ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

বেড়েছে নমুনা পরীক্ষা, বাড়ছে রোগী শনাক্তের হার

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০২০
বেড়েছে নমুনা পরীক্ষা, বাড়ছে রোগী শনাক্তের হার

ঢাকা: প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় ক্রমে সক্ষমতা আরো বাড়াচ্ছে সরকার। বাড়ছে টেস্ট কিট সরবরাহ ও পরীক্ষা। এতে ফলও পাওয়া যাচ্ছে ভালো। প্রতিদিন বেশিসংখ্যক রোগী শনাক্ত হচ্ছে। আক্রান্ত ব্যক্তি দ্রুত শনাক্ত হলে তার মাধ্যমে আরো বেশি ছড়ানো রোধ করা সম্ভব।

দেশে ঢাকার ভেতরের নয়টি ও ঢাকার বাইরের আটটিসহ মোট ১৭টি প্রতিষ্ঠান করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকার ভেতরে-বাইরে মোট ভোট ১ হাজার ২৯৭টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

এরমধ্যে পরীক্ষা করা হয়েছে ১ হাজার ১৮৪টি। সর্বমোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৭ হাজার ৩৫৯টি। ৯ এপ্রিল সারাদেশে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১ হাজার ৯৭টি। এর আগে ৮ এপ্রিল নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৯৮১টি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. সানিয়া তাহমিনা বলেন, আমাদের পর্যাপ্ত টেস্ট কিট মজুদ আছে। এ পর্যন্ত টেস্ট কিট সংগ্রহ করা হয়েছে ৯২ হাজার। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিতরণ করা হয়েছে ২০ হাজার। মজুদ আছে ৭২ হাজার। সংশ্লিষ্ট ল্যাবগুলোতে পর্যাপ্ত মজুদ থাকায় নতুন কিট সরবরাহের প্রয়োজন হয়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকার ভেতরে নয়টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর) ২ হাজার ৮৯৯টি, ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথে (আইপিএইচ) ৮৯২টি, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ১৮২টি, আইসিডিডিআর,বিতে ৬১৯টি, আইদেশীতে (আইডিইএসএইচআই) ২৫৩টি, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ল্যাবরেটরি মেডিসিনে ৩১৭টি, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে ৯৯টি, আর্মড ফোর্সেস ইনস্টিটিউট অব প্যাথলজিতে ১৬৯টি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ২৯৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।

এছাড়া ঢাকার বাইরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) ৪১৪, রংপুর মেডিক্যাল কলেজে ২৬৭টি, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজে ২৯৮টি, ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজে ৩৮৩টি, সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১৫৩টি, খুলনা মেডিক্যাল কলেজে ৭৩টি, শেরে-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজে দু’টি, কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে ১০০টি পরীক্ষা করা হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভাইরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ও ফিভার ক্লিনিকের প্রধান ডা. সাইফ উল্লাহ মুন্সী বাংলানিউজকে বলেন, নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর একদিনে সর্বোচ্চ ৫৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ২৯৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এখনো হাতে ৫শ কিট আছে। এগুলো দিয়ে আরও এক সপ্তাহ নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে যাবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য ভাইরোলজি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, দেশে এখন পর্যাপ্ত কিট আছে। এর সঠিক ব্যবহার করতে পারলে কিটসের ঘাটতি হবে না। গত ৭ এপ্রিল থেকে আইইডিসিআর এর নমুনা সংগ্রহের পদ্ধতিটি সঠিক হচ্ছে। এর আগে সঠিক পদ্ধতিতে নমুনা সংগ্রহ হয়নি। তখন আইইডিসিআর এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট কয়েকটি নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হতো। তখন সার্বিক চিত্র বোঝা যেত না।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরীক্ষার সেবা সম্প্রসারিত হয়েছে। সারা দেশে টেস্ট কিট সরবরাহ বেড়েছে, পরীক্ষাও হচ্ছে বেশি। এতে কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যাও বাড়ছে। যত বেশি পরীক্ষা করা হবে রোগীর সংখ্যা তত বাড়বে। পাশাপাশি আমাদের শঙ্কাও কমবে।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই নিয়ে দেশে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৭ জনে। আর নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৯৪ জন। মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৪২৪ জন।

তিনি বলেন, ৯৪ জনের মধ্যে পুরুষ ৬৯ জন, নারী ২৫ জন। বয়স বিভাজনের ক্ষেত্রে ১০ বছরের নিচে আছে চার জন, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ৬ জন, ২১ থেকে ৩০ মধ্যে ১২ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২৯ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরে মধ্যে ১৬ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১৪ জন, বাকিরা ৬০ এর অধিক বয়সের।

তিনি বলেন, ৯৪ জনের মধ্যে ৩৭ জন ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকার। বাকিরা সবাই ঢাকার বাইরের। এরমধ্যে নারায়ণগঞ্জের রয়েছে ১৬ জন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০২০
পিএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।