ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

৫ দিনেই ৬০ শতাংশের বেশি কাজ সম্পন্ন বসুন্ধরা হাসপাতালের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০২০
৫ দিনেই ৬০ শতাংশের বেশি কাজ সম্পন্ন বসুন্ধরা হাসপাতালের

ঢাকা: করোনা ভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্তদের চিকিৎসায় ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) অস্থায়ী হাসপাতাল নির্মাণের কাজ নির্ধারিত সময়ের আগে সম্পন্ন হবে। স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও বসুন্ধরা গ্রুপের উদ্যোগে দিনরাত সমানতালে কাজ চলছে। ১৫ দিনের মধ্যে হাসপাতালে রূপ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ১২ এপ্রিল কাজ শুরু করে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। মাত্র ৫ দিনেই কাজের ৬০ শতাংশের বেশি সম্পন্ন হয়েছে।

‘দেশ ও মানুষের কল্যাণে’ এই স্লোগানের আলোয় পথচলা বসুন্ধরা গ্রুপ করোনা ভাইরাসের এই দুর্যোগকালেও দেশ ও জাতির কল্যাণে এগিয়ে এসেছে। দেশে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী বাড়তে থাকায় সম্প্রতি সরকারকে আইসিসিবিতে পাঁচ হাজার শয্যার একটি অস্থায়ী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান।



বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) নির্মাণাধীন হাসপাতাল চত্বরে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আবদুল হামিদ কাজের অগ্রগতি ও নির্ধারিত সময়ের আগেই সম্পন্ন করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

..এসময় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আব্দুল হামিদ বলেন, বসুন্ধরার কনভেনশন সেন্টারে ২০০০ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণে বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে। আমরা বসুন্ধরা গ্রুপের কাছে কৃতজ্ঞ যে তারা এখানে দিনরাত কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছে। স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সার্বক্ষণিক কাজের খোঁজ-খবর নেন। দু-একদিন পরপর তিনি এটি পরির্দশন করেন। ট্রেড সেন্টারে হাসপাতালের কাজ ৬০ শতাংশের বেশি সম্পন্ন হয়েছে। ২২ এপ্রিলের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে রাতদিন সমানতালে কাজ চলছে।

...আব্দুল হামিদ বলেন, সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য সাবস্টেশন চলে এসেছে। জেনারেটর আসবে ১৭ এপ্রিল। আজ থেকে প্রতিদিনই কিছু কিছু করে বেড আসবে। পরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে বুঝিয়ে দেওয়ার পরপরই কার্যক্রম শুরু করতে পারবে। দেশের বিভিন্ন জেলা লকডাউন, দোকানপাট বন্ধ। তারপরেও মালপত্র নিয়ে আসা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ। আমাদের প্রচেষ্টায় একটি জীবনও রক্ষা করা গেলে সেটাই আমাদের চরম সার্থকতা।  

...ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা এমএম জসীম উদ্দিন বলেন, দেশের সবচেয়ে একক বড় জায়গা দেড় লাখ স্কয়ার ফুটের সবচেয়ে ট্রেড সেন্টারটি হাসপাতালে রূপ দিয়ে সব ধরনের উপকরণ ও সরঞ্জাম চলে এসেছে। এখন শুধু স্থাপন করার কাজ চলছে। বেড বসানোর প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর যেভোবে কাজ করছে তাতে ২০-২১ তারিখে বসানোর কাজ শুরু হবে। দু-একদিন পরে বেডগুলো সংযুক্ত করা সম্পন্ন হবে। আমি আশা করছি ২৪-২৫ তারিখের দিকে সেবা কার্যক্রম শুরু হবে। সেই প্রস্তুতি নিয়েই কাজ এগিয়ে যাচ্ছে।

৭১ বেডের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) বিষয়ে এমএম জসীম উদ্দিন বলেন, কনভেশন হল-৪ এ আইসিইউ বেড বসানোর কার্যক্রম বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে। আইসিইউ ইউনিটের জন্য যেসব কারিগরি বিষয় ছিল, বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে বুধবার সমাধান করে দেওয়া হয়েছে। বিদেশ থেকে আমদানি করা সরঞ্জামগুলো কার্গো প্লেনে দেশের পথে।

তিনি আরও বলেন, কনভেশন সিটি একটি শতভাগ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। এখান থেকে কোম্পানির অনেক বড় আয় হতো। সেটা বন্ধ করে চলমান করোনা ভাইরাসের চিকিৎসায় ব্যবহারের জন্য সরকারকে দেওয়া হয়েছে। আসলেই সেবা ও ত্যাগের মনোভাব না থাকলে এ ধরনের কাজে অংশ নেওয়া যায় না। দেশের মানুষ যখন বিপদে পড়েছে তখন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান স্যার ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মহৎ হৃদয়ের পরিচয় দিয়েছেন। একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে বসুন্ধরা গ্রুপ যে উদ্যোগ নিয়েছে সেটা সেবার দৃষ্টান্ত।  

বসুন্ধরা গ্রুপের প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির ভিত্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সেনাবাহিনীর একটি দল পরির্দশন করে পরবর্তীসময়ে এটাকে অস্থায়ী হাসপাতাল বা আইসোলেশন সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। কোভিড-১৯ বিপর্যয় শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং সরকারের যতদিন ব্যবহারের প্রয়োজন শেষ না হবে ততদিন আইসিসিবিকে ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়েছে।

প্রাথমিকভাবে এখানে দুই হাজার ৭১ শয্যার অস্থায়ী হাসপাতাল তৈরি করার জন্য কাজ শুরু করেছে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। তবে প্রয়োজন দেখা দিলে এটিকে পাঁচ হাজার শয্যায় রূপান্তর করা যাবে। এ কার্যক্রম শুরু হয়ে গেলে বাংলাদেশে এটিই হবে কোভিড-১৯ রোগীদের জন্য বৃহত্তম সমন্বিত স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০২০
এসই/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।