ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

আন্দোলনের হুঁশিয়ারি

হতাশায় ১৪ হাজার ‘আমাগো ডাক্তার’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০১৬
হতাশায় ১৪ হাজার ‘আমাগো ডাক্তার’ ছবি: পিয়াস/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় বর্তমান সরকার সফল। এ সফলতার পেছনে বিরাট ভূমিকা রেখেছেন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা (সিএইচসিপি)।


 
প্রান্তিক মানুষের কাছে যারা ‘আমাগো ডাক্তার’ নামে পরিচিত। ১৪ হাজার আমাগো ডাক্তারকে বর্তমান সরকার দু’মেয়াদে ক্ষমতায় এসে নিয়োগ প্রদান করে।
 
২০১৪ সালের ৩০ জুন প্রকল্পের মেয়াদ শেষে প্রায় দু’বছরেও তাদের চাকরি জাতীয়করণ করা হয়নি। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আশ্বাসের পর বর্তমানে দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বেঁচে আছেন সেই ডাক্তারা।
 
চাকরি জাতীয়করণ করা না হলে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আমাগো ডাক্তার খ্যাত সিএইচসিপিরা।
 
মঙ্গলবার (০৯ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন দাবি আদায় বাস্তবায়ন কমিটির ব্যানারে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
 
সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক ইকবাল হোসেন বলেন, আগামী ১৪ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিকে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করা হবে।
 
১৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সরকার দাবি মেনে না নিলে ১৮ ফেব্রুয়ারি পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করা হবে। এর মধ্যে দাবি আদায় না হলে ২৩ ফেব্রুয়ারি মহাখালী প্রকল্প কার্যালয়ে প্রতীকী অনশন করা হবে।
 
ইকবাল আরো বলেন, সারাদেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার দু’দফায় ১৪ হাজার সিএইচসিপি নিয়োগ প্রদান করে।
 
এর মধ্যে ৪ হাজার মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও ৫২ শতাংশ নারী রয়েছেন। চার বছর চাকরি করেও আমরা বিভিন্ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছি।
 
ইতোমধ্যে প্রকল্পে মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এদের মধ্যে বেশিরভাগ সিএইচসিপি’র সরকারি চাকরির বয়স শেষ হয়ে গেছে।
 
২০১৫ সালের ২৩ অক্টোবর সর্বশেষ স্বাস্থ্যমন্ত্রী চাকরি জাতীয়করণের আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
 
ইকবাল অভিযোগ করে বলেন, সিএইচসিপি প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর বর্তমানে কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ার প্রকল্পের আওতায় আমরা স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছি।
 
এ প্রকল্পকেও কমিউনিটি হেলথ ট্রাস্টের আওতায় নেওয়ার চক্রান্ত চলছে। যেখানে নেওয়া হলেও আমাদের চাকরি আর কোনোদিন জাতীয়করণ হবে না।
 
তিনি বলেন, আমরা প্রতি মাসে স্বাস্থ্যসেবার ওপর প্রকল্প কার্যালয়ে রিপোর্ট পাঠাই। কিন্তু দাবি আদায় না হওয়ায় গত মাস থেকে রিপোর্ট পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছি।
 
কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আফজাল শরীফ বলেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা, মা ও শিশু মৃত্যুহার কমিয়ে আনার কারিগর হিসেবে আমরা ‘আমাগো ডাক্তার’ নামে পরিচিত।
 
বেশিরভাগ আমাগো ডাক্তারের সরকারি চাকরির বয়স শেষ হয়ে গেছে। যদিও নিয়োগের পর ২০১৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর প্রকল্প কার্যালয় থেকে চিঠি দিয়ে চাকরি জাতীকরণের নিশ্চয়তা দিয়েছেন।
 
এরপর প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্য অধিদফতর, সকল জেলার নিজ নিজ সংসদ সদস্যকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।
 
গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবা ও ১৪ হাজার পরিবারের কথা চিন্তা করে চাকরি জাতীয়করণ, ৪ বছরের বকেয়া ইনক্রিমেন্ট, প্রকল্প মেয়াদে মৃত্যুবরণকারী ৯ জন সিএইচসিপি’র পরিবারকে আর্থিক অনুদান ও প্রকল্প কার‌্যালয়ের দুনীর্তিবাজদের প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।
 
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা মো. কামাল হোসাইন সরকার, আহ্বায়ক মো. শহিদুল ইসলামসহ বিভিন্ন জেলার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০১৬
আরইউ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।