ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

দাতার অভাবে বছরে ৪০ হাজার কিডনি বিকল রোগী মারা যায়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২০
দাতার অভাবে বছরে ৪০ হাজার কিডনি বিকল রোগী মারা যায়

ঢাকা: ১৯৮২ সাল থেকে কিডনি সংযোজন ও ডায়ালাইসিস সেবা চালু রয়েছে বাংলাদেশে। এখানে শতভাগ কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট হয় জীবিত নিকটাত্মীয়ের দেহ থেকে কিডনি বিযুক্ত করে। কিন্তু অঙ্গদাতা বা ডোনার সংকটের কারণে প্রতিবছর মারা যাচ্ছেন ৪০ হাজার কিডনি বিকল রোগী।

এর মধ্যে ২০ ভাগ কিডনি রোগের চিকিৎসা পেলেও বাকি ৮০ ভাগ চিকিৎসা সেবার বাইরেই থেকে যাচ্ছে। একইভাবে হাজার হাজার মানুষ লিভার, হার্ট, ফুসফুস, অগ্নাশয় ইত্যাদি বিকল হয়ে অকালে মারা যাচ্ছে।

অথচ উন্নত বিশ্বে কিডনি বিকল ৬০-৭০ ভাগের বেশি মানুষ মরণোত্তর অঙ্গদান প্রক্রিয়ায় চিকিৎসা নিয়ে নতুন জীবন ফিরে পাচ্ছে।

শনিবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মিরপুরে কিডনি ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে ‘মরণোত্তর অঙ্গদান ও সংযোজন’ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন। কিডনি ফাউন্ডেশন, সোসাইটি অব অর্গান ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন বাংলাদেশ এবং কোরিয়া ইউনিভার্সিটি আনাম হসপিটালের যৌথ উদ্যোগে কোরিয়ান সোসাইটি ফর ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন এবং বাংলাদেশ রেনাল অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায় এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।  

কিডনি ফাউন্ডেশন ও সোসাইটি অব অর্গান ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন, বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আর রশিদের সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ক্যাম্পেইন ফর পপুলার এডুকেশনের নির্বাহী পরিচালক ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী। আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক এ কে আজাদ খান, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. কাজী দীন মোহাম্মদ, রোটারি ক্লাব অব ঢাকা রয়েলের সভাপতি মো. জাহীদ হোসেন, রোটারি ইন্টারন্যাশনালের ডিস্ট্রিক্ট গভর্নর এম. খাইরুল আলম, লায়ন্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনালের ডিস্ট্রিক্ট গভর্নর লায়ন শহিদুল ইসলাম, ইনার হুইল বাংলাদেশের সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান মহসিনা রেজা, কিডনি ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম এ ওয়াহাব, ব্রি. জে. (অব.). অধ্যাপক ডা. জিয়াউদ্দিন আহমেদ, মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম. মুহিবুর রহমান প্রমুখ।  

অনুষ্ঠানে অর্গান ডোনার কার্ড চালু করা হয় এবং কিডনি সংযোজন করে বেঁচে আছেন এমন কয়েকজন ব্যক্তিকে সম্মাননা দেওয়া হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, যারা নিজেদের কিডনি দান করেছেন এবং যারা গ্রহণ করেছেন তারা একেকটা ইতিহাস। মরণোত্তর অঙ্গদান অনেক কঠিন একটা কাজ হলেও অসম্ভব কিন্তু নয়। তাছাড়া এটা শুধু কিডনি ফাউন্ডেশনের একার কাজও নয়। এজন্য আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে, মানুষের ইমোশনকে জাগিয়ে তুলতে হবে।  

অধ্যাপক ডা. হারুন আর রশিদ বলেন, দিন দিন কিডনি বিকল রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। জীবিত কিডনি দাতার সংকট প্রকট বলে বিকল রোগীরা প্রতিস্থাপন করতে না পেরে অকালে মারা যাচ্ছে। এসব বিষয় চিন্তা করে গত বছর থেকে সোসাইটি অব অর্গান ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন, কিডনি ফাউন্ডেশন এবং বাংলাদেশ রেনাল অ্যাসোসিয়েশন মরণোত্তর কিডনি ও লিভার দানের উদ্যোগ ও যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করে। কিন্তু সচেতনতা, ধর্মীয় অজ্ঞতা এবং অনাগ্রহের কারণে সেটি সফল হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২০
এমএএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।