ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যকর্মীদের চাকরি রাজস্ব করণের দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১, ২০২০
কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যকর্মীদের চাকরি রাজস্ব করণের দাবি

ঢাকা: বেতন বাড়ানো ও চাকরি রাজস্ব করণের দাবি জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ারে (সিবিএইচসি) কর্মরত কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারদের (সিএইচসিপি) সংগঠন বাংলাদেশ সিএইচসিপি অ্যাসোসিয়েশন।

রোববার (১ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ দাবি জানানো হয়।


সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম মহাসচিব মো. মাসুদুর রহমান জিলাদার।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কমিউনিটি ক্লিনিকে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারা ২০১১ সাল থেকে কর্মরত আছেন। সেই থেকে এ প্রতিষ্ঠানের হয়ে তারা সব কাজ করে যাচ্ছেন। সিএইচসিপিদের নিরলস প্রচেষ্টায় দেশে মা ও শিশু মৃত্যুর হার কমেছে। এছাড়া তারা নবজাতকের চিকিৎসা, স্বাস্থ্যশিক্ষা, প্রাথমিক চিকিৎসা ও জন্মনিয়ন্ত্রণে পরিবার পরিকল্পনাসেবা দিয়ে যাচ্ছে।

জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান জরিপের কথা উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাড়ির পাশের কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে ওষুধ আর পরামর্শ নিয়ে ৮০ শতাংশ মানুষ সন্তুষ্ট। জাতীয় রোগ প্রতিরোধে সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) জরিপে উঠে এসেছে কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবা নিয়ে ৯৮ শতাংশ মানুষ সন্তুষ্ট।

তারা জানায়, কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যকর্মী (সিএইচসিপি) হিসেবে শুরুতে ১৩ হাজার ৫০০ জন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার নিয়োগ দেওয়া হলেও বর্তমানে প্রায় ১৪ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী কর্মরত আছেন। যার মধ্যে চার হাজার ৫০০ জনের অধিক মুক্তিযোদ্ধা সন্তান। এদের মধ্যে ৬০ শতাংশ নারী স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন।

অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম মহাসচিব মো. মাসুদুর রহমান জিলাদার জানান, ২০১১ সালে চাকরিতে যোগদানের পর থেকে অদ্যাবধি আমরা অত্যন্ত সততা, একাগ্রতা ও বিচক্ষণতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় এখন পর্যন্ত আমাদের চাকরি রাজস্ব করা হয়নি। এমনকি নয় বছর চাকরি করলেও কোনো ইনক্রিমেন্ট পাইনি। আমাদের কোনো ভবিষ্যৎ তহবিল নেই। আমাদের কোনো সিএইচসিপির সদস্য অসুস্থ হলে চিকিৎসার খরচ বাবদ কোনো সুযোগ সুবিধা পাচ্ছি না‌।

তিনি জানান, চাকরিজনিত দুশ্চিন্তা ও দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত আমাদের ৫৬ জন সহকর্মী মৃত্যুবরণ করেছে। এরমধ্যে চারজন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। পাঁচ শতাধিক সহকর্মী বৈশ্বিক মহামারি করোনা মোকাবিলায় দায়িত্ব পালনকালে করোনা পজিটিভ হলেও কোনো ক্ষতিপূরণ কিংবা কোনো প্রণোদনা পাইনি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, সিএইচসিপি স্বাস্থ্যকর্মীদের কোনো অর্জিত ছুটি নেই। প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেই। নিয়মিত মাসিক বেতনও হচ্ছে না। এমন অবস্থা চলতে থাকলে অচিরেই কমিউনিটি ক্লিনিক তার জৌলুস হারাবে। সঙ্গে হারাবে এক ঝাঁক দক্ষ জনবল।

২০১১ সালে সিএইচসিপি মাসিক বেতন সর্বসাকুল্যে নয় হাজার ৩৫০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে সত্য যে, এ স্বাস্থ্যকর্মীদের বেতন ৮৫০ টাকা কমিয়ে আট হাজার ৫০০ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। এর কারণ জানতে চাইলে কমিউনিটি ক্লিনিকের প্রধান কার্যালয় থেকে বলা হয়। চাকরি স্থায়ীকরণের প্রক্রিয়ার জন্য বেতন ১৪তম গ্রেড নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্ধৃতি দিয়ে মাসুদুর রহমান জিলাদার আরও জানান, ‘তিনি বলেছিলেন, বেসরকারি উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহ করে তা কমিউনিটি ক্লিনিকের টেকসই উন্নয়ন ও জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য ট্রাস্ট গঠনের নির্দেশনা দেন। ’ কিন্তু দুঃখের বিষয় এর প্রতিফলন এখনো হয়নি।

তিনি জানান, আমরা হাইকোর্টে একটি রিট করেছিলাম কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যকর্মীদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের জন্য আমরা রায় পেয়েছি। কিন্তু এর বাস্তবায়ন এখনো হয়নি। আমরা সরকারের সিদ্ধান্তকে সম্মান প্রদর্শন করি। কমিউনিটি ক্লিনিকে জনবলকে রাজস্ব খাতে রেখে কমিউনিটি ক্লিনিকের আনুষঙ্গিক বিষয়াবলীকে সরকারের গঠন করা ট্রাস্টে ন্যাস্ত করা হোক।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মো. ফখরুল ইসলাম, মো. সুমন মাদবর, শেখ মহিবুল হাসান, মো. কাইয়ুম হোসেন প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০২০
পিএস/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।