ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

‘ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে হাসপাতালগুলোতে পুষ্টিবিদ জরুরি’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৯
‘ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে হাসপাতালগুলোতে পুষ্টিবিদ জরুরি’ ‘বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন আপডেট ২০১৯’ শীর্ষক কনফারেন্সে বক্তারা/ছবি- শাকিল

ঢাকা: ডায়াবেটিসের প্রাদুর্ভাব দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় এ রোগ নিয়ন্ত্রণে চিকিৎসকদের পাশাপশি পুষ্টিবিদ নিয়োগ দেওয়া জরুরি বলে মনে করেন দেশের পুষ্টিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা। কেননা ডায়াবেটিসের প্রাদুর্ভাব দূর করতে রোগের চিকিৎসা বা রোগ পরবর্তী নিয়ন্ত্রণের চেয়ে রোগটি প্রতিরোধের চেষ্টাই বেশি কার্যকরী বলে মনে করেন তারা। 

শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) শহীদ মিলন হলে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন আপডেট ২০১৯’ শীর্ষক কনফারেন্সে বক্তারা এ আহ্বান জানান। বাংলাদেশ নিউট্রিশন অ্যান্ড ডায়াবেটিস ফোরাম (বিএনডিএফ) এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ফর প্যারেন্টেরাল অ্যান্ড এন্টেরাল নিউট্রিশন (বিডিএপিইএন) যৌথভাবে দিনব্যাপী এই কনফারেন্সের আয়োজন করে।

 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য এবং নারী ও শিশু বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য শবনম জাহান শিলা বলেন, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হচ্ছে সঠিক পথ্য। আর তা দিতে পারেন কেবল দক্ষ পুষ্টিবিদরাই। দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে যাতে বাধ্যতামূলকভাবে পুষ্টিবিদ নিয়োগ দেওয়া হয় সে বিষয়ে সংসদে প্রস্তাব দেবেন বলেও আশ্বাস দেন শবনম জাহান।

এর আগে অনুষ্ঠানে উপস্থিত বক্তারা দেশের সব হাসপাতালে চিকিৎসকের পাশাপাশি বাধ্যতামূলকভাবে পুষ্টিবিদ নিয়োগের দাবি জানান।

পুষ্টিবিদ সানে আরা কবিরকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়রাজধানীর হোম ইকোনোমিক্স কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক শাহীন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বারডেম হাসপাতালের মেডিসিন এবং অ্যান্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক হাজেরা মাহতাব, বিএসএমএমইউ’র উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার, বিআইএইচএস’র উপদেষ্টা অধ্যাপক লিয়াকত আলী, বিএনডিএফ’র সাধারণ সম্পাদক শামসুন্নাহার মহুয়া প্রমুখ।

এছাড়া অনুষ্ঠানে দেশের প্রথম পুষ্টিবিদ সানে আরা কবিরকে আজীবন সম্মাননা দেন উপস্থিত দেশের স্বনামধন্য পুষ্টিবিদরা। এসময় বক্তারা বলেন, পুষ্টিবিদরা শুধুমাত্র ঢাকায় ও বিভাগীয় শহরে রয়েছেন। কিন্তু গ্রামাঞ্চলে এর প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি। শুধুমাত্র ডায়াবেটিস নয় বরং সব রোগের হার কমাতে সচেতনতামূলক জীবন কাটাতে তাদের জন্য সরকারি হাসপাতালে পুষ্টিবিদদের উপস্থিতি প্রয়োজন।      

এসময় বক্তারা বলেন, আমরা চিকিৎসার পেছনে অনেক অর্থ খরচ করি। অনেকে সর্বস্বান্ত হয়ে যায় চিকিৎসা করাতে গিয়ে। তাই যদি আগে থেকে সচেতনতার সঙ্গে জীবন কাটানো যায় তাহলে রোগমুক্ত থাকা সম্ভব, বিশেষ করে ডায়াবেটিস। এই বাংলা ভূখণ্ডের মানুষ একসময় নিয়মিত নিরামিষভোজী ছিল। এখন তারা আমিষভোজী হয়েছে। তাই রোগের ধরন পরিবর্তিত হচ্ছে। আমরা উন্নত হচ্ছি ফলে আমাদের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তিত হচ্ছে, ফাস্ট ফুডের দিকে বেশি ঝুঁকে পড়ছি। উন্নত বিশ্বে এমনটা থাকলেও সেখানে ফাস্টফুডের সঙ্গে নিউট্রিশন ফুড নিশ্চিত করা হয়। আমাদের দেশের ফাস্টফুড থেকে আমরা কেবলমাত্র কার্বোহাইড্রেট এবং ফ্যাট পাচ্ছি। তাই আমাদেরকে নিউট্রিশন খাবার গ্রহণের প্রতি আরো সচেতন হতে হবে। এর সঙ্গে সঙ্গে সরকারকে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে হবে এক্ষেত্রে।

বসুন্ধরা আটার স্টলবক্তারা আরো বলেন, কার্বোহাইড্রেট এবং ফ্যাটের ভিটামিনসহ অন্যান্য মিনারেল জাতীয় খাবার গ্রহণের অভ্যাস ছোটবেলা থেকেই শিশুদেরকে করাতে হবে। তাছাড়া ঘরে রান্না করার শাকসবজি সঠিকভাবে রান্না করতে হবে। কেননা প্রায়ই দেখা যায় শুধুমাত্র রান্নার ভুল থাকার কারণে খাবারের পুষ্টিগুণ বিদ্যমান থাকে না। এদিকে আমাদের বিশেষ নজর রাখতে হবে। প্রয়োজনে রান্নার নিয়মের ক্ষেত্রেও পুষ্টিবিদদের পরামর্শ নিতে হবে।  

দিনব্যাপী কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করা সহযোগী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে বসুন্ধরা আটা। এসময় সেখানে স্বাস্থ্যকর বসুন্ধরা আটার স্টলে ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।  

অনুষ্ঠানে মিডিয়া পার্টনার হিসাবে রয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন নিউজপোর্টাল বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৯
এমএএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।