ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ক্যান্সার রুখতে প্রয়োজন সচেতনতা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৩২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৫
ক্যান্সার রুখতে প্রয়োজন সচেতনতা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ক্যান্সার রুখতে সচেতনতার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) প্রাঙ্গনে শিশুক্যান্সার সচেতনতা বিষয়ক এক প্রচারাভিযানে অংশ নিয়ে একথা জানান তারা।



এর আগে ক্যান্সার সচেতনতায় হাসপাতালের বেডে চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে ছবি আঁকে ক্যান্সারে আক্রান্ত শিশুরা।

ইউকে এইড-অর্থায়নে পরিচালিত একটি প্রকল্পের আওতায় আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘ওয়ার্ল্ড চাইল্ড ক্যান্সার’ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এ প্রচারাভিযানের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মিজানুর রহমান বলেন, সচেতনতা, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা ও রোগ নির্ণয়য়ের মাধ্যমে ক্যান্সার থেকে বাঁচতে পারে হাজার হাজার শিশুর জীবন।

এসময় আরও বক্তব্য রাখেন, ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মিজানুর রহমান, মেডিকেল কলেজের শিশু শল্য চিকিৎসা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আশরাফুল হক কাজল, শিশু ক্যান্সার বিভাগের প্রধান ডা. একেএম আমিরুল মোরশেদ খসরু এবং ওয়ার্ল্ড চাইল্ড ক্যান্সার, বাংলাদেশের প্রোগাম কোঅর্ডিনেটর রিজওয়ানা হোসেন।

অনুষ্ঠানে বলা হয়, বিশ্বে প্রতিবছর হাজার হাজার শিশু মারা যায় ক্যান্সারে। এ রোগ মোকাবিলায় দরকার সবার মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি। এছাড়াও এ মরণব্যাধি প্রতিরোধ করা যায় সেগুলো মেনে চলা এবং সময়মতো রোগ নির্ণয়।

ওয়ার্ল্ড চাইল্ড ক্যান্সারের তথ্যমতে, বিশ্বে প্রতিবছর ২ লাখ শিশু ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। এসব শিশুর প্রায় ৮০ শতাংশরই বাস- মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে যেখানে ক্যান্সার আক্রান্তদের বেঁচে থাকার হার মাত্র ৫ শতাংশ। যদিও উন্নত দেশগুলোতে এ হার প্রায় ৮০ শতাংশ।

ওয়ার্ল্ড চাইল্ড ক্যান্সার মনে করে, আগেভাগে ক্যান্সার সনাক্ত করা গেলে এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া গেলে ৭০ শতাংশ রোগীই সেরে উঠতে পারে। তবে বর্তমানে ক্যান্সারে আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে মাত্র ৮০ শতাংশই উন্নত চিকিৎসার সুযোগ পায় না।

বিশেষজ্ঞরা জানান, সচেতনার অভাব, দুর্বল ও নিম্নমানের রোগনির্ণয় ব্যবস্থা, চিকিৎসক সংকট এবং শিশু ক্যান্সার নিরাময় জটিল এমন ভুল ধারণার কারণে এ রোগে আক্রান্তদের বেঁচে থাকার হার কম। তারা বলছেন, প্রকৃতপক্ষে শিশু ক্যান্সারের চিকিৎসা দরিদ্র দেশগুলোতেও সম্ভব এবং সাধারণ ও স্বল্পমূল্যের ওষুধ এবং চিকিৎসকদের যুগ যুগ ধরে জানা পদ্ধতিতে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ ক্যান্সারে আক্রান্ত শিশুর জীবন বাঁচানো যায়।

বর্তমানে বাংলাদেশে ১৩ থেকে ১৫ লাখ ক্যান্সার রোগী রয়েছে এবং প্রতিবছর ২ লাখ মানুষ নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগামী কয়েক দশকে ক্যান্সারে বাংলাদেশে মৃত্যু হার বাড়বে। ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সারের (আইএআরিস) হিসাবমতে, ২০০৫ সাল বাংলাদেশে ক্যান্সারে মৃত্যুহার ছিল ৭.৫ শতাংশ এবং ২০৩০ সাল নাগাদ এ হার বেড়ে ১৩ শতাংশে পৌঁছাতে পারে।

ক্যান্সার মোকাবিলায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহায়তায় বাংলাদেশ সরকার জাতীয় ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণ কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা ২০০৯-১৫ প্রণয়ন করেছে। এ কর্মপরিকল্পনার উদ্দেশ্য হলো একটি সমন্বিত ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে ক্যান্সার নিরাময় কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৫
এসএ/আরএইচএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।