ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

শক্ত খোলসেই পোয়াবারো চিংড়ি ভেজালিদের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৭
শক্ত খোলসেই পোয়াবারো চিংড়ি ভেজালিদের চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশের স্থান দেখাচ্ছেন এক বিক্রেতা-ছবি-সুমন শেখ

মিরপুরের বাজার ঘুরে: সাদা সোনা খ্যাত চিংড়ির প্রায় পুরো শরীরটা খোলসে আবৃত। মোটা মাথা ও শক্ত খোলসের কারণে এর ভেতরে সহজেই ঢোকানো যায় তরল বা জেলি জাতীয় পদার্থ। যা সহজেই হয় চোখের আড়াল। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী অধিক মুনাফার লোভে পুশ করছেন ‘অপদ্রব্য’। 
 
 

পুশ করা এসব অপদ্রব্যের বিষয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার মতামত, বিষয়টি সম্পর্কে আদৌ তারা অবগত কিনা, এর ক্ষতিকারক দিক, মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগসহ সার্বিক বিষয়ে জানতে শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ভোর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ঢুঁ মারে বাংলানিউজ টিম।  
 
মিরপুরের প্রধান তিনটি মাছের বাজার (১, ৬ ও ১১) ঘুরে জানা যায়, ১ নম্বর হযরত শাহ্ আলী সিটি করপোরেশন মার্কেট মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতি এসব অপদ্রব্যের বিষয়ে আড়তদার ও বিক্রেতাদের কড়া সর্তকতায় রেখেছেন।

কারণ অপদ্রব্য পুশের কারণে বিভিন্ন সময় অনেক ক্রেতার হাতে তাদের নাকাল হতে হয়েছে। যে কারণে বিক্রেতাকে গুণতে হয়েছে জরিমানা, বিরত থাকতে হয়েছে ব্যবসা থেকে। বিক্রির জন্য দোকানে সাজানো গলদা চিংড়ি
 
৬ নং বাজারের আড়তদার মো. হান্নান জানান, সুযোগ-সন্ধানী ব্যবসায়ীরা যেন অপদ্রব্য ব্যবহার না করেন সেজন্য নিয়মিত বাজার তদারকি করা হয়।    
 
মিরপুর-১১ নম্বর নিউ সোসাইটি মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির জয়েন্ট সেক্রেটারি মো. আনোয়ার বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করেন।
 
মিরপুর-১ নম্বর মাছ বাজারে অপদ্রব্য পুশ করা চিংড়ি চেনার উপায় বাতলে দেন বিক্রেতা ওহাব। চিংড়ি হাতে নিয়ে তিনি বলেন, কোনো চিংড়িতে যদি অপদ্রব্য পুশ করা হয় তবে তা মাথার পাশে কানশার নিচে জমাট হয়ে থাকবে। কানশা উঁচিয়ে আলতোভাবে আঙুল দিলেই তা উঠে আসবে। পরীক্ষা করে চিংড়ি কিনছেন ক্রেতা
 
মো. আবুল খায়ের নামে ৬ নম্বর বাজারের এক বিক্রেতা বলেন, পুশ করা চিংড়ির মাথার নিচে দানা জাতীয় পর্দাথ ভেসে থাকবে। হাতে নিলেই যে কেউ তা সহজে বুঝতে পারবেন।  
 
মিরপুর-১১ নম্বর বাজারে দোকানে সাজানো চিংড়ি হাতে ভেঙে দেখিয়ে এক বিক্রেতা বলেন, পুশ করা চিংড়ি হলে এটি পিচ্ছিল থাকতো। তার চিংড়ি পুশমুক্ত প্রমাণে একপর্যায়ে পানি ঢেলে তা বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন।
 
এ দোকানে চিংড়ি নিয়ে দরদাম করছিলেন ইব্রাহিম খলিল স্বপন নামে এক ক্রেতা। অপদ্রব্যের বিষয়ে তিনি যে অবগত তা বেশ বোঝা যাচ্ছিলো তার আচরণে। চিংড়ির শরীরের কোথায় জেলি থাকে তাও দেখিয়ে দিলেন তিনি। বড় আকৃতির দু’টি গলদা চিংড়ি
দক্ষিণ বিশিলের বাসিন্দা মো. গোলাম ফারুককে স্বাস্থ্যের জন্য অপদ্রব্য মেশানো চিংড়ির ক্ষতিকর বিষয়টি নিয়ে বেশ উদ্বেগ দেখালেন।  
 
চিংড়িতে অপদ্রব্য মেশানোর বিষয়ে মিরপুর-১১ নম্বরের রেশমা মৎস্য ভান্ডারের আড়তদার মো. মাসুদের বক্তব্য, জানি মেশানো হয়। কখনো দেখিনি। বিষয়টি জেনেছি। এখন থেকে পাইকারকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা ক‍রা হবে।  
 
এ বাজারের আল্লার দান মৎস্য ভান্ডারের আড়তদার মো. আনোয়ার দাবি করেন, মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির কড়া নজরদারির কারণে পুশ করা মাছ বিক্রি কমেছে।  

রাজধানীর মিরপুর-১১ নম্বরে অবস্থিত সুপার শপ মীনা বাজারের সেলসম্যান রনি বলেন, ক্রেতারা চিংড়ি কেনার সময় বিষয়টি পরীক্ষা করে দেখেন। আমরাও এ বিষয়ে সচেষ্ট রয়েছি।  

** ‘৬শ’র মাল সাড়ে ৩শ’তে লইবেন, জেলি তো থাকবোই’
** বাইছা লন, ক্যানসার ছাড়া লন
** সব বাজারেই জেলি চিংড়ি!
** কাপড়ের বিষাক্ত নীলে চকচকে চিংড়ি
** শক্ত খোলসেই পোয়াবারো চিংড়ি ভেজালিদের
** চিংড়ি ভীতিতে ক্রেতা-ভোক্তা!
** চিংড়িতে জেলি আতঙ্কে মাছ ব্যবসায়ীরাও
** কিভাবে কী মেশে চিংড়িতে
** এ যেন টাকা দিয়ে মৃত্যু কেনা !
 ** মোসলেম চেনালেন ভেজাল চিংড়ি
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৭ 
জেডএস/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।