ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

করোনায় বেশি আক্রান্ত তরুণরা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৩ ঘণ্টা, জুন ৫, ২০২০
করোনায় বেশি আক্রান্ত তরুণরা

ঢাকা: শুরু থেকেই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে ছিলেন ষাটোর্ধ্বরা। বিশ্বের প্রায় সব দেশেই সেটি হয়েছে। তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আক্রান্ত বেশি হচ্ছেন ২১ থেকে ৪০ বছর বয়সী তরুণরা। আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় ৫৫ শতাংশই এ বয়সীরা। তবে মারা যাচ্ছেন বেশি ষাটোর্ধ্বরা।

শুক্রবার (০৫ জুন) রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইডিসিআর) ওয়েবসাইট দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

৮ মার্চ বাংলাদেশে একসঙ্গে তিন জন করোনা রোগীর তথ্য প্রকাশ করে আইডিসিআর।

এরপর শুক্রবার গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে দুই হাজার ২২৮ জনসহ ৯০ দিনে বাংলাদেশের মোট ৬০ হাজার ৩৯১ জন করোনা রোগীর শনাক্ত হয়েছে। যার মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টার ৬৪৩ জনসহ মোট সুস্থ হয়েছেন ১২ হাজার ৮০৪ জন। ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৩০ জন। অদ্যাবধি মারা গেছেন ৮১১ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৪ হাজার ৮৮টি। মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে তিন লাখ ৭২ হাজার ২৭৫টি।

করোনায় আক্রান্ত বেশি তরুণরা।  সূত্র: আইইডিসিআরআইডিসিআরের তথ্য অনুযায়ী, এক থেকে ১০ বছর বয়সীদের মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন তিন শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছর বয়সীদের মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন সাত শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ২৭ দশমিক ৬০ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সীদের মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ২৭ দশমিক ১০ শতাংশ। ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সীদের আক্রান্ত হয়েছেন মধ্যে ১৭ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সীদের মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ১১ শতাংশ। ষাটোর্ধ্ব বয়সীদের মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন সাত শতাংশ।

এর মধ্যে এক থেকে ১০ বছর বয়সীদের মধ্যে মারা গেছেন ০ দশমিক ৮২ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছর বয়সীদের মারা গেছেন এক দশমিক ৪৯ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের মারা গেছেন তিন দশমিক ৪০ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সীদের মধ্যে মারা গেছেন আট দশমিক ২৯ শতাংশ। ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সীদের মধ্যে মারা গেছেন ১৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সীদের মধ্যে মারা গেছেন ২৯ দশমিক ৬২ শতাংশ। ষাটোর্ধ্ব বয়সীদের মধ্যে মারা গেছেন ৩৯ শতাংশ।

করোনায় মৃত্যুর হার।  সূত্র: আইইডিসিআরদেশে সব বয়সের মানুষের করোনায় আক্রান্তের কারণ জানতে চাইলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. মো. মোকতেল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, উন্নত দেশগুলোর মানুষ পুষ্টিকর ও ভেজালমুক্ত খাবার খান। এর ফলে তাদের অপুষ্টিজনিত রোগ থাকে না। একই কারণে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও আমাদের দেশের মানুষের থেকে বেশি। আমাদের দেশে পুষ্টির অভাব রয়েছে। বাংলাদেশে অপুষ্টিজনিত সমস্যা বেশি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কম। এছাড়া উল্টো-পাল্টা ওষুধ সেবনের ফলেও আমাদের দেশের মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।

তিনি বলেন, মানুষের শরীরে যে বিশেষ মেকানিজম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, এটা যাদের কম, তাদের কোনো রোগ আক্রমণ করলে তারা সহজেই জীবাণুর কাছে পরাভূত হয়ে যায়। শত্রু সেখানেই আঘাত করে, যেখানে দুর্বল পায়। পাশাপাশি যে বয়সের মানুষ হোক না কেন তার মধ্যে যদি অন্যান্য অসুখ থাকে সে সহজেই রোগের কাছে পরাজয় বরণ করে নেয়। কম বয়সের মানুষের শরীর রোগ-জীবাণুর সঙ্গে যুদ্ধ করতে অভ্যস্ত। কিন্তু আমাদের দেশে এ ফর্মুলা কাজ করছে না। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যাদের কম, তাদের শরীরে করোনা ভাইরাস প্রবেশ করলে সহজেই দুর্বল হয়ে যায়। যার ফলে আমাদের দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যায় সব বয়সের মানুষ দেখা যাচ্ছে। দেশের কম বয়সীরাও করোনা ভাইরাসের চরম ঝুঁকিতে রয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০২০
ডিএন/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।