় মাস ধরে বন্ধ রয়েছে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের তথ্য ও অনুসন্ধান কেন্দ্র।

এতে বিপাকে পড়েছেন চিকিৎসা নিতে আসা শত শত রোগী।

বিশেষ করে লেখাপড়া না জানা দরিদ্র রোগী ও তাদের অভিভাবকরা দালালদের খপ্পরে পড়ে সর্বশান্ত হচ্ছেন।

এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে পকেট ভারী করছেন হাসপাতালে অসাধু কর্মচারী ও সেখানকার দালালরা।

গত ৬ মাস ধরে বন্ধ থাকা তথ্য ও অনুসন্ধান কেন্দ্রটি কবে নাগাদ চালু হবে তা বলতে পারছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও।

রোগী ও তাদের স্বজনরা বলেন, এটি চালু হলে তাদের দালালদের হয়রানির শিকার হতে হবে না।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, রোগী ও তাদের স্বজনদের হয়রানির হাত থেকে রক্ষা করতে হাসপাতালের প্রধান ফটকের পাশেই দু’বছর আগে ইউনিসেফের সহায়তায় তথ্য ও অনুসন্ধান কেন্দ্র চালু করা হয়। এটি চালুর পর থেকেই রোগীরা দালালদের হয়রানির হাত থেকে রক্ষা পান।

কোনো কারণ ছাড়াই ছয়মাস থেকে বন্ধ রয়েছে এ কেন্দ্র। কী কারণে এটা বন্ধ রাখা হয়েছে তা কেউ বলতে পারে না।

চিকিৎসাধীন তারেককে পঞ্চগড় থেকে দেখতে এসেছেন তার চাচা হোসেন আলী। তিনি কী করবেন, কোন দিকে যাবেন কোনো কিছুই বুঝতে পারছিলেন না। ঘোরাঘুরি করছিলেন তথ্য ও অনুসন্ধান কেন্দ্রের সামনেই। কারা হাসপাতালের কর্মচারী আর কারা বহিরাগত তাও বুঝতে পারছেন না। তাই কাউকে কিছু জিজ্ঞেস করতেও পারছেন না।

অবশেষে একজনকে অ্যাপ্রোন পরা দেখে তাকে ১৪ নম্বর ওয়ার্ড কোথায় জিজ্ঞেস করলেন। প্রথমে ওই চিকি‍‍ৎসক তার কথায় গুরুত্ব না দিলেও অনুরোধের পর তাকে ১৪ নম্বর ওয়ার্ড দেখিয়ে দেন।

সুলতানা বেগম তার দেড় বছরের অসুস্থ শিশুকে বহির্বিভাগে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে এসেছেন। কিন্তু কোথায় টিকেট নেবেন, কোথায় চিকিৎসক বসেন এসব কিছুই জানে না।
 
প্রতিদিন রংপুর বিভাগের আট জেলা ছাড়াও বগুড়া জয়পুরহাটসহ বিভিন্ন জেলা শহর থেকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন শত শত রোগী। কিন্তু হাসপাতালে এসে হয়রানির শিকার হতে হয় তাদের।

হাসপাতালের তথ্য কেন্দ্রের পাশেই ব্র্যাকের তথ্য কেন্দ্র। সেখানে একজন কর্মকর্তা প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত রোগী ও অভিভাবকদের তথ্য দেন।
 
তিনি বলেন, রংপুর বিভাগের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্র্যাক স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে এখানে আসা গর্ভবর্তী মা ও শিশুদের চিকিৎসার তদারকি আমি করি। কিন্তু হাসপাতালের তথ্য কেন্দ্রটি বন্ধ থাকায় সেটির দায়িত্বও এখন আমাকেই পালন করতে হচ্ছে।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে প্রায় তিন হাজার রোগী চিককিৎসা সেবা নেন। এদের অধিকাংশই আসেন রংপুরের বাইরে থেকে। কিন্তু কোথায় চিকিৎসক বসেন, কোথায় এক্স-রে করাবেন, কোথায় ভর্তি করাবেন এসব তথ্য জানা না থাকায় বাধ্য হয়েই দালাল কিংবা অর্থলোভী কর্মচারীদের হাতে নিজেকে সপে দিতে হয়।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. আব্দুল বাতেন বলেন, তথ্য কেন্দ্রটি কী কারণে বন্ধ রয়েছে আমি নিজেও জানি না। আমি  আসার পর থেকে দেখে আসছি এটা বন্ধ। হতে পারে এখানে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের কোনো স্বার্থ জড়িত। তারা তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করেই এটা বন্ধ করে রেখেছেন।  

এটা চালু করবেন কি-না ‌এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ। এটা চালু করার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৫
এসএন/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।