ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ডায়রিয়া: চাঁপাইনবাবগঞ্জে একদিনে আক্রান্ত শতাধিক 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৪৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৯
ডায়রিয়া: চাঁপাইনবাবগঞ্জে একদিনে আক্রান্ত শতাধিক 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় হঠাৎ ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। একদিনে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন নারী-পুরুষ ও শিশুসহ সব বয়সের শতাধিক মানুষ। তবে আক্রান্তদের মধ্যে নারীর সংখ্যাই বেশি। 

বুধবার (২৩ অক্টোবর) সন্ধ্যা থেকে বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) দুপুর পর্যন্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রায় ১০০ ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন।

ওই হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, বেডের সংখ্যা কম হওয়ায় হাসপাতালের বারান্দায় রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন।

আর আকস্মিক রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় তাদের সেবা দিতেও হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। হাসপাতালে বেড সংকটের কথা শুনে স্বচ্ছল অনেক ডায়রিয়ার রোগী নিজ নিজ বাড়িতে বা ক্লিনিকেও চিকিৎসা নিচ্ছেন বলেও জানা গেছে।

আক্রান্তরা বাংলানিউজকে জানান, নবাবগঞ্জ পৌরসভার ৪, ৫, ৬, ৭ ও ৮ নম্বর ওর্য়াডের দারিয়াপুর, হরিপুর, নামোনিমগাছী ও রাজারামপুর এলাকায় এ ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে।  

হাসপাতাটিতে চিকিৎসাধীন হরিপুর মিয়াপাড়ার আমিনের স্ত্রী পারভিন (৩৩) বাংলানিউজকে বলেন, বুধবার রাত থেকেই হঠাৎ বমি আর পাতলা পায়খানা শুরু হয়। বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। তবে এখানে চিকিৎসাসেবা পেলেও কলেরা স্যালাইন বাইরে থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।

অন্যদিকে, নামোনিমগাছী গ্রামের আকতারুলের স্ত্রী রোকসানা (২৪) জানান, রাতের খেয়ে ঘুমানোর পর হঠাৎ পেট ব্যথার সঙ্গে বমি আর পাতলা পায়খানা শুরু হয়। তার পরিবার পৌরসভার সরবরাহ কার লাইনের পানি পান করেন।

একই কথা বলেন হরিপুরের সিরাজুলের স্ত্রী হাবিবা (৩০), শ্রী রঙ্গ কর্মকারের ছেলে জীবন কর্মকার (৪৫) ও শফিকুল ইসলাম (৬২)। তাদের দাবি পৌরসভার সাপ্লাইয়ের পানি পানের কারণেই তারা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন।  

রোগীদের অভিযোগ, বেডের অভাবে বৃষ্টির মধ্যে স্যাঁতস্যাঁতে মেঝেতে তাদের চিকিৎসা সেবা নিতে হচ্ছে। একইসঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কলেরা স্যালাইন রোগীদের সরবরাহ না করায় বাইরের ফার্মেসিগুলো থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে হাসপাতালটির আবাসিক চিকিৎসক নাদিম সরকার বাংলানিউজকে বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত হাসপাতালে ৮৩ জন ডায়রিয়ার রোগী ভর্তি হয়েছেন এবং রোগী এখনো আসছেন। কিন্তু কলেরা স্যালাইনটি স্টকে না থাকায় রোগীদের তা বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। তবে স্যালাইন সংকটের বিষয়টি ওপর মহলে জানানো হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. নজরুল জাহিদ বাংলানিউজকে বলেন, আতঙ্কের কিছু নেই। সুষ্ঠুভাবে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। কলেরা স্যালাইনের ব্যবস্থা করার প্রচেষ্টা চলছে। আর পৌরসভার সাপ্লাই পানি বর্জন করে টিউবওয়েলের পানি পান করতে এবং পানি ফুটিয়ে পান করার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।

যোগাযোগ করলে নবাবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মোহম্মদ নজরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, পানি পান করে ডায়রিয়ার প্রকোপের অভিযোগ জানতে পেরে ওইসব ওর্য়াড এলাকায় তিনটি টিম পাঠানো হয়। এছাড়া পানি সাপ্লাইও বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে হরিপুরে সাপ্লাইয়ের দু’টি পাইপে লিকেজ ধরা পড়লে সেটি মেরামত শেষে বিকেলে পুনরায়  
পানি ছেড়ে দেওয়া হয়। এছাড়া ওইসব ওয়ার্ডের তিনটি ডিপ টিউবওয়েলে পানি বিশুদ্ধকরণ ব্লিচিং পাউডার দেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৯
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।