ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

চিকুনগুনিয়ার হোমিও চিকিৎসা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২০ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৭
চিকুনগুনিয়ার হোমিও চিকিৎসা এডিস মশা

চিকুনগুনিয়া হচ্ছে চিকুনগুনিয়া ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট ডেঙ্গুর মতো এক ধরনের রোগ, যা এডিস মশার মাধ্যমে মানব দেহে সংক্রামিত হয়। চিকুনগুনিয়া সাধারণত আফ্রিকা, এশিয়া এবং ভারতে বেশি দেখা যায়। ১৯৫২-১৯৫৩ সালে পূর্ব আফ্রিকাতে এই জ্বর মহামারি আকারে দেখা দিয়েছিল।

চিকুনগুনিয়া জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তির দেহে নিচের লক্ষণগুলো দেখা দেয়- 

## প্রচণ্ড শীতভাবসহ উচ্চ মাত্রায় জ্বর (102° থেকে 104°F ) 

## শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের জয়েন্টগুলোতে তীব্র ব্যথা 

## জয়েন্টগুলো ফুলে উঠা 

## সমস্ত শরীরের মাংসপেশীতে তীব্র ব্যথা অনুভুত হয়

## মাথা ব্যথা 

## বমি বমি ভাবসহ বমি  

## শারীরিক দ‍ুর্বলতা 

## শরীরে ফুসকুড়ি দেখা  দেয়।  

এসব লক্ষণগুলো চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ৩ থেকে ৭ দিনের মধ্যে দেখা দিতে পারে।

চিকুনগুনিয়া জ্বর সাধারণত ৭ দিনের মধ্যে সেরে যায়। জ্বর সারার পরই এই রোগের আসল চেহেরা প্রকাশ পায় – অর্থাৎ জ্বর অবস্থায় গিরায় গিরায় যে প্রচণ্ড রকমের ব্যথা ছিল তা অধিকাংশ রোগীর ক্ষেত্রে সহজে কমতে চায় না।  

দীর্ঘদিন দেহে থেকে যায় এই ব্যথা। ১ মাস থেকে ১ বৎসর পর্যন্তও থাকতে পারে, অনেকের ক্ষেত্রে এই ব্যথা বাত বা আথ্রাইটিসে র‍ূপান্তরিত হয়। এই রোগে আক্রান্ত ব্যাক্তিরা সবচেয়ে বেশি আতঙ্কিত হন এই দীর্ঘ মেয়াদী ব্যথা নিয়ে।

এই রোগে মৃত্যুর সংখ্যা একেবারে নগণ্য । তবে নবজাতক, বয়স্ক (৬৫ বৎসর বা তার বেশি) এবং যে সব রোগী উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদ রোগ বা অন্য কোনো জটিল রোগে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে চিকুনগুনিয়া জটিল আকার ধারণ করে।

চিকুনগুনিয়ার লক্ষণরোগ নির্ণয়:

রক্তের (Serum)IgM পরীক্ষা করে এবং দেহের অন্যান্য লক্ষণগুলো বিবেচনা করে তবেই এই রোগ সম্পর্ক নিশ্চিত হওয়া যায়। তবে রক্ত পরীক্ষা ভাইরাস দ্বার‍া আক্রান্ত হওয়ার কমপক্ষে ৫ দিন পর করা উচিৎ।

হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা:

হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা দ্বারা এই রোগ সম্পূর্ণ র‍ূপে ভালো হয় এবং রোগী খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠেন।

## Eupatorium Perfoliatum – Q  (৫ ফোঁটা + ১ চা চামচ পানি = ১ ডোজ )

## Rhus Toxicodendron – 30 (৫ বড়ি = ১ ডোজ )
১ ডোজ করে ৩ ঘণ্টা পরপর ১ ও ২ থেকে পাল্টাপাল্টি করে খাবেন রাতে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত।

## Atropa Belladonna – 3  (২ ফোঁটা + ১ চা চামচ পানি = ১ ডোজ )
## Arsenicum Album – 3  (২ ফোঁটা + ১ চা চামচ পানি = ১ ডোজ )
১ ডোজ করে ১০ মিনিট পরপর ৩ ও ৪ থেকে পাল্টাপাল্টি করে খাবেন রাতে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত।

## Stibium Crudum – 6 (৫ বড়ি = ১ ডোজ ) ১ ডোজ করে রোজ ২ বার সকালে ও রাতে।

সম্মানিত পাঠক, এই ওষুধগুলো সেবনের আগে অবশ্যই অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।  কেননা ১ ও ২ নং ওষুধ এক ধরনের লক্ষণের জন্য,  ৩ ও ৪ নং ওষুধ এক ধরনের লক্ষণের জন্য এবং ৫ নং ওষুধ আর এক ধরনের লক্ষণের জন্য।  

শেষে সবাইকে বলবো, চিকুনগুনিয়ার আতঙ্কে আতঙ্কিত না হয়ে আসুন চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে সচেতন হই। আক্রান্ত রোগীকে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে আসুন। সম্পূর্ণ বিশ্রামে রাখুন এবং একটু বেশি পরিমাণে তরল খাবার খেতে দিন।  

এ অবস্থায় আক্রান্ত এলাকার বিভিন্ন হাসপাতাল ‍ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে একজন করে অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধ করা যেতে পারে।  

লেখক: হোমিও চিকিৎসক, আনসার হোমিও কমপ্লেক্স, ৬০/১ সিটি বিপণিবিতান, ডিআইটি, বঙ্গবন্ধু সড়ক, নারায়ণগঞ্জ। মোবাইল: +৮৮ ০১৯১২ ০৭৪ ৯২২।  

বাংলাদেশ সময়: ২২১০ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৭
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।