ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ঢাকায় ব্ল্যাড ক্যান্সার বিশেষজ্ঞদের সভা

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০৪ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১৯
ঢাকায় ব্ল্যাড ক্যান্সার বিশেষজ্ঞদের সভা

ঢাকা: ব্ল্যাড ক্যান্সার চিকিৎসার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রোশ হেমাটোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের সহযোগিতায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের উপস্থিতিতে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (২৮ জুন) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকার একটি মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।  

সভায় প্রাণঘাতী ব্ল্যাড ক্যান্সার, নন হজকিনস লিম্ফোমা, এক্স-লিঙ্কড হেমোফিলিয়া  সম্পর্কিত নতুন তথ্য ও এর প্রতিকার সম্পর্কে বাংলাদেশে এ চিকিৎসা সহজলভ্য করার বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা আলোচনা করেন।

 

সভায় হেমাটোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের কার্যকরী কমিটির সদস্যসহ দেশের ব্ল্যাড ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন।

সভা তিনটি সেশনে ভাগ করা হয়। প্রথম সেশনের আলোচ্য বিষয় ছিল ‘ফলিকুলার লিম্ফোমার বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ চিকিৎসা ব্যবস্থা। ’ এ বিষয়ে বক্তা ছিলেন অ্যাপোলো হাসপাতাল বাংলাদেশের কনসালট্যান্ট ও কো-অডিনেটর, অ্যাডাল্ট হেমাটোলজি/এইচএসছিটি ডা. এ জে এম সালেহ।

এ সেশনের প্যানেল মেম্বার ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. আলমগীর কবির, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) হেমাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. এম এ আজিজ ও কর্নেল ড. মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন।

উপস্থিত চিকিৎসকরা ফলিকুলার লিম্ফোমার বর্তমান চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং রোশ কর্তৃক উদ্ভাবিত, বাংলাদেশের ঔষধ প্রসাশন অধিদপ্তরের অনুমতিপ্রাপ্ত ‘Gazyva’ এর ব্যবহারে ফলিকুলার লিম্ফোমা চিকিৎসা ব্যবস্থার নতুন দিক সম্পর্কে অবগত হন।  

এ মেডিসিনটির অনুমতি প্রাক্কালে যে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালটি করা হয়েছিল ও তার ফলাফল এখানে আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল। অনুষ্ঠানে মেডিসিনটি রোগীর শরীরে কার্যকারিতা ও সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।

সূচনা বক্তব্যে হেমাটোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ডা. এম এ আজিজ বলেন, ব্ল্যাড ক্যান্সার বিষয়ে এ ধরনের আয়োজন নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের রোগীদের উপকৃত করবে। গবেষণার সর্বশেষ ফলাফল, নতুন উদ্ভাবন এবং বিভিন্ন বেস্ট প্র্যাক্টিস দেশের বিশেষজ্ঞদের মধ্যে পরিচিতকরণের মাধ্যমে আমাদের সক্ষমতা বাড়বে।

আর্মড ফোরসেস ইনস্টিটিউশন অব প্যাথলজির মেজর জেনারেল সুসানে গীতি বলেন, ব্ল্যাড ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আমাদের সক্ষমতাও সমানভাবে বাড়াতে হবে। রোগ নির্ণয়ের আধুনিক যন্ত্রের সংখ্যা বাড়াতে হবে।  

ঢামেক হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের সাবেক হেড অব দ্য ডিপার্টমেন্ট অধ্যাপক ডা. এম এ খান বলেন, ব্ল্যাড ক্যান্সার চিকিৎসায় ঢামেকের বিএমটি ইউনিট থেকে আমরা রোগীদের সেবা দিচ্ছি। তবে এক্ষেত্রে বরাদ্দ ও সক্ষমতা বাড়ানো জরুরি।  

পরবর্তী সেশনের আলোচ্য বিষয় ছিল ‘Diffuse Large B Cell Lymphoma’ এর চিকিৎসাসেবা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয়তা ও তার ভবিষ্যৎ চিকিৎসা সমাধান। এ সেশনের বক্তা ছিলেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউশন অব ক্যান্সার রিসার্চ হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. মো. মাহবুবুর রহমান।

এ সেশনের প্যানেল মেম্বার ছিলেন প্রফেসর- বিএসএমএমউ’র হেমাটোলজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ডা. এ বি এম ইউনুস, স্কয়ার হাসপাতালের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. ফারুক আহমেদ, ঢামেক হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের সাবেক হেড অব দ্য ডিপার্টমেন্ট প্রফেসর ডা. এম এ খান।

তৃতীয় শেষ সেশনের আলোচনার বিষয় ছিল ‘এক্স-লিঙ্কড রোগ হেমফিলিয়ার চিকিৎসা ব্যবস্থার চ্যালেঞ্জ। ’ এ সেশনের বক্তা ছিলেন ঢামেক হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ডা. অখিল রঞ্জন বিশ্বাস।

এ সেশনের প্যানেল মেম্বার ছিলেন আর্মড ফোরসেস ইনস্টিটিউশন অব প্যাথলজির মেজর জেনারেল সুসানে গীতি, বারডেম হাসপাতালের প্রফেসর ডা. সালমা আফরোজ, বিএসএমএমউ’র হেমাটোলজি বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ডা. আমিন লুতফুল কবির।

অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য রাখেন- হেমাটোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ডা. এম এ আজিজ। সমাপনী ঘোষণা করেন হেমাটোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের সভাপতি ও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউশন অব ক্যান্সার রিসার্চ হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের হেড অব দ্য ডিপার্টমেন্ট প্রফেসর ডা. মাহাবুবুর রহমান।

প্রফেসর ডা. মাহাবুবুর রহমান তার বক্তব্যে রোশ বাংলাদেশের এ ধরনের বৈজ্ঞানিক আলোচনা সভা আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। এছাড়া সব ব্ল্যাড ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নতুন চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্পর্কে অবগত থাকার এবং সেই মোতাবেক রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার আহ্বান জানান।  

সমাপনী বক্তব্যে হেমাটোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের সভাপতি প্রফেসর ডা. মাহাবুবুর রহমান বলেন, রোগীদের কল্যাণে চিকিৎসা সেবার সংশ্লিষ্ট সবাইকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। যথাযথ সমন্বয় এবং রোগীর চাহিদাকে প্রাধান্য দেওয়ার মাধ্যমেই কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জন সম্ভব। এক্ষেত্রে বেসরকারি খাতকেও উদ্যোগী হতে হবে। রোশের এ ধরনের কার্যক্রমকে নিয়মিত আকারে চালু রাখতে হবে।

রোশ বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ ধরনের বৈজ্ঞানিক আলোচনা সভা চলমান রাখার ও রোগী কল্যাণ সংশ্লিষ্ট উদ্যোগের বিষয়ে আশ্বাস দেওয়া হয়। রাত সাড়ে ৯টায় অনুষ্ঠান শেষ হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২০০২ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০১৯
আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।