ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

সৈয়দপুর মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রে চিকিৎসাসেবায় অরাজকতা!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৭
সৈয়দপুর মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রে চিকিৎসাসেবায় অরাজকতা! সরকারি হাসপাতালটির স্বাস্থ্যসেবা অনেকটা মুখ থুবড়ে পড়েছে। ছবি: বাংলানিউজ

নীলফামারী: নীলফামারীর সৈয়দপুর মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রে চিকিৎসাসেবার নামে চলছে অরাজকতা। প্রতিনিয়ত অবহেলা-হয়রানির শিকার হওয়ার অভিযোগ তুলছেন গর্ভবতী ও প্রসূতি মা এবং তাদের স্বজনেরা। বিনামূল্য চিকিৎসাসেবা ও ওষুধ দেওয়ার কথা থাকলেও সরকারি হাসপাতালটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে উঠছে অর্থ আদায়ের অভিযোগও।

রোগিনী ও তাদের স্বজনদের কোনো টাকা না দিতে নোটিশ ঝুলিয়েও এসব অনিয়ম দূর করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। অবকাঠামো, জনবল, শয্যা ও রোগী পরিবহনে অ্যাম্বুলেন্স সংকটও থাকায় কেন্দ্রটির স্বাস্থ্যসেবা অনেকটা মুখ থুবড়ে পড়েছে।



গর্ভবতী মায়েদের নিরাপদ সন্তান প্রসব ও প্রসূতিদের স্বাস্থ্যসেবায় শহরের নতুন বাবুপাড়া এলাকায় সৈয়দপুর পৌরসভার সামনে ১৯৫৩ সালে স্থাপিত হয় মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রটি। এখন দেওয়া হচ্ছে গর্ভবতী মায়েদের সেবা, স্বাভাবিক ও জটিল প্রসবসেবা, প্রসূতি ও নবজাতকের সেবা, ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের সেবা, গর্ভপাতজনিত সমস্যা, প্রজননতন্ত্রের চিকিৎসাসহ বিভিন্ন চিকিৎসাসেবা। প্রতিদিন গড়ে শতাধিক নারী আসেন এসব চিকিৎসাসেবা নিতে।  

অবকাঠামো, জনবল ও শয্যা সংখ্যা না বাড়ায় কেন্দ্রটিতে চাহিদার তুলনায় তেমন কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই।  ছবি: বাংলানিউজসরেজমিনে জানা গেছে, মোট ২০ শয্যার সরকারি এ প্রতিষ্ঠানে ১ জন মেডিকেল অফিসারসহ ৯ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত। তবে অবকাঠামো, জনবল ও শয্যা সংখ্যা না বাড়ায় কেন্দ্রটিতে চাহিদার তুলনায় তেমন কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই।

গর্ভবতী, প্রসূতি ও শিশুদের এ কেন্দ্রে নারী গাইনি বিশেষজ্ঞ না থাকায় বিব্রতকর অবস্থায় পড়ছেন রোগিনীরা। কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে চিকিৎসার নামে অবহেলা, হয়রানি ও অর্থ আদায়ের অভিযোগও করছেন তারা।

শহরের হাতিখানার এক প্রসূতির স্বামী অভিযোগ করে বলেন, তার স্ত্রীর সন্তান প্রসবের সময় স্টাফরা ২ হাজার টাকা নিয়েছেন। প্রসূতি ও নবজাতককে বাঁচাতে ধার-কর্জ করে ওই টাকা দিয়েছেন তিনি।

রোগী পরিবহনের একমাত্র অ্যাম্বুলেন্সটি অযত্ন আর কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের অভাবে অকেজো পড়ে রয়েছে। একটি প্রকল্পের মাধ্যমে অ্যাম্বুলেন্সটি সরবরাহ করা হলেও প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ায় এর মেরামত ও তদারকি কাজে ভাটা পড়েছে। আরেকটি অ্যাম্বুলেন্সও সামান্য কিছু যন্ত্রপাতির অভাবে চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। সেটিও তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। ফলে জটিল রোগী পরিবহনে নানা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।

কেন্দ্রের এসব অব্যবস্থাপনার অভিযোগ নিয়ে আলোচনা হয়েছে উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায়ও। এরপরই সেবা নিতে আসা রোগিনী ও তাদের স্বজন-অভিভাবকদের টাকা না দিতে কেন্দ্রে নোটিশ ঝুলিয়ে দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। কিন্ত অর্থ ছাড়া এখনো কোনো কাজই হচ্ছে না- এমন অভিযোগ প্রায় সকলেরই।

মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডা. জাহিদুল ইসলাম দাবি করেন, টাকা-পয়সা নেওয়ার অভিযোগ সত্য নয়। কারো কাছ থেকে এমন অভিযোগ পাননি তিনি। তবে কেউ যেন হয়রানির শিকার না হন, সেজন্য নোটিশ টাঙ্গানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

একমাত্র অ্যাম্বুলেন্সটি অযত্ন আর কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের অভাবে অকেজো পড়ে রয়েছে।  ছবি: বাংলানিউজসব ওষুধ বিনামূল্যে দেওয়া হয় ও কোনো ওষুধের সংকট নেই। প্রসূতি-গর্ভবতী নারীদের অভিভাবক-স্বজনদের অর্থ সাশ্রয় ও সিজারিয়ান অপারেশন চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৭
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।