ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

এপ্রিলের শেষে চিকিৎসা শুরু হবে বসুন্ধরার করোনা হাসপাতালে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০২০
এপ্রিলের শেষে চিকিৎসা শুরু হবে বসুন্ধরার করোনা হাসপাতালে

ঢাকা: ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) নির্মাণাধীন দেশের বৃহত্তম অস্থায়ী করোনা আইসোলেশন সেন্টারের (হাসপাতাল) নির্মাণ কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে রাতদিন কাজ চলছে। দেড় লাখ বর্গফুটের এক্সপো ট্রেড সেন্টারটির দু’টি জোনে ফ্লোরম্যাট বসানোর কাজ শেষ। শুক্রবার আরও দু’টি জোনে ফ্লোরম্যাট বসানো হবে।

এরপর রোগীদের বেড, ফার্নিচার, চিকিৎসক ও নার্সদের বসার কক্ষগুলো সেট করা হবে। এসব কাজ শেষ হলেই করোনা ভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসাকেন্দ্রে রূপ নেবে দেশের বৃহত্তম কনভেনশন সেন্টার আইসিসিবি।

...কোভিড-১৯ বিপর্যয় শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং সরকারের যতদিন ব্যবহারের প্রয়োজন শেষ না হবে ততদিন আইসিসিবিকে ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়েছে। আর ১৫ দিনের মধ্যে আইসিসিবিকে পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালে রূপ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ১২ এপ্রিল কাজ শুরু করেছে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর।

বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার (আইসিসিবি) প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা এমএম জসীম উদ্দিন বলেন, দু’টি ব্লকে ৫শটি বেড বসানোর কাজ শেষ হয়ে গেছে। শুক্রবার আরও দুটি ব্লকে ৫শটি বেড বসানো হবে। ১৫ দিনের মধ্যে কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ১২ এপ্রিল কাজ শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর, স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বসুন্ধরা গ্রুপ সমন্ধয় করে কাজ করছে।

...তিনি আরও বলেন, আমরা এই পর্যন্ত আসতে পেরে সন্তুষ্ট। কারণ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ১৫০টি পাকা টয়লেট নির্মাণ করা খুব দুরূহ কাজ। আমাদের এই টেড্র সেন্টারটি প্রস্তুত থাকার কারণে বসুন্ধরা গ্রুপ এত বড় সাপোর্ট দিতে পেরেছে। আমাদের আরও দু-চার দিন সময় লাগবে। কাজের অগ্রগতিতে আমরা আশা করছি- এপ্রিলের শেষের দিকে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হবে।

জসীম উদ্দিন বলেন, মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক হাসপাতালের কাজ শতভাগ শেষ হওয়ার পরে রোগী পরিষেবার কাজ শুরু হবে। এখানে যেহেতু ভাইরাস চিকিৎসার কাজ হবে সেহেতু চিকিৎসা চলাকালীন কোনো উন্নয়ন কাজ করা যাবে না। আমাদের প্রস্তুতি একেবারে দ্বারপ্রান্তে। সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা এখানে চলে এসেছে। এখন শুধু অ্যাসমবেল করার কাজ হচ্ছে। ২৭-২৮ তারিখের দিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে উদ্বোধনের সময় নির্ধারণ করে দেবেন, তখন থেকেই কার্যক্রম শুরু হবে।

...তিনি আরও বলেন, এখন আসবাবপত্র, বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন, এয়ারকন্ডিশনিং ও অন্য পরিষেবার কজ চলছে। ট্রেড সেন্টারটি ওপেন ফ্লোর হওয়ার কারণে একটি ব্লকে দাড়িয়ে পুরো এলাকা দেখা যায়। সেখানে চিকিৎসক ও নার্সরা এক জায়গায় দাঁড়িয়ে দেখতে পারবেন কোনো রোগীর অবস্থা খারাপ হচ্ছে কি-না। এজন্য খোলা জায়গাটিতে বেশি প্রাধান্য দিয়েছেন।

জসীম উদ্দিন দুর্যোগকালী এত দ্রুত যত্ন সহকারে কাজ করা সম্ভব না। স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর সেটা করে যাচ্ছে। এখানে যেসব সরঞ্জাম ব্যবহার করা হচ্ছে, সেগুলো দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যাবে। সরকারের মূল পরিকল্পনা ছিল সেবা দেওয়া, সে পরিকল্পনা বাস্তবে রূপ নিতে যাচ্ছে। দেশে এতবড় একটি জায়গা ছিল বলেই বসুন্ধরা গ্রুপ সরকারকে দ্রুত দিতে পেরেছে। বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান যেদিন ঘোষণা দিয়েছেন, তার পরদিন থেকেই এখানে বাণিজ্যিক কার্যক্রম নেই। স্বাস্থ্য অধিদফতর যেভাবে বলছে আইসিসিবির দেড়শ কর্মী সেভাবে কাজ করছে।

করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা দিতে সরকারকে আইসিসিবিতে ৫ হাজার শয্যার একটি সমন্বিত অস্থায়ী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মতি দিলে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল পরিদর্শন করে হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ নেয়।  

যাচাই-বাছাই শেষে সেখানে ২ হাজার ১৩ শয্যার হাসপাতাল ও ৭১ শয্যার আইসিইউ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর। আইসিসিবির সুবিশাল চারটি কনভেনশন হল ও একটি এক্সপো ট্রেড সেন্টারে দেশের অন্যতম বৃহৎ এ হাসপাতালটির নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে সরকারের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০২০
এসই/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।