ঢাকা, রবিবার, ১৪ পৌষ ১৪৩১, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

বৃষ্টি উপেক্ষা করে টিকা নিলেন কক্সবাজারবাসী

সুনীল বড়ুয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২২ ঘণ্টা, আগস্ট ৭, ২০২১
বৃষ্টি উপেক্ষা করে টিকা নিলেন কক্সবাজারবাসী ছবি: বাংলানিউজ

কক্সবাজার: শনিবার (৭ আগস্ট) সকাল থেকে কক্সবাজার জেলাজুড়ে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। কিন্তু এর কোনো প্রভাব পড়েনি জেলার টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে।

বৃষ্টি উপেক্ষা করে প্রায় প্রতিটি কেন্দ্রেই ছিল মানুষের ভিড়। তবে জেলা শহরের কেন্দ্রগুলোতে তুলনামলূক বেশি ভিড় ছিল।

জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের হিসাব মতে, কক্সবাজার জেলার আট উপজেলার ৭২টি ইউনিয়ন এবং কক্সবাজার পৌরসভার ১২টি ওয়ার্ডসহ মোট ৮৪ কেন্দ্রে করোনার গণটিকাদান কর্মসূচি চলছে। কর্মসূচির প্রথম দিন প্রায় ৪৬ হাজার মানুষকে টিকা দেওয়া হবে।

টিকা নিয়ে আগ্রহ বেড়েছে সাধারণ মানুষের

শনিবার সকাল ১১টা। কক্সবাজার শহরের নার্সিং ইনস্টিটিউট টিকা কেন্দ্রে নারী-পুরুষের দীর্ঘ লাইন। শত শত নারী-পুরুষ বৃষ্টির মধ্যে ছাতা মাথায় টিকার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন। একই চিত্র দেখা গেল বিমানবন্দর হাইস্কুল কেন্দ্রেও।  

কক্সবাজার নার্সিং ইনস্টিটিউটে টিকা নিতে এসেছেন শহরের ঘোনারপাড়ার ববিতা রাণী বিশ্বাস (৩৮)। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, করোনা নিয়ে খুব আতঙ্কের মধ্যে আছি। আতঙ্ক কাটাতে তাই বৃষ্টি উপেক্ষা করে টিকা নিতে এসেছি।  

আগে নেননি কেন? উত্তরে ববিতা বলেন, মানুষের কথা শুনে ভয়ে নেওয়া হয়নি।

একই কেন্দ্রে লালদীঘির পাড় থেকে আসা রহিম উল্লাহ (৪৫) বাংলানিউজকে বলেন, টিকা নিয়ে আগে নানা জনের মুখে বিভিন্ন রকমের কথা শুনেছি। তাই নিতে ভয় পেয়েছিলাম। এখন সেই ভয় কেটে গেছে। কারণ, টিকা যারা নেননি, তাদেরই সমস্যা বেশি হচ্ছে— এমনটা দেখা যাচ্ছে।

শুধু জেলায় নয়, উপজেলার বিভিন্ন কেন্দ্রেও ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। রামুর ফতেখাঁরকুলের কেন্দ্রীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন টিকা কেন্দ্রেও দেখা গেছে মানুষের দীর্ঘ সারি। এখানকার অনেকের অভিমত, টিকা নিয়ে যে বিভ্রান্তি ছিল, তা কেটে গেছে। যে কারণে টিকার প্রতি মানুষের আগ্রহ বেড়েছে।

রামু কেন্দ্রীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে টিকা নিতে আসেন হাজারীকুল গ্রামের বৃদ্ধ গুরাধন বড়ুয়া (৭৫)। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, টিকা যারা নিয়েছেন, তারা অনেক ভালো আছেন বলে শুনছি। তাই টিকা নিতে এলাম।

‘প্রতিদিন করোনায় মৃত্যুর খবর শুনছি, খুব ভয়ের মধ্যে আছি। বৃদ্ধ মানুষ কী হতে কী হয়। তাই টিকা নিতে পেরে মনে সাহস এসেছে। ’ যোগ করেন গুরাধন।

রামু উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ড. নোবেল কুমার বড়ুয়া বাংলানিউজকে বলেন, রামু উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের প্রতি কেন্দ্রে ৬০০ জন করে ১১টি কেন্দ্রে ছয় হাজার ৬০০ জনকে টিকা দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও উপজেলা হাসপাতালে রেজিস্ট্রেশন করা লোকজনকে যথারীতি টিকা দেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ফতেখাঁরকুল সদর ইউনিয়নে মানুষের ভিড় খুব বেশি। বিশেষ করে আমরা মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী এবং বয়স্ক লোকদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেওয়া হচ্ছে। এরপরও যদি ৬০০ জনের হয়ে যায় তাদেরও আশ্বস্থ করছি পরে টিকা দেওয়া হবে।

কক্সবাজার সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমান বাংলনিউজকে বলেন, জেলায় ৭২টি ইউনিয়নের ৭২ কেন্দ্রসহ মোট ৮৪টি টিকাদান কেন্দ্রে গণটিকাদান কর্মসূচি চলছে। এসব কেন্দ্রগুলোতে কাজ করছে স্বাস্থ্য বিভাগে ২২৮টি প্রশিক্ষিত দল। সব মিলে প্রথম দিনে ৪৬ হাজার মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। টিকা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে কিছু বিভ্রান্তি ছিল। এখন তা কেটে গেছে। যে কারণে প্রত্যেক টিকা কেন্দ্রে মানুষজনের ভিড়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৭, ২০২১
এসবি/এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।