ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

ঢামেকে ১৩০ জনের প্লাজমা সংগ্রহ, ৫০ রোগীর শরীরে প্রয়োগ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩১ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২০
ঢামেকে ১৩০ জনের প্লাজমা সংগ্রহ, ৫০ রোগীর শরীরে প্রয়োগ ঢামেক

ঢাকা: ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে এখন পর্যন্ত করোনাজয়ী ১৩০ জনের শরীর থেকে প্লাজমা সংগ্রহ করা হয়েছে। এরই মধ্যে সংগৃহীত এ প্লাজমার একটি অংশ ঢামেকে ভর্তি ৫০ জন করোনা আক্রান্তের শরীরে প্রয়োগ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

 

সোমবার (২৭জুলাই) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন বাংলানিউজকে এ তথ্য জানান।

পরিচালক বলেন, এ পর্যন্ত কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হওয়া ১৩০ জন রোগী স্বেচ্ছায় প্লাজমা দিয়েছেন। এর মধ্যে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি ৫০ রোগীর শরীরে প্লাজমা দেওয়া হয়েছে। বাকিগুলো বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের মুমূর্ষু রোগীদের দেওয়া হয়েছে। ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, চিকিৎসক, নার্সসহ অনেকেই স্বেচ্ছায় প্লাজমা দিয়েছেন। এ পদ্ধতিতে অনেক রোগী সুস্থ হয়েছেন।

গত ১৬ মে প্রথমবারের মতো তিন করোনাজয়ী চিকিৎসকের শরীর থেকে প্লাজমা সংগ্রহ করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন এর উদ্বোধন করেন।

প্লাজমা সংগ্রহ প্রসঙ্গে ঢামেক পরিচালক বলেন, সারা বিশ্ব করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। আমরাও আক্রান্ত। এ পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্লাজমা নেওয়া শুরু হয়।  আমরা তিনজন করোনাজয়ী  চিকিৎসক দিয়ে শুরু করেছিলাম প্লাজমা সংগ্রহের কার্যক্রম। পর্যায়ক্রমে অনেকেই প্লাজমা দিয়েছেন, এখনও দিচ্ছেন।

এর আগে প্লাজমা থেরাপির সুফল সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রয়োজন বলে অভিমত দিয়েছিলেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের  অধ্যাপক ও প্লাজমা থেরাপি সাব-কমিটির প্রধান অধ্যাপক ডা. এম এ খান।

তিনি বলেন, আমরা ন্যাশনাল এক্সপান্টেড অ্যাক্সেস প্রোগ্রামের মাধ্যমে প্লাজমা থেরাপির সুফল বা এর কার্যক্রম সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিতে পারি। এর জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে একটি পরিকল্পনা নিতে হবে। এই পরিকল্পনার মাধ্যমে ব্লাড ট্রান্সফিউশন বিভাগ প্লাজমা সংগ্রহ করবে। তারা এসোপি তৈরি করবে এবং এসোপির মাধ্যমে কাদের থেকে প্লাজমা সংগ্রহ করা হব, কতখানি প্লাজমা কীভাবে সংগ্রহ করা হবে, কি পরিমাণে তা অন্যের শরীরে প্রয়োগ করা হবে, এগুলো লিপিবদ্ধ থাকবে। প্লাজমা প্রয়োগ করার আগে অবশ্যই অ্যান্টিবডি টাইটার করতে হবে। কেননা এই প্লাজম দেওয়ার জন্য এফডিএ একটি অ্যাপ্রোভাল দিয়েছে, আইএনডি অর্থাৎ ইনভেস্টিগেশনাল নিউ ড্রাগস হিসেবে।  

এ চিকিৎসক আরো জানান, এই পরিকল্পনার মাধ্যমে যদি আমরা প্লাজমা ডিস্ট্রিবিউশন করি তাহলে একটা তালিকা থাকবে, কাদেরকে প্লাজমা দেওয়া হচ্ছে, এবং কী পরিমাণ সুফল পাওয়া যাচ্ছে, সেই ডাটাগুলোর সংরক্ষণ থাকবে। করোনা থেকে সেরে ওঠা রোগীর কাছ থেকে যে প্লাজমা নেওয়া হয়,  তার মধ্যে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিবডি থাকে, যা অন্য করোনা আক্রান্ত রোগীর শরীরে গিয়ে ভাইরাসের সঙ্গে যুদ্ধ করে তাকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়। ভাইরাসটা তখন আর কোষের মধ্যে ঢুকতে পারে না। দেখা গিয়েছে, যদি কোনো করোনা রোগী আক্রান্ত হওয়ার প্রথম সপ্তাহের মধ্যে আমরা এই প্লাজমা থেরাপি দিতে পারি তাহলে ভালো ফল পাওয়া যায়। আর করোনা রোগী যখন আইসিইউতে চলে যায় অথবা ভেন্টিলিটরে থাকে, তখন তার লাংস ড্যামেজ হয়ে যায়। তখনই প্লাজমা থেরাপি দিলে কাঙ্ক্ষিত ফল নাও পাওয়া যেতে পারে। এ জন্য প্লাজমা থেরাপির জন্য টাইমিংটা অনেক বেশি প্রয়োজন। কখন দেবো, কাকে দেবো এটি খুব প্রয়োজনীয় বিষয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৮ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২০ 
এজেডএস/এইচজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।