ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

২২শ’ গরিবের উদরভর্তি খাবার ধানমন্ডিতে

মানসুরা চামেলী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ৯, ২০১৬
২২শ’ গরিবের উদরভর্তি খাবার ধানমন্ডিতে ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: শঙ্কর পার হয়ে ধানমন্ডি ১৫ নম্বর যাওয়ার পথে। ফুটপাতের ধারে সারিবদ্ধ হয়ে একদল মানুষ দুপুরের খাবার খাচ্ছে।

রাস্তা ঘেঁষে সারি বেঁধে দাঁড়িয়ে থাকা রিকশায় বসে চালকদেরও সেই খাবার খেতে দেখা গেল। সবার প্লেটে একই খাবার, পাতলা খিচুড়ি। তাদের পাশেই বসে বিশাল সাইজের পাতিলভর্তি খিচুড়ি বিতরণ করছেন রফিক নামের একজন।  

তার কাছে যেতেই বললেন, ‘এখানে প্রতিদিন আমাদের মালিক বিনা পয়সায় ২২শ’ গরিব মানুষের মধ্যে দুপুরে খাবার বিতরণ করেন। ’ সোমবার (৮ আগস্ট) দুপুরে এই ২২শ’ গরিবের মধ্যে দেখা গেল রিকশাচালক, সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক, টোকাই ও দরিদ্র নারীসহ শত শত শ্রমজীবী মানুষকে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে এখানে প্রতিদিন দুই হাজার থেকে আড়াই হাজার দরিদ্র মানুষের জন্য বিনামূল্যে দুপুরের খাবার বিতরণ করা হয়। বিগত ৬-৭ মাস ধরে দরিদ্র মানুষের জন্য এ কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি।  

বেশির ভাগ সময় খাবার মেন্যুতে মুরগির মাংস দিয়ে পাতলা খিচুড়ির ব্যবস্থা রাখা হয়। এছাড়া কোনো কোনো শুক্রবার তেহারিরও ব্যবস্থা রাখা হয়।

রিকশায় বসে সেই খিচুড়ি খাচ্ছিলেন বাহনটির চালক সুমন। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ টাকা দুপুর খাবার খাইতে যায়। যা ইনকাম (আয়) তাতে পোষায় না। তাই গত ১ মাস ধরে এখানে খাই। টাকাটা বাইচা যায়। বড়লোকদের অনেক টাকা, গরিবদের জন্য রাখলে আমাদের উপকার হয়। টাকা দিয়ে ফুটপাতের খোলা দোকানের খাবার থেকে বিনামূল্যের এ খিচুড়ি খাইতেও ভালো। ’

খাবার বিতরণের দায়িত্বে থাকা রফিককে প্লেট হাতে কয়েকজন মানুষ ঘিরে রেখেছে। সেসব প্লেটে খাবার দিতে দিতে তিনি বলতে থাকলেন, ‘প্রতিদিন এখানে ১৪টি বিশাল সাইজের পাতিলে দুই থেকে আড়াই হাজার গরিব মানুষের জন্য খাবার রান্না করা হয়। রিকশাচালক, বাসের ড্রাইভার, হেলপার, টোকাইরা এ খাবার খায়। এমনকি আশাপাশের গরিব মানুষেরাও পাতিল ভরে খাবার নিয়ে যায়। ’

‘ধানমন্ডি ১০ নম্বরে মালিকের একটি খোলা জায়গা আছে, সেখানে এ খাবার রান্না করা হয়। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশে খাবার রান্না করা হয়। এখানে যারা খায়. যতো ইচ্ছা অর্থাৎ পেট ভরে খেতে পারে। ’

বিনামূল্যে খাবার বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান আমিন মোহাম্মাদ গ্রুপের হেড অব মিডিয়া গাজী আহমাদ উল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের গ্রুপের মালিক ধর্মভীরু। সবসময় গরিব মানুষের জন্য কিছু করার চেষ্টা করেন। একজন শ্রমিক দিনে কয় টাকা আর ইনকাম করে, বাইরে খেতে গেলে তার অর্ধেকই খরচ হয়। তাছাড়া বাইরের খাবারটাও স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ নয়। এসব বিবেচনা করে তিনি এ উদ্যোগ নিয়েছেন।  

গাজী আহমাদ উল্লাহ মনে করেন, যারা বিত্তবান তাদের সবারই এমন উদ্যোগ নেওয়া উচিত।

বাংলাদেশ সময়: ০৩৫৭ ঘণ্টা, আগস্ট ০৯, ২০১৬
এমসি/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।