ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

জাবিতে তাপমাত্রার কারণে নষ্ট হচ্ছে ওষুধ

নুর আলম হিমেল, জাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০১৭
জাবিতে তাপমাত্রার কারণে নষ্ট হচ্ছে ওষুধ জাবিতে তাপমাত্রার কারণে নষ্ট হচ্ছে ওষুধ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: মেয়াদ থাকা সত্ত্বেও নষ্ট হচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মেডিকেলের ওষুধপত্র। স্টোর রুম সব সময় বন্ধ থাকা ও তাপমাত্রা বেশি হওয়ার কারণে এমনটি হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলের ফার্মাসিস্ট ও চিকিৎসকরা। তবে এই তাপমাত্রায় ভালো কোম্পানির ওষুধ টিকলেও নামসর্বস্ব কোম্পানির ওষুধ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলেও জানান তারা।

শনিবার (১১ নভেম্বর) সরেজমিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল ঘুরে দেখা যায়, সেখানকার শিক্ষার্থীদে জন্য যে ওষুধ রাখা হয়েছে তার প্রায় সব আইটেমের ওষুধ ড্যামেজ হয়ে গেছে। তারপরেও সেগুলো শিক্ষার্থীদের দেওয়া হচ্ছে।

 

নষ্ট ওষুদের মধ্যে ছিল- নিপ্রো জেএমআই ফার্মার গ্যাসট্যাব ও প্রোকাইনেট,  জেনিথ ফার্মার রেনিটিডিন, এ্যামোক্সিসিলিন ২৫০ মি. গ্রাম ও ডিসন, জেসন ফার্মার রিবোসন, হিস্টাসিন ও ভাইডক্স, বায়োফার্মার ভলকান, হামদর্দের টোনালেক্স, এরিস্টোফার্মার রিউমাক্যাপ, একমির অক্সিকোন-এম এবং লোপামিড। শুধু ভালো ছিল বেক্সিমকোর লোকটামেল।

বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে কর্তব্যরত ডাক্তার শ্যামল কুমার শীল বাংলানিউজকে বলেন, সাধারণ ২৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড থাকলে ওষুধ ভালো থাকে। কিন্তু আমাদের মেডিকেলে স্টোর রুমে ৪০ ডিগ্রির বেশি সেন্টিগ্রেড থাকে। ওষুধতো ড্যামেজ হবেই। আবার এই ড্যামেজ ওষুধ ছাত্রদের খাওয়ানো হয়। আমি হলে এই ওষুধ কখনো খেতাম না।

মেডিকেলের কয়েকজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের  মেডিকেলের যে স্টোর রুম আছে সেটা সব সময় বন্ধ করে রাখা হয়। স্টোর রুমে হাওয়া বাতাস যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। সকাল-বিকেল স্টোর রুম খোলা রাখলে আর এ সমস্যা হতো না। স্টোরের যে দায়িত্বে রয়েছে নুরে-এ-কামাল পিংকু তিনি তো নেতা মানুষ, সব সময় বাইরে বাইরে থাকে। সকালে এসে ওষুধ দিয়ে স্টোর রুম বন্ধ করে চলে যায়। আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়না।

এর আগে ‘জাবিতে নিম্নমানের নষ্ট ওষুধ সরবরাহে বিরুপ প্রতিক্রিয়া’ শিরোনামে বাংলানিউজটোয়েন্টফোর.কম-এ সংবাদ প্রকাশ হলে এ নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী মহলে ব্যাপক আলোচনা হয়। শুক্রবার (১০ নভেম্বর) রাতে আলবেরুনী হলের কয়েকজন শিক্ষার্থী অসুস্থতার কারণে মেডিকেলে ওষুধ নিতে এলে তাদের ড্যামেজ ওষুধ দেওয়া হয়। পরে আল বেরুনী হলের ৩০-৪০ জন ক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থী মেডিকেলে এসে ভাঙচুর ও ড্যামেজ ওষুধ পুড়িয়ে দেয়। একই সঙ্গে তারা মেডিকেল অবস্থান করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সঠিক উত্তর পাওয়ার জন্য। পরে প্রক্টোরিয়াল বডির আশ্বাসে তারা হলে ফিরে যায়।

অধিকাংশ সময় স্টোর রুম বন্ধ থাকার কারণ জানতে চাইলে নুরে-এ-কামাল পিংকু বলেন, আমি ৮ ঘণ্টাই ডিউটি করি। আমার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ যে দিয়েছে তিনি এতদিন কেথায় ছিলেন? আর এ বিষয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়েছি। সাবেক উপাচার্যের সময়ে একটি এসি এ রুমের জন্য বরাদ্দ ছিল, কিন্তু সেটি এখনো লাগানো হয়নি। তাছাড়া এ বিষয়ে সব থেকে ভালো বলতে পারবেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান মেডিকেল অফিসার ডা. মোজেজা জহুরা।  

কিভাবে ওষুধ সরবরাহ করা হয় এমন প্রশ্নে উত্তরে প্রধান মেডিকেল অফিসার ডা. মোজেজা জহুরা বলেন, সব ওষুধ লিস্ট অনুসারে ক্রয় করা হয়। ওষুধ কেনার একটি কমিটি রয়েছে। আজ বিকেলে উপাচার্যে সঙ্গে মিটিং রয়েছে রোববার সব প্রশ্নে উত্তর দিব। এখন কিছু বলতে পারবো না।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম বলেন, এ বিষয়টি উপ-উপাচার্য মো. আমির হোসেন দেখবে। তারা সন্ধ্যার সময় মেডিকেল অফিসার ও সহকারী প্রক্টরদের নিয়ে মিটিং করবেন। গতরাতে সহকারী প্রক্টরা মেডিকেল থেকে যে ওষুধগুলো জব্দ করেছে, সেগুলো লিস্ট অনুসারে দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে উপ-উপাচার্য মো. আমির হোসেনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০১৭
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।