ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

কিডনি প্রতিস্থাপন আইন শিগগির অনুমোদন, আশা নাসিমের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৩ ঘণ্টা, মে ৭, ২০১৭
কিডনি প্রতিস্থাপন আইন শিগগির অনুমোদন, আশা নাসিমের সেমিনারে বক্তব্য রাখছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: কিডনি প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে আইনে কড়াকড়ি থাকায় এ সংক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলে যে আলোচনা রয়েছে, সে বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, কিডনি প্রতিস্থাপন আইনের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। এটি আইন মন্ত্রণালয়ে আছে। শিগগির আইনটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে মন্ত্রিসভার বৈঠকে পাঠানো হবে। আশা করা যায়, আইনটি চূড়ান্ত অনুমোদন পাবে।

রোববার (৭ মে) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। তৃতীয় ন্যাশনাল কনভেনশন অ্যান্ড সায়েন্টিফিক সেমিনার অন ট্রান্সপ্লানটেশন’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে সোসাইটি অব অর্গান ট্রান্সপ্লানটেশন বাংলাদেশ।

মোহাম্মদ নাসিম বলেন, মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকেই চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে কিডনি প্রতিস্থাপন আইনটির বিষয়ে কথা বলা হচ্ছিল। এ প্রেক্ষিতে আপনাদের জানাতে চাই, আগামীকাল আইনটি নিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে একটি বৈঠক করা হবে। পরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে আইনটির খসড়া মন্ত্রিসভায় পাঠানো হবে। আশা করা যায় আইনটি চূড়ান্ত অনুমোদন পাবে।

কিডনি প্রতিস্থাপনের বিষয়ে বিদ্যমান আইনে বলা হয়েছে, বাবা, মা, ভাই-বোন কিংবা নিকটাত্মীয় ছাড়া কেউ কোনো রোগীকে কিডনি দিতে পারবেন না। এর মধ্যে আবার কিডনি নিয়ে বাণিজ্যও বন্ধ করা যায়নি বলে সরকার ওই আইন বাস্তবায়নে আরও কঠোর হয়। ফলে কমে যায় কিডনি প্রতিস্থাপনের হার।

চিকিৎসকদের বক্তব্য, মৃত ঘোষিত রোগীর কাছ থেকে যদি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কিডনি সংগ্রহ করা যায় এবং কিডনি রোগে ভুগছে এমন রোগীকে প্রতিস্থাপন করে দেওয়া যায়, তবে কিডনি প্রতিস্থাপনের সংখ্যা আরও বাড়বে, এতে অনেকে এ জটিল রোগ থেকে রক্ষা পাবে। এ ধরনের অন্যান্য প্রয়োজনীয় সংযোজন-বিয়োজনসহ কিডনি প্রতিস্থাপন আইন চেয়ে বহুদিন থেকে দাবি জানিয়ে আসছিলেন চিকিৎসকরা।

চিকিৎসকদের সংগঠনগুলোর নেতাদের উদ্দেশ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের চিকিৎসকরা যেন শুধু শহরমুখী নন, গ্রামে থেকে সেখানকার মানুষদেরও চিকিৎসাসেবা দেন, সে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখুন। সম্প্রতি বিসিএস উত্তীর্ণ ৫শ’ তরুণ চিকিৎসককে গ্রামে পোস্টিং দিয়েছি। চিকিৎসকদের মনে রাখতে হবে, আমাদের দেশে জনগোষ্ঠীর একটি বিশাল অংশই গ্রামে বসবাস করে। আর সে কারণে চিকিৎসকদের ‍কমপক্ষে দু’বছর গ্রামে থেকে চিকিৎসাসেবা দিতে হবে।  

তিনি বলেন, ঢাকায় যতগুলো মেডিকেল কলেজ আছে, সেগুলো আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকবে না। এসব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় নিয়ে আসার কাজ চলছে। এছাড়া চট্টগ্রাম ও রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় ওইসব এলাকার মেডিকেল কলেজগুলোকে নিয়ে আসা হবে। সিলেটেও একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পরিকল্পনা আমাদের আছে।

সেমিনারে বিএসএমএমইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান বলেন, আমাদের দেশে কিডনি রোগীদের সুচিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা। এরইমধ্যে তারা দুই হাজার কিডনি প্রতিস্থাপনের কাজ সম্পন্ন করেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫২০টি কিডনি প্রতিস্থাপন সম্পন্ন হয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের নানা বিশ্লেষণ আলাপ-আলোচনা হয়েছে। প্রতিস্থাপনের বিষয়টিকে কীভাবে আরও এগিয়ে নেওয়া যায়, সে বিষয়েও আমরা পদক্ষেপ নেবো।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে যে উন্নত চিকিৎসা চলছে, তা অনেকেই জানেন না। অল্প কিছু রোগ ছাড়া এখন সব রোগের সুচিকিৎসা দেশেই সম্ভব।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি অধ্যপাক ডা. হারুন-অর-রশিদের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) ডা. এম ইকবাল আর্সলান, মহাসচিব এম এ আজিজ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৯ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০১৭
এমএ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।