ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

শুল্কমুক্ত বাতের ওষুধ-চিকিৎসায় প্রণোদনার আহ্বান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২০
শুল্কমুক্ত বাতের ওষুধ-চিকিৎসায় প্রণোদনার আহ্বান

ঢাকা: নিয়ম মেনে ওষুধ সেবন, শরীরচর্চার পাশাপাশি জনসচেতনতায় বাতব্যথার রোগীরা অনেকটা সুস্থ থাকতে পারেন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের প্রায় দুই শতাংশ তরুণ-তরুণী বাতব্যথায় ভোগেন। প্রাথমিক পর্যায়ে বাতব্যথার কোনো উপসর্গ দেখা দেয় না।

এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ৯ থেকে ১০ বছর পর তীব্রতা প্রকাশ পায়। ফলে কম বয়সে বিষয়টি বুঝা যায় না। এতে করে অল্প বয়সে অনেক তরুণ কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। নিয়মিত শরীর চর্চা ও ওষুধ সেবনই এর তীব্রতা রোধ করতে পারে। একইসঙ্গে বাতের ওষুধ আমদানিতে শুল্কমুক্ত করাসহ এ চিকিৎসা ব্যবস্থায় প্রণোদনা দেওয়ার আহ্বান জানান তারা।

শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) আশুলিয়ার সামাজিক কনভেনশন সেন্টারে বাতব্যাথার রোগীদের সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানে এ কথা জানান বিশেষজ্ঞরা। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে প্রফেসর নজরুল রিউম্যাটোলজি ফাউন্ডেশন অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট। এতে সহযোগিতা করেছেন হেলথকেয়ার ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেড। এবারের প্রতিপাদ্য ছিলো ‘ব্যথাকে আর করবো না ভয়, জীবনকে এবার করবো জয়’।

বক্তারা বলেন, দেশে প্রতিনিয়ত বাতব্যথার রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সঠিক চিকিৎসা ও সচেতনতার অভাবে অনেক রোগী ধীরে ধীরে তাদের কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে। এ চিকিৎসার অনেক ওষুধ দেশে তৈরি হয় না, তাই আমদানি করতে হয়। ফলে এর চিকিৎসার ব্যয় বেড়ে যায় অনেক। এতে করে অনেক রোগী ব্যয় বহন করতে না পেরে চিকিৎসা বন্ধ করে দেন। এমন বাস্তবতায় বাতব্যথার রোগীদের সচেতন বাড়ানো, ওষুধ আমদানিতে ট্যাক্স মওকুফ ও চিকিৎসা ব্যয় কমানোর পরামর্শ দেন তারা।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) রিউম্যাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, আমাদের দেশে প্রতিদিন ৫ হাজার রোগী উন্নত চিকিৎসা নিতে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতসহ অন্যান্য দেশে চলে যাচ্ছে। বিশ্বে ৬৪৪ প্রকারের বাতজ্বর রয়েছে। বড় দাগে ২০০ প্রকার রোগ রয়েছে। আমাদের দেশের দুই শতাংশ তরুণ এ রোগে আক্রান্ত। ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ মানুষ কোমর ব্যথায় ভোগেন। অথচ এ রোগের জন্য দেশে বিশেষজ্ঞ ডা. রয়েছে মাত্র ৫০ জন। এ রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে রাজধানীসহ দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের মেডিক্যাল কলেজগুলোতে পদ সৃষ্টি করলে সহজেই চিকিৎসা দেওয়া যাবে। একইসঙ্গে বাতব্যথা চিকিৎসা খরচ বেশি হওয়ায় অনেক রোগি মাঝ পথে চিকিৎসা বন্ধ করে দেয়। এজন্য ওষুধ আমদানিতে ট্যাক্স মওকুফ করা ও চিকিৎসা সেবায় প্রণোদনা দিতে হবে। এছাড়া নিয়মিত শরীর চর্চা ও ওষুধ সেবনে এ রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, সাবেক ভিসি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্স (বিআইএইচএস) অধ্যাপক ড. লিয়াকত আলী, বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল কলেজের পরিচালক (অর্থ) ও বিসিএস অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস মো. আব্দুস সোবহান, বিশিষ্ট অভিনেতা আজিজুল হাকিম, চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. জাহেদুর রহমান পান্নু, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম, অ্যাপোলো হাসপাতালের জেনারেল ম্যানেজার আখতার জামিল আহমেদ, হেলথ কেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালের সহকারী ব্যবস্থাপক সামিউল হক, প্রোডাক্ট ম্যানেজার রওশন শামা, মডার্ন ওয়ানস্টপ আর্থারাইটিস কেয়ার অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের চিকিৎসক ডা. ফাহিদ বিন নজরুল, ডা. আশিকুজ্জামান রিয়াদ, ডা. মাহফিল তানি, ডা. শিমুল রায়, ডা. ফাতেমাতুজ জোহরা, ডা. তানজিনা শারমিন রুম্পা প্রমুখ।

প্রফেসর নজরুল রিউম্যাটোলজি ফাউন্ডেশন অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট বাতের রোগীদের সচেতনতায় কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় ষষ্ঠবারের মতো বাতের রোগীদের নিয়ে এ আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে হাতে কলমে রোগীদের শারীরিক ব্যায়াম, বাতব্যথা সংক্রান্ত নানা প্রশ্নের সমাধান দেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২০
জিসিজি/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।