ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

মনপুরাবাসীর স্বপ্নপূরণে নৌ অ্যাম্বুলেন্স

ছোটন সাহা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০১৭
মনপুরাবাসীর স্বপ্নপূরণে নৌ অ্যাম্বুলেন্স নৌ অ্যাম্বুলেন্স

মনপুরা (ভোলা) থেকে: ভোলা জেলার মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন সাগর উপকূলের এক লাখ মানুষের স্বপ্নের নৌ অ্যাম্বুলেন্স চালু হতে হচ্ছে। স্বপ্নপূরণের এমন খবরে আনন্দে ভাসছে মানপুরাবাসী। স্বাস্থ্যসেবায় দীর্ঘদিন ধরে পিছিয়ে থাকা মনপুরার জনগোষ্ঠীর জন্য অ্যাম্বুলেন্সটি আশীর্বাদ বয়ে আনবে বলে আশা করছেন তারা।

উন্নত চিকিৎসা বঞ্চিত মানুষ নৌ অ্যাম্বুলেন্সটির মাধ্যমে দ্রুত চিকিৎসা সেবা পাবেন বলে আশা করছেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য অ্যাম্বুলেন্সটি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চারদিকে নদীবেষ্টিত দ্বীপ উপজেলা মনপুরা থেকে জেলা সদরের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হলো নৌ পথ। জেলা সদরের সাথে যোগাযোগের মাধ্যম ইঞ্জিত চালিত ট্রলার বা সি-ট্রাক। কিন্তু তাতেও ভোগান্তির শেষ নেই।

দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়াতে বন্ধ থাকে এসব নৌযান। তাছাড়া এসব নৌ-যান নির্ধারিত সময়ের বাইরে যাতায়াত করে না। যে কারণে জরুরি প্রয়োজনে প্রসূতি মা কিংবা জরুরি রোগীরা চিকিৎসা নিতে পারেন না। অনেক সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে চড়ে হাসপাতাল যাওয়ার পথে মৃত্যু ঝুঁকিতে পড়েন অনেক মা।

চালু হতে ‍যাওয়া অ্যাম্বুলেন্সটির দৈর্ঘ্য ৩২ ফুট এবং প্রস্থে সাড়ে ৭ ফুট। ১১ লাখ ৯৫ হাজার ৫০০ টাকা ব্যয়ে অ্যাম্বুলন্সেটি তৈরি করা হয়েছে। এ অ্যাম্বুলেন্সে রয়েছে একটি কেবিন, একটি পেসেন্ট বেড, একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার, ২টি ফ্যান, একটি প্রাথমিক চিকিৎসা বাক্স, ২টি লাইফ বয়া এবং ১০টি লাইফ জ্যাকেট। রোগীসহ অ্যাম্বুলেন্সটির ধারণক্ষমতা ২০ জন।

এছাড়াও ডিজেল চালিত নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি ঘণ্টায় ১২ নটিক্যাল মাইল অতিক্রম করতে পারবে যাতে তেল খরচ হবে মাত্র ৩ লিটার।  

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সিজারিং ডেলিভারি না থাকায় চরফ্যাশন কিংবা ভোলা সদর হাসপাতালে বা ক্লিনিকে যেতে হয়। কিন্তু যাতায়াত সুবিধা না থাকায় প্রতি বছরই প্রসূতি মায়েদের মত্যৃ হয়। গত ১৭ মাসে ৫ জন প্রস‍ূতি মায়ের মৃত্যু হয়েছে বলেও জানান স্থানীয়রা।

এছাড়াও দুর্গম কলাতলীর চর, চর নিজাম এবং ঢালচরের মানুষ উপজেলা সদরে আসতে পারে না নৌ যান সংকটের কারণে। তাদের উত্তাল মেঘনা পারি দিতে হয় ইঞ্জিন চালিত ট্রলার দিয়ে। তাই ওই সব রোগীদের জন্য নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি অনেক উপকারে আসবে। এটি চালু হওয়ার মধ্যে দিয়ে মনপুরাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হলো।

এ ব্যাপারে মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহমুদুর রশিদ বলেন, মনপুরায় যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম নৌ পথ হওয়ায় জরুরি রোগী এবং প্রসূতি মায়েরা যথাসময়ে চিকিৎসা পাচ্ছেন না। তাদের অনেক ঝুঁকি নিতে হয়। এই নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি মনপুরাবাসীর অনেক উপকারে আসবে। ঢাকা থেকে ২৫ জুলাইয়ের মধ্যে মনপুরাতে এসে পৌঁছাবে অ্যাম্বুলেন্সটি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১২ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০১৭
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।