ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

শেষ হলো ১২তম আন্তর্জাতিক নগর স্বাস্থ্য সম্মেলন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৬ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১৫
শেষ হলো ১২তম আন্তর্জাতিক নগর স্বাস্থ্য সম্মেলন ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: পরিকল্পিত নগরায়ন, অবহেলিত জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা ও নগর স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের প্রবন্ধ উপস্থাপন, অভিজ্ঞতা, মতবিনিময় এবং দিকনির্দেশনা ও করণীয় কর্মকৌশল আলোচনার মধ্য দিয়ে শেষ হলো ১২তম নগর স্বাস্থ্য বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন।

বুধবার (২৭ মে) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মোট ২০টি সেমিনার অনুষ্ঠিত হওয়ার মধ্য দিয়ে এ সম্মেলন শেষ হয়।



এর আগে গত ২৪ মে বাংলাদেশ আরবান হেলথ নেটওয়ার্ক ও ইমিনেন্স’র আয়োজনে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

চার দিনব্যাপী এ সম্মেলনের এবারের প্রতিপাদ্য ছিল ‘টেকসই নগর স্বাস্থ্যের ভবিষৎ : ২০১৫ সালের উন্নয়ন কর্মসূচি’।

বুধবার (২৭) দুপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের সেলিব্রেইট হলে ১৮তম বিশেষ সেশনে ‘মা ও শিশু স্বাস্থ্যের অবস্থা : নগর বস্তিবাসীর সেবার পছন্দ’ বিষয়ে গবেষণাপত্র তুলে ধরেন ভারতের প্রতিনিধি ড. নিতিন বাজপেয়ী। সেমিনারে পপুলেশন ফাউন্ডেশন অব ইন্ডিয়ার পক্ষে তিনি তার গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন।

গবেষণার বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ভারতের পুনে, ভুবেনশ্বর, জয়পুর ও আগ্রা -এই চারটি শহরের ৪০০ বস্তি পরিবারের কাছ থেকে গত ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করা হয়। ওই গবেষণায় দেখা যায়, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সদস্যদের মধ্যে সরকারিভাবে স্বাস্থ্যসেবা নেওয়ার প্রবণতা বেশি। কারণ বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবার চেয়ে সরকারি স্বাস্থ্যসেবায় তারা তাড়াতাড়ি রোগমুক্ত হতে পারছেন।

পপুলেশন ফাউন্ডেশন অব ইন্ডিয়া দরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন করছে। এ প্রোগামের লক্ষ্য হলো- নগরের বস্তিবাসীসহ অন্যান্য দরিদ্র মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা।

সেমিনারে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন প্রধান অতিথি ছিলেন। সাঈদ খোকন বলেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অনেক অর্জন রয়েছে। বড় বড় অর্জনগুলোর মধ্যে স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়ন অন্যতম। নগরের বস্তিবাসীসহ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নে সরকার গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। একই সঙ্গে বেসরকারিভাবে বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্যসেবায় ভূমিকা রেখে চলছে।

নারী ও শিশু স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সভাপতি এম কিউ কে তালুকদার সেমিনারে সভাপত্বি করেন। এছাড়া মালয়েশিয়ার ইন্টারন্যাশনাল গ্লোবল হেলথ’র প্রতিনিধি জোসে সিরি ‘উন্নত জীবনযাপনের জন্য করণীয় : নগর স্বাস্থ্য নীতি’ বিষয়ে একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

বিকেল সাড়ে ৩টায় সম্মেলন কেন্দ্রের একই হলে ‘২০১৫ সালের টেকসই উন্নয়ন : ইস্যু নগর স্বাস্থ্য’ বিষয়ক এক সেমিনারে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।

তিনি বলেন, একুশ শতকের বড় চ্যালেঞ্জ হলো, নগরায়ন ও বস্তির সমস্যাকে মোকাবেলা করা। মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা গেলে এবং কারখানার শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পারলে শিল্পয়ান ও দেশের উন্নয়ন সম্ভব।

মন্ত্রী বলেন, পোশাক কারখানাসহ অন্যান্য কারখানার শ্রমিকদের তাদের রোগবালাই সম্পর্কে যথাযথ তথ্য দিয়ে সচেতনতা সৃষ্টি ও বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য নগর স্বাস্থ্য নীতিমালা চালু করে সঠিক পদ্ধতিতে স্বাস্থ্যসেবার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় সরকার বিভাগের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত চার দিনের এ সম্মেলনে ৩২টি ব্রেকআউট সেশন, ২০টি বিশেষ সেশন, ৮টি প্ল্যানারি সেশন ও কয়েকটি বিজনেস সেশন অনুষ্ঠিত হয়।

আয়োজকরা জানিয়েছে, চার দিনের এ সম্মেলনে বিশ্বের খ্যাতনামা গবেষক ও বিশেষজ্ঞসহ ৬০টি দেশের প্রায় ৪০০ জন প্রতিনিধি অংশ নেন। তারা নগর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে মতামত, গবেষণা, অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন। ভবিষ্যতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিভিন্ন দেশের কর্মসূচির পরিকল্পনা ও কৌশল নির্ধারণে এ সম্মেলন কাজে লাগবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৫ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১৫
টিএইচ/আরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।