ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

নারায়ণগঞ্জে সেন্ট্রাল অক্সিজেন নেই খানপুরে, নষ্ট ২ আইসিইউ মনিটর

মাহাফুজুর রহমান পারভেজ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০২১
নারায়ণগঞ্জে সেন্ট্রাল অক্সিজেন নেই খানপুরে, নষ্ট ২ আইসিইউ মনিটর খানপুর ৩শ শয্যা হাসপাতাল

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের একমাত্র করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল খানপুর ৩শ শয্যা হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র (আইসিইউ) থাকলেও সেখানে নেই সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম।  

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এই হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটে মোট আইসিইউ শয্যা আছে ১০টি।

এর মধ্যে ৮টি শয্যা বর্তমানে সচল আছে, দুটি শয্যার মনিটর নষ্ট। হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটে ম্যানুয়াল অক্সিজেন ব্যবস্থা থাকায় প্রতিটি জটিল রোগীকে অক্সিজেন চলা অবস্থায় একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার খুলে আরেকটি সংযুক্ত করতে হয়।  

হাসপাতালটিতে প্রতি মিনিটে আইসিইউ ইউনিটে প্রয়োজন হয় ৭০ থেকে ৮০ লিটার অক্সিজেন। এখানে ২৫০ থেকে ৩শটি সিলিন্ডার থাকলে ২৪ ঘণ্টা আইসিইউ ইউনিটে অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত রাখা সম্ভব।
সেখানে এই হাসপাতালে আছে ১শ এর মত। বিকেএমইএ একটি ট্রাক দিয়েছে এবং দুটি গাড়ি দিয়েছে অক্সিজেন কোম্পানি। তিনটা গাড়ি রাত দিন ২৪ ঘণ্টা চলমান থাকে অক্সিজেন রিফিল করতে। মোহাম্মদপুর থেকে এই অক্সিজেন রিফিল করে সিলিন্ডারগুলো আনতে হয়। গাড়িগুলোর আসা যাওয়ার তো একটা সময়ের প্রয়োজন হয়। তবুও হাসপাতালে সেবা অব্যাহত রয়েছে।  

বর্তমানে হাসপাতালের ৭৭টি বেডে করোনা আক্রান্ত রোগী ভর্তি আছেন। ৭ জন রোগী আছেন আইসিইউতে।  

এর মধ্যে আক্রান্ত রোগীদের সেবা প্রদান করতে গিয়ে হাসপাতালের পাঁচ জন নার্স, একজন ডাক্তার ও তিন জন স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এদের সবাই নিজ নিজ বাসায় আইসোলেশনে রয়েছেন এবং সবাই ভালো আছেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল বাশার।  

তিনি জানান, আমাদের নয় জন ইতোমধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন তারা ভালো আছেন, বাড়িতেই আইসোলেশনে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন।

তিনি আরো বলেন, আমাদের হাসপাতালের দুটি মনিটর নষ্ট, ইতোমধ্যে আমরা আরো ১২টি মনিটরের চাহিদা দিয়েছি। আমাদের এখানে আইসিইউতে প্রতি মিনিটে ৭০ থেকে ৮০ লিটার অক্সিজেন প্রয়োজন হয় তবে আমাদের এখানে যেহেতু ম্যানুয়াল সিস্টেম তাই নিজেদেরকেই সিলিন্ডার পরিবর্তন করতে হয় শেষ হলে। আইসিইউতে প্রয়োজন হয় সেন্টাল অক্সিজেন সিস্টেম যেটি এখানে নেই। আমাদের এখানে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম হতে আরো ৩ মাসের মত লাগতে পারে।

তিনি জানান, আমাদের এখানে প্রতিদিন সাড়ে ৩শ নমুনা সংগ্রহ করে আমরা পরীক্ষা করতে পারছি। আমাদের দুটি পিসিআর মেশিন রয়েছে এবং প্রতিটি মেশিনের একটি করে সেটাপে আমরা ৯০টি করে টেস্ট করতে পারি। প্রতিদিন সাড়ে ৩শ এর মত আমরা পরীক্ষা করছি। আমাদের এখানে করোনার টিকাও চলমান আছে, প্রথম ডোজ এবং দ্বিতীয় ডোজও চলমান আছে।  

এদিকে নারায়ণগঞ্জ সদর জেনারেল হাসপাতালে শুধুমাত্র সাধারণ রোগীদের সেবা দেওয়া হয়। হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) আসাদুজ্জামান জানান, আক্রান্ত নেই আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা। স্বাভাবিক সেবা চলছে আমাদের এখানে। করোনা সন্দেহ হলে আমরা খানপুর কিংবা অনত্র স্থানান্তর করে দেই।  

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রাইভেট ক্লিনিক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহীন মজুমদার বলেন, আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা আক্রান্ত থাকতে পারে তবে কোনো হাসপাতাল ক্লিনিক বন্ধ নেই। যদি কোনো কোভিড আক্রান্ত সন্দেজভাজন রোগী হয় তাহলে তাকে আমরা স্পেশালাইজড হাসপাতালে পাঠিয়ে থাকি। দুঃসময়ে সেবা চলমান থাকবে। সরকারের পাশাপাশি আমরাও নমুনা সংগ্রহে আমাদের লোকবল দিতে সহায়তা করছি।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।