ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

টেস্ট যত বাড়বে, করোনা ততই নিয়ন্ত্রণে আসবে: ডা. মুশতাক

রেজাউল করিম রাজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২০
টেস্ট যত বাড়বে, করোনা ততই নিয়ন্ত্রণে আসবে: ডা. মুশতাক রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ও সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন।

ঢাকা: করোনা ভাইরাস শনাক্তের জন্য যত বেশি টেস্ট করা হবে, ততই মহামারি নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে মন্তব্য করেছেন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ও সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন।

শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বাংলানিউজকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, শত ভাগ মানুষের করোনা ভাইরাসের পরীক্ষা করার দরকার নেই। তবে রোগ তাত্ত্বিক চিত্র বোঝতে হলে সার্ভিলেন্স এর নিয়ম অনুসরণ করা হচ্ছে কিনা সেটা মুখ্য বিষয়। সার্ভিলেন্সের নিয়ম অনুসারে সকল অঞ্চল থেকে স্যাম্পল আসছে কিনা সেটা দেখতে হবে। ৬৪ জেলা থেকেই বর্তমানে আমাদের স্যাম্পল পরীক্ষা করা হচ্ছে। করোনা ভাইরাসের লক্ষণ রয়েছে এমন মানুষদের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করতে হবে। এর মধ্যে যাদের করোনা ভাইরাস শনাক্ত হবে, কন্ট্রাক্ট ট্রেসিং করে তাদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদেরও টেস্ট করতে হবে। বর্তমানে আমাদের কন্ট্রাক্ট টেস্টিং সব জায়গায় সমান ভাবে হচ্ছে না। এ বিষয়ে আমাদের কিছুটা ঘাটতি রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীদের উচিত গ্রাম এবং শহরের বিভিন্ন কমিউনিটিতে গিয়ে যাদের করোনার লক্ষণ রয়েছে, তাদের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা। কিন্তু এটা করা হচ্ছে না। রোগীরা নিজে থেকেই পরীক্ষা করতে আসছে। এটা হচ্ছে প্যাসিভ সার্ভিলেন্স। কিন্তু স্বাস্থ্য বিভাগ রোগীর কাছে যাচ্ছে না করোনা ভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ করতে। অর্থাৎ একটিভ সার্ভিলেন্স করা হচ্ছে না। একটিভ সার্ভিলেন্স এবং প্যাসিভ সার্ভিলেন্স যোগ হলে ভালো হয়।

'আমাদের কাছে যে পরিমাণ ডাটা রয়েছে তাতে করোনা ভাইরাসের বিস্তার বোঝার জন্য যথেষ্ট। কিন্তু মহামারি রোধে এটা যথেষ্ট নয়। যত বেশি রোগী শনাক্ত করা যাবে। ততবেশি রোগীকে আইসোলেটেড করা যাবে। ততই করোনা নিয়ন্ত্রণ হবে। কিন্তু একটি বড় সংখ্যক রোগী যদি শনাক্তের বাইরে থেকে যায় তাহলে মহামারি কমানো সম্ভব নয়। এজন্য করোনা টেস্ট এর পরিমাণ যতটা সম্ভব বাড়ানো উচিত। সুতরাং টেস্টের সংখ্যা যত বেশি বাড়বে, আমরা ততই মহামারি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো। ’

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাবেক এই কর্মকর্তা আরও বলেন, আমাদের করোনা বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির বিশেষজ্ঞরাও বলেছেন যদি আরটি পিসিআর এ টেস্টের সংখ্যা বাড়ানো সম্ভব না হয়, যেখানে আরটি পিসিআরের ব্যবস্থা নাই, সেখানে প্রয়োজনে অ্যান্টিজেন টেস্ট করা উচিত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও বর্তমানে কিছু শর্তসাপেক্ষে অ্যান্টিজেন টেস্টের অনুমতি দিয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রীও অ্যান্টিজেন টেস্টের কথা বলেছে। তবে কোনো এক জটিলতায় এটা এখনো চালু হচ্ছে না। আরটি পিসিআরের পাশাপাশি প্রয়োজনে এন্টিজেন টেস্ট চালু করা উচিত। তাহলে আরও বেশি রোগী শনাক্ত করা সম্ভব হবে। যত দ্রুত রোগীকে শনাক্ত করে আইসোলেটেড করা সম্ভব হবে, ততোই তাড়াতাড়ি আমরা করোনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো। পাশাপাশি আমাদের সর্বক্ষেত্রেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। মাস্ক পরতে হবে, নিয়মিত হাত সাবান দিয়ে হাত ধুতে এবং নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২০
আরকেআর/এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।