ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

জিওবি বরাদ্দের অতিরিক্ত ৪৯৫১ কোটি টাকা চায় স্বাস্থ্য বিভাগ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৯ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০২১
জিওবি বরাদ্দের অতিরিক্ত ৪৯৫১ কোটি টাকা চায় স্বাস্থ্য বিভাগ

ঢাকা: স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উন্নয়ন ব্যয়ের সিলিং ১০ হাজার ৮৫৮ দশমিক ১৭ কোটি টাকা জিওবি বাবদ বরাদ্দের অতিরিক্ত আরও ৪ হাজার ৯৫১ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা চেয়েছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। করোনা নিয়ন্ত্রণ, অসংক্রামক রোগ নিরামময়, ওষুধ, উন্নয়ন খাতের জনবলের বেতন-ভাতার জন্য অতিরিক্ত এ অর্থ চাওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি অতিরিক্ত বরাদ্দ চেয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব সেবা বিভাগের সচিব আবদুল মান্নান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি চিঠি অর্থ মন্ত্রণালয়ে সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদারের কাছে পাঠানো হয়েছে।

অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ চেয়ে চিঠিতে বলা হয়েছে, অনুমোদিত চতুর্থ সেক্টর কর্মসূচি এইচপিএনএসপিভুক্ত অপারেশনাল প্ল্যানের মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্যসেবা, ইপিআই, সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ নিরাময়-নিয়ন্ত্রণ, ডায়েট, এমএসআর, ওষুধ ও উন্নয়ন খাতে নিয়োজিত জনবলের (সিএইচসিপিসহ) বেতন-ভাতা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়ে থাকে। উল্লিখিত এসব কার্যক্রম যথাযথভাবে বাস্তবায়ন ও চলমান অনুমোদিত প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়নের জন্য সিলিংয়ের আওতায় প্রদত্ত জিওবি বরাদ্দের অতিরিক্ত বরাদ্দ প্রয়োজন।  

চিঠিতে বলা হয়েছে, অনুমোদিত ও পি/প্রকল্পের (২১টি ওপি ও ২৫টি চলমান প্রকল্প) জন্য মোট ১০ হাজার ৭২৮ দশমিক ৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ১৫ হাজার ৩৩১ দশমিক ৫৭ কোটি টাকা এবং অননুমোদিত নতুন ২০টি প্রকল্পের জন্য ১২৯ দশমিক ৮২ কোটি টাকা থাকলেও ৪৭৭ দশমিক ৯৯ কোটি টাকার চাহিদার কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। এক্ষেত্রে অনুমোদিত ও পি/প্রকল্পের (২১টি ওপি ও ২৫টি চলমান প্রকল্প) জন্য জিওবি খাতে অতিরিক্ত চাহিদা হিসাবে ৪ হাজার ৬৫২ দশমিক ২৯ কোটি টাকা এবং অননুমোদিত নতুন ২০টি প্রকল্পের জন্য ২৯৯ দশমিক ১০ কোটি টাকাসহ ৪ হাজার ৯৫১ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা চেয়েছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ।  

সে হিসাবে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উন্নয়ন ব্যয়ের সিলিং ১০ হাজার ৮৫৮ দশমিক ১৭ কোটি টাকার অতিরিক্ত জিওবি বাবদ ৪ হাজার ৯৫১ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা বৃদ্ধি করে আগামী অর্থবছরের (২০২১-২২) জন্য মোট ১৫ হাজার ৮০৯ দশমিক ৫৬ কোটি টাকা চেয়েছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ।  

এদিকে আগামী অর্থবছরে সমাপ্তির জন্য নির্ধারিত ১১টি প্রকল্পের প্রয়োজনীয় বরাদ্দ নিশ্চিতকরণসহ চলমান অগ্রাধিকার প্রকল্প-অপারেশনাল প্ল্যানগুলোর অনুকূলে নূন্যতম বরাদ্দ নিশ্চিত করা জরুরি। এমতাবস্থায় সিলিংয়ে প্রদত্ত জিওবি বাবদ বরাদ্দের অতিরিক্ত ৪ হাজার ৬৫১ দশমিক ৫৯ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রয়োজন।

এছাড়া পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা এবং এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের নিমিত্ত বাস্তবায়নাধীন চতুর্থ সেক্টর কর্মসূচির পরিকল্পিত কার্যক্রম ও অনুমোদিত প্রকল্পসমূহ যথাযথ বাস্তবায়নের জন্য ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের এমটিবিএফ’র আওতায় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উন্নয়ন ব্যয়ের সিলিং ১০ হাজার ৮৫৮ দশমিক ১৭ কোটি টাকার অতিরিক্ত জিওবি বাবদ ৪ হাজার ৯৫১ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা বৃদ্ধি করে মোট ১৫ হাজার ৮০৯ দশমিক ৫৬ কোটি টাকায় পুনঃনির্ধারণের বিষয়ে অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিবের ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপ চেয়েছেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব।

চিঠিতে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের আওতায় জানুয়ারি ২০১৭, জুন ২০২২ মেয়াদে গৃহীত চতুর্থ সেক্টর কর্মসূচি হেলথ, পপুলেশন অ্যান্ড নিউট্রিশন সেক্টর প্রোগ্রামের (এইচপিএনএসপি) অন্তর্ভুক্ত ২১টি (নতুন দু’টি ওপিসহ) অপারেশনাল প্ল্যান (ওপি) ও ২৫টি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে এবং ২০টি নতুন প্রকল্প অনুমোদনের জন্য প্রক্রিয়াধীন আছে। আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরে এমটিবিএফ’র আওতায় অর্থ বিভাগ থেকে জারিকৃত বাজেট পরিপত্র-১ এর সিলিংয়ের সংস্থান অনুযায়ী স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের বিএমসি কর্তৃক উন্নয়ন ব্যয় বাবদ ১০ হাজার ৮৫৮ দশমিক ১৭ কোটি টাকার সিলিং নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থ বিভাগ প্রদত্ত সিলিংয়ের মধ্যে প্রকল্প সাহায্য বাবদ ৭ হাজার ৪৬২ দশমিক ৮৩ কোটি টাকা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ফলে নির্ধারিত সিলিংয়ে উন্নয়ন অংশে জিওবি বাবদ পাওয়া গেছে ৩ হাজার ৩৯৫ দশমিক ৩৪ কোটি টাকা।

এতে আরও বলা হয়েছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উন্নয়ন সিলিং ছিল ৯ হাজার ৯৩৬ দশমিক ৮০ কোটি টাকা, যার মধ্যে জিওবি ৭ হাজার ১৮৬ দশমিক ১১ কোটি টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ২ হাজার ৭৫০ দশমিক ৬৯ কোটি টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরে বিশেষ উন্নয়ন সহায়তাসহ উন্নয়ন সিলিং ছিল ১০ হাজার ০৫২ দশমিক ০৯ কোটি টাকা, যার মধ্যে জিওবি ৭ হাজার ০৮৩ দশমিক ১১ কোটি টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ৩ হাজার ২৬৮ দশমিক ৯৮ কোটি টাকা।

বিশ্বব্যাপী করোনা পরিস্থিতির কারণে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ‘কোভিড-১৯ ইমারজেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস’ ওএশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিপি) অর্থায়নে ‘কোভিড-১৯ রেসপন্স ইমারজেন্সি অ্যাসিসটেন্টস’ শীর্ষক প্রকল্প স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের আওতায় বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পটির আওতায় ভ্যাকসিন ক্রয় বাবদ ৪ হাজার ২৩৬ দশমিক ৪৩ কোটি টাকা (প্রকল্প সাহায্য) বরাদ্দ প্রয়োজনীয় রয়েছে। ফলে প্রকল্প সাহায্যের বরাদ্দ চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া চতুর্থ এইচপিএনএসপিভুক্ত ‘হেলথ অ্যান্ড জেন্ডার সাপোর্ট ইন কক্সবাজার ডিস্ট্রিট (এইচজিএস-সিএক্সবি)’ ও ‘উপজেলা হেলথ কেয়ার (ইউএইচসি)’ শীর্ষক নতুন দু’টি ওপি সম্প্রতি অনুমোদিত হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০২১
জিসিজি/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।