ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

করোনায় সেবা দেওয়া ২৬৭৯ নার্স পেলেন ২ মাসের বিশেষ সম্মানী 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০২১
করোনায় সেবা দেওয়া ২৬৭৯ নার্স পেলেন ২ মাসের বিশেষ সম্মানী 

ঢাকা: করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ায় কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালসহ ২২ প্রতিষ্ঠানের দুই হাজার ৬৭৯ নার্সকে দেওয়া হয়েছে দুই মাসের বিশেষ সম্মানী।

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবালয় অংশে সম্মানী খাতে বরাদ্দ ১৫০ কোটি টাকার অব্যায়িত অর্থ থেকৈ ২২ প্রতিষ্ঠানকে ১১ কোটি ৫ লাখ ১২ হাজার ৩৫০ টাকা দেওয়া হয়েছে।

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনা ভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। তাদের জন্য আরও আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা করেছে সরকার। গত বছরের ২৯ এপ্রিল গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসক, নার্সসহ স্বাস্থ্যখাতে যারা নিয়োজিত আছেন, তাদের পুরস্কৃত করা হবে। কিন্তু যারা পালিয়ে আছেন, তারা এই প্রণোদনা পাবেন না।  

সে ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষ প্রণোদনা হিসেবে অতিরিক্ত দুই মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ এককালীন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

যেসব প্রতিষ্ঠানের নার্সরা বিশেষ সম্মানী পেয়েছে সেগুলো হলো: কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের ৪৮৪ নার্সের জন্য ১ কোটি ৯৪ লাখ ৮২ হাজার ৬৬০ টাকা, মুন্সিগঞ্জে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ২২ নার্সের জন্য ৮ লাখ ২০ হাজার ৬৮০ টাকা, কমলাপুর রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতালের ১৮ নার্সের জন্য ৬ লাখ ৬০ হাজার ৫২০ টাকা, রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের ৮৬ নার্সের জন্য ৩৪ লাখ ৯৩ হাজার ৪৬০ টাকা, উত্তরার কুয়েত মৈত্রী সরকারি হাসপাতালের ২৬৫ নার্সের জন ১ কোটি ৯১ হাজার ২৪০ টাকা, মুগদার ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ৪৫৭ নার্সের জন্য ১ কোটি ৯৫ লাখ ৭৫ হাজার ৬৮০ টাকা, বসুন্ধরার অস্থায়ী কোভিড-১৯ আইসোলেশন কেন্দ্রের ১৫ নার্সের জন্য ৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা, রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের ৩৩ নার্সের জন্য ১৩ লাখ ৫৩ হাজার ৯৪০ টাকা, নারায়ণগঞ্জের ৩০০ শয্যা বিশিস্ট কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতালের ১৮৫ নার্সের জন্য ৮৭ লাখ ৫৭ হাজার ৬৪০ টাকা, মহাখালীর শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ২৪৮ নার্সের জন্য ৮২ লাখ ২৭ হাজার ৮৬০ টাকা, চাঁদপুরের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের ৬২ নার্সের জন্য ২৫ লাখ ৮৬ হাজার ১৮০ টাকা, মিরপুরের মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান লালকুঠির ৮২ নার্সের জন্য ২৮ লাখ ৩৯ হাজার ৭৮০ টাকা।

এছাড়াও বগুড়ার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের ২৪৮ নার্সের জন্য ১ কোটি ২৫ লাখ ৮৭ হাজার ৫৪০ টাকা, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের ৩১ নার্সের জন্য ১৩ লাখ ৬৯ হাজার ৯১০ টাকা, নওগাঁ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ৫৫ নার্সের জন্য ২৫ লাখ ৭৫ হাজার ৫২০ টাকা, বরিশাল জেনারেল হাসপাতালের ৫৪ নার্সের জন্য ১৩ লাখ ১ হাজার ১৮০ টাকা, বাগেরহাট সদর হাসপাতালের ৫০ নার্সের জন্য ২৩ লাখ ২৮ হাজার ৮২০ টাকা, খুলনার ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালের (ডায়াবেটিক হাসপাতাল) ১০ নার্সের জন্য ৫ লাখ ১১ হাজার ৩৪০ টাকা, চট্টগ্রামের হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতালের ২৩ নার্সের জন্য ১০ লাখ ৫ হাজার ৯৮০ টাকা, হবিগঞ্জের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ৬০ নার্সের জন্য ২৬ লাখ ৮৪ হাজার ৪২০ টাকা, সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন আহমেদ হাসপাতালের ১৫১ নার্সের জন্য ৫৮ লাখ ৮৮ হাজার ৯৮০ টাকা, মাদারীপুরের কোভিড হাসপাতাল ও মাদারীপুর জেলা সদর হাসপাতালের ৪০ নার্সের জন্য ১৮ লাখ ৭৫ হাজার ৯২০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

সম্মানী প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নিম্নবর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে: স্বাস্থ্য অধিদফতর বা নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদফতর, নির্দিষ্ট ফরমে প্রাপ্ত আবেদন যাচাই-বাছাইপূর্বক সম্মানীর জন্য উপযুক্ত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীর নামের তালিকা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে পাঠাবে। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ তালিকা যথাযথভাবে যাচাই-বাছাই করে অর্থ বিভাগের সম্মতিক্রমে সম্মানী দেওয়ার সরকারি আদেশ জারি করবে।

এছাড়া সম্মানী বাবদ ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অনুকূলে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এ সম্মানী বর্তমানে প্রচলিত অন্য যেকোনো প্রজ্ঞাপন বা আদেশে বর্ণিত সম্মানীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য আর্থিক সহায়তা বা অনুদানের অতিরিক্ত হিসেবে প্রদেয় হবে।

এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে, এককালীন বিশেষ এ প্রণোদনা পেতে আবেদনে ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নাম এবং আইডি নম্বর উল্লেখ করতে হবে। পদবি, অফিস ও বেতন গ্রেড, মূল বেতন এবং এককালীন বিশেষ সম্মানীর পরিমাণ উল্লেখ করতে হবে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবায় কোন হাসপাতাল বা প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত ছিলেন তার নাম ও ঠিকানাও লিখতে হবে।

এছাড়া করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবায় সরাসরি নিয়োজিত ছিলেন মর্মে নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের বা স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রত্যয়ন আবেদেনর সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে। পাশাপাশি মূল বেতনের পক্ষে চিফ অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফিন্যান্স অফিসার বা ডিএও বা ইউএও বা ডিসিএও এর প্রত্যয়ন সংযুক্ত করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০২১
জিসিজি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।