ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ট্র্যাডিশনাল ওষুধের বিকাশে সরকারি সহায়তার আশ্বাস

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২০
ট্র্যাডিশনাল ওষুধের বিকাশে সরকারি সহায়তার আশ্বাস ‘বিমসটেক ট্র্যাডিশনাল হেলথ কেয়ার এক্সপো-২০২০’ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

ঢাকা: বাংলাদেশে আয়ুর্বেদিক, হোমিওপ্যাথি ওষুধের মতো ট্র্যাডিশনাল মেডিসিনের বিকাশে প্রাইভেট সেক্টরের প্রতি সরকারের সব ধরনের সহায়তা থাকবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। একই সঙ্গে ট্র্যাডিশনাল মেডিসিনের প্রসারে এর কাঁচামালের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত রাখতে গাছপালা নিধন রোধ এবং বনায়নের প্রতি সবাইকে আহবান জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) ‘বিমসটেক ট্র্যাডিশনাল হেলথ কেয়ার এক্সপো-২০২০’ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, স্বাস্থ্যখাতে বাংলাদেশের বেশ সুনাম আছে।

দেশে ৩৬টি মেডিক্যাল কলেজ এবং চারটি বিশ্ববিদ্যালয় আছে। তবে শুধু মেডিক্যাল কলেজ থাকলেই হয় না, ডাক্তার, নার্স, অন্য লোকবল এবং যন্ত্রপাতি দরকার। কিন্তু তার থেকেও বেশি দরকার ওষুধ। যে ওষুধ রোগীকে দেওয়া হবে তা যেন ভাল হয়, গুণগত মানসম্পন্ন হয়। আপনারা জানেন, অ্যালোপ্যাথি মেডিসিনে আমরা ভাল করছি। তবে ট্র্যাডিশনাল মেডিসিনও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। যখন অ্যালোপ্যাথি ওষুধ ডেভেলপ করে নাই তখন থেকে বাংলাদেশসহ আশেপাশের অঞ্চলে এ ট্র্যাডিশনাল মেডিসিন বহুল প্রচলিত ছিল। যদিও পরে অ্যালোপ্যাথি যেভাবে বড় হয়েছে, ট্র্যাডিশনাল মেডিসিন সেভাবে বড় হয়নি। সরকার একা সবকিছু করতে পারে না। প্রাইভেট খাত উদ্যোগ নেবে, আমরা সরকার থেকে সব ধরনের সাহায্য করবে।

অ্যালোপ্যাথি ওষুধের প্রধান কাঁচামাল গাছপালা উল্লেখ করে বৃক্ষ নিধন রোধ এবং বনায়নের জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, অ্যালোপ্যাথি ওষুধের অনেক ধরনের প্বার্শ প্রতিক্রিয়া থাকে। ট্র্যাডিশনাল মেডিসিনের সেসব নেই। বিশ্বের অনেক দেশে এখন অ্যালোপ্যাথি থেকে ট্র্যাডিশনাল মেডিসিন বেশি প্রেসক্রাইব করা হয়। তাই এ খাতে আরও জোর দেওয়ার সময় এখনই। তবে এর মূল কাঁচামাল গাছপালা কিন্তু সেই গাছপালা দিন দিন কমে যাচ্ছে। আমাদের সবার উচিৎ বৃক্ষ নিধন রোধ করা এবং আরও বনায়নের দিকে জোর দেওয়া।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ওষুধ প্রশাসনের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, আমাদের দেশ থেকে ১৫০টিরও বেশি দেশে অ্যালোপ্যাথি ওষুধ রপ্তানি হয়। তবে আয়ুর্বেদিক ওষুধের অবস্থা কী সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা নেই। আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরি করতে হলেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জিএমপি গাইডলাইন ও স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ করতে হয়। দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে, আমাদের দেশে ট্র্যাডিশনাল মেডিসিন তৈরির দক্ষ লোকবল আছে কি না যারা সব নিয়ম অনুসরণ করে ওষুধ বানাতে পারে। সব থেকে বড় বিষয় এ খাতে উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারীর অভাব রয়েছে। তবে আমরা এসব বিষয়ে কাজ করছি। জিএমপি অনুসরণ করে একটি গাইডলাইন করছি আমরা যেগুলো ট্র্যাডিশনাল মেডিসিন প্রস্তুতকারকরা ইতোমধ্যে স্বাগত জানিয়েছেন। প্রস্তুতকারকরা কোথা থেকে ওষুধের কাঁচামাল সংগ্রহ করছেন, সেগুলোর গুণগত মান কেমন, ওষুধের মান কেমন, সেগুলো আমরা দেখা শুরু করেছি। সবকিছু একটি আইনি কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসতে কাজ করছি আমরা।

ভারতীয় চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) এবং বাংলাদেশ আয়ুর্বেদ ফাউন্ডেশনের (বিএএফ) যৌথ উদ্যোগে এবং বাংলাদেশ সরকারের পরিবার কল্যাণ ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ভারত সরকারের আয়ুশ মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রথমবারের মতো আয়োজিত হচ্ছে এ এক্সপো। তিনদিনব্যাপী আয়োজনের আজ দ্বিতীয় দিনে সমাপনী সেশন আয়োজিত হয়। এ সমাপনী সেশনে আরও বক্তব্য রাখেন আয়োজনের মুখ্য সমন্বয়ক এ এফ এম ফখরুল ইসলাম মুন্সী, বি এ এফ এর সভাপতি এ বি এম গোলাম মোস্তফা, আইসিসি এর স্বাস্থ্যসেবা উদ্যোগের প্রধান সুজয় ঘোষ, বাংলাদেশের হোমিওপ্যাথিক বোর্ডের চেয়ারম্যান দিলীপ কুমার।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২০
এসএইচএস/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।