ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

প্রোজেরিয়া আক্রান্ত শিশু শনাক্তে ক্যাম্পেইন শুরু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১২ ঘণ্টা, নভেম্বর ৫, ২০১৯
প্রোজেরিয়া আক্রান্ত শিশু শনাক্তে ক্যাম্পেইন শুরু

ঢাকা: প্রোজেরিয়া আক্রান্ত (বিরল জেনেটিক রোগ, রোগী খুব অল্পবয়সে বুড়িয়ে যায়) শিশুদের শনাক্ত করতে ‘ফাইন্ড দ্য চিলড্রেন-১০ ইন বাংলাদেশ উইথ প্রোজেরিয়া’ নামে ক্যাম্পেইন শুরু করেছে দ্য প্রোজেরিয়া রিসার্চ ফাউন্ডেশন (পিআরএফ)। এটি বিশ্বের একমাত্র প্রতিষ্ঠান যারা প্রোজেরিয়া আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা ও নিরাময়ে কাজ করে। শিশুদের দ্রুত বার্ধক্যজনিত জটিল এ রোগের বিষয়ে সবাইকে সচেতন করতেই এ ক্যাম্পেইনের আয়োজন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সোমবার (৪ নভেম্বর) থেকে ক্যাম্পেইনটি বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে শুরু হয়েছে বলে বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন পিআরএফের প্রেসিডেন্ট এবং এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর অড্রে গর্ডন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রোজেরিয়ার বৈশিষ্ট্য হলো- আক্রান্ত শিশুকে দেখতে বয়সের তুলনায় অধিক বয়স্ক মনে হয়।

এ রোগের ফলে শিশুরা গড়ে ১৪ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে। এছাড়া প্রোজেরিয়া আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে শরীরের বিভিন্ন জোড়া শক্ত হওয়া, স্বাভাবিক বৃদ্ধি না হওয়া, ওজন কমে যাওয়া এবং চুল ও ত্বক বয়স্ক লোকদের মতো হয়ে যাওয়া লক্ষণগুলো দেখতে পাওয়া যায়। ফলে আক্রান্ত শিশুরা জাতিগতভাবে ভিন্ন থাকলেও সবাইকে প্রায় একই রকম দেখায়।

পিআরএফের প্রেসিডেন্ট এবং এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর অড্রে গর্ডন বলেন, আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে আমরা তাদের খুঁজে বের করতে চাই। তাদের শনাক্ত করে চিকিৎসা সহায়তা করাই হলো ‘ফাইন্ড দ্য চিলড্রেন’ ক্যাম্পেইনের উদ্দেশ্য। প্রোজেরিয়া এমন জটিল রোগ যা অনেকেই বুঝতে পারে না। বাংলাদেশ এমন একটা দেশ যেখানে প্রায় ১৬৫ মিলিয়ন বা ১৬ কোটির বেশি লোক বসবাস করে। পরিসংখ্যানগত দিক বিবেচনা করে আমরা মনে করি, প্রায় ১০ জন প্রোজেরিয়া আক্রান্ত রোগী এখানে রয়েছে। প্রোজেরিয়া আক্রান্ত শিশুদের শনাক্ত করে তাদের চিকিৎসা দেওয়া এবং জনসাধারণসহ স্বাস্থ্যসেবাদাতাদের সচেতন করতে এ ক্যাম্পেইনের আয়োজন করা হয়েছে। এসব রোগীদের চিকিৎসা পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি ক্লিনিক্যাল ট্রিটমেন্ট ট্রায়ালে অংশগ্রহণের সুযোগ করে বর্তমান অবস্থার উন্নতির জন্য ওষুধের ব্যবস্থা করা হবে। যেন তারা আরও দীর্ঘদিন ভালোভাবে জীবনযাপন করতে পারে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ৩৫০-৪০০ শিশু জটিল এ রোগে আক্রান্ত বলে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন। কিন্তু ২০১৯ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত মাত্র ১৬১ জন আক্রান্ত শিশুর সন্ধান পেয়েছে দ্য প্রোজেরিয়া রিসার্চ ফাউন্ডেশন। ফলে প্রায় ২০০ শিশু এর আওতার বাইরে রয়েছে। পরিসংখ্যানগত দিক বিবেচনা করে বাংলাদেশে প্রায় ১০ জন প্রোজেরিয়া আক্রান্ত রোগী রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে তাদের এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।

পিআরএফের মেডিকেল ডিরেক্টর ডা. লেসলি বি. গর্ডন বলেন, বাংলাদেশে আমরা যখন প্রোজেরিয়া রোগীর সন্ধান পাবো, তখনই তারা পিআরএফের আন্তর্জাতিক প্রোজেরিয়া রেজিস্ট্রির অংশ হয়ে যাবে। চিকিৎসা সুপারিশ পাওয়ার পাশাপাশি ক্লিনিক্যাল চিকিৎসা পরীক্ষায় যোগদানের জন্য আমন্ত্রিত হবেন। বাংলাদেশে প্রোজেরিয়া আক্রান্ত প্রতিটি শিশুকে এই সুযোগ দেওয়াই আমাদের অন্যতম লক্ষ্য।

বাংলাদেশ সময়: ০৫১৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০১৯
এমএএম/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।