ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

শিক্ষার্থীদের হুমকি-ধামকি শমরিতা চেয়ারম্যানের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৮
শিক্ষার্থীদের হুমকি-ধামকি শমরিতা চেয়ারম্যানের শমরিতা মেডিকেলের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন/ ছবি: কাশেম হারুন

ঢাকা: ‘বেটা আন্দোলন করতে আসছিস! তোর কতলোক আছে? আমার সঙ্গে পুরো সরকার আছে’ বলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের হুমকি-ধামকি দিয়েছেন এম এইচ শমরিতা হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন।

রোববার (১৪ জানুয়ারি) সকাল থেকে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে শমরিতা মেডিকেল কলেজের সামনের রাস্তা বন্ধ করে ৮ দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।  

বেলা ১১টার দিকে চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন কলেজের সামনে এসে হুমকি-ধামকি দিয়ে তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন।

আন্দোলনরতদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পাবনা ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ বন্ধ করে দিছে না? তো কলেজের প্রিন্সিপালের কিছু হইছে? আমি যদি বন্ধ করে দেই আমার কিছু হবে? তোদেরই ইয়ার গ্যাপ হবে!”
শমরিতা হাসপাতাল ও মেডিকেলের চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন/ ছবি: কাশেম হারুনএ সময় এক শিক্ষার্থীর উদ্দেশে মকবুল হোসেন বলেন, “বেটা মাস্তানি করতে আসছিস? সারা কলেজে সাড়ে পাঁচশ’ শিক্ষার্থী আছে, তোদের সঙ্গে কয়জন আসছে?” 

জবাবে ওই শিক্ষার্থী বলেন, “স্যার এখানে যারা আসেনি, তাদেরও মৌন সমর্থন আছে। ” পাল্টা জবাবে মকবুল হোসেন বলেন, “আমার সঙ্গে পুরো সরকার আছে। জেল খাটবি? কত বড় বেয়াদব! আরে বেটা, তুই তোর নিজের কথা চিন্তা কর। ”

এক পর্যায়ে মকবুল হোসেন ঘুরে ঘুরে আন্দোলনরত নারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, “কি হোস্টেলে যাবা না? এখানেই থাকবা? এটা মাস্তানির জায়গা না। নিয়ম মানবা না আবার আন্দোলনও করবা?”
৮ দফা দাবিতে শমরিতা মেডিকেলের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন/ ছবি: কাশেম হারুনএক পর্যায়ে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশিদের সমঝোতায় রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার শর্তে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি হন মকবুল হোসেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাস্তা ছাড়বে না বলে ঘোষণা দেয়।

এরপর ওসিকে রাস্তা খালি করার কথা বলে কলেজের ভেতরে প্রবেশ করেন মকবুল হোসেন। পুরো কলেজে সাড়ে ৫শ’ শিক্ষার্থী আর আন্দোলন করছে ৩০/৪০ জন। যারা আন্দোলন করছে তারা কেউ নিয়মিত ছাত্র না বলে দাবি করেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান।

আন্দোলনরত ইন্টার্ন চিকিৎসক আকাশ বলেন, “ঢাকা মেডিকেলের আওতাধীন সকল মেডিকেল কলেজে ইন্টার্ন ডাক্তারদের (এমবিবিএস) সর্বনিম্ন ভাতা ১৫ হাজার টাকা দিলেও আমাদের দেওয়া ১০ হাজার টাকা। তাই এমবিবিএস ইন্টার্ন ডাত্তারদের সর্বনিন্ম ভাতা ১৫ হাজারসহ, ইর্ন্টান ডাক্তার (বিডিএস) সর্বনিম্ন দশ হাজার টাকা দিতে হবে। ”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দিয়ে সবসময় প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করা হয়। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। ”

আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের অন্যান্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- বিনা দোষে বহিষ্কৃত ইর্ন্টান ডাক্তার লিমন মন্ডলের বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার ও প্রতি বছর শিক্ষার্থীদের বেতন বৃদ্ধি বন্ধ করা।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৮
পিএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।