ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

সর্বাধিক ঝুঁকির তালিকায় বাংলাদেশ

খাদ্যে ট্রান্স ফ্যাটি নিয়ন্ত্রণে হচ্ছে বিধিমালা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২১
খাদ্যে ট্রান্স ফ্যাটি নিয়ন্ত্রণে হচ্ছে বিধিমালা

ঢাকা: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রতিবেদন অনুযায়ী ট্রান্সফ্যাট জনিত হৃদরোগে মৃত্যুর সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ ১৫টি দেশের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশের নাম। এ কারণে সরকার তথা নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ‘খাদ্যদ্রব্যে ট্রান্সফ্যাটি এসিড নিয়ন্ত্রণ প্রবিধানমালা-২০২১’ করার উদ্যোগ নিয়েছে।

এরই মধ্যে আইনের খসড়া তৈরি হয়েছে। এটা এখন সঠিকতা যাচাইয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে।

শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) ভবনের শহীদ ডা. শামসুল আলম খান মিলন সভাকক্ষে এক কর্মশালায় এমন তথ্য জানানো হয়।

গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের (জিএইচএআই) সহায়তায় ‘ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণ প্রবিধানমালা: অগ্রগতি ও করণীয়’ শীর্ষক সাংবাদিক কর্মশালা আয়োজন করে অ্যাডভোকেসি ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান)।

কর্মশালায় বলা হয়, খাদ্যে উচ্চমাত্রার শিল্পোৎপাদিত ট্রান্সফ্যাটের কারণে প্রতিবছর পৃথিবীতে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ হৃদরোগে মারা যায়। ডব্লিওএইচওর প্রতিবেদন অনুযায়ী ট্রান্সফ্যাট জনিত হৃদরোগে মৃত্যুর সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ ১৫টি দেশের তালিকায় বাংলাদেশেরও নাম রয়েছে।

কর্মশালায় ব্রাক ইউনিভার্সিটির জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অব পাবলিক হেলথের অ্যাসোসিয়েট সায়েন্টিস্ট আবু আহমেদ শামীম বলেন,  শিল্পোৎপাদিত ট্রান্সফ্যাট খাদ্যের একটি বিষাক্ত উপাদান যা হৃদরোগজনিত অকাল মৃত্যুঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। ডালডা বা বনস্পতি ঘি এবং তা দিয়ে তৈরি বিভিন্ন খাবার, ফাস্টফুড ও বেকারি পণ্যে ট্রান্সফ্যাট থাকে।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের ইপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, আমাদের গবেষকদল ঢাকার ডালডা নমুনার ৯২ শতাংশে ডব্লিউএইচও সুপারিশকৃত ২ শতাংশ মাত্রার চেয়েও বেশি ট্রান্সফ্যাট (ট্রান্স ফ্যাটি এসিড) পেয়েছেন, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

কর্মশালায় প্রজ্ঞার পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা ২০২৩ সালের মধ্যে বিশ্বের খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খল থেকে ট্রান্সফ্যাট নির্মূলের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ) ‘খাদ্যদ্রব্যে ট্রান্স ফ্যাটি এসিড নিয়ন্ত্রণ প্রবিধানমালা-২০২১’ প্রণয়নে কাজ করছে।

বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের (বিএফএসএ) সদস্য মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন,  খাদ্য মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে খসড়া প্রবিধানমালাটি চূড়ান্ত করতে ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। আশাকরি দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি চূড়ান্ত হবে।

গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের (জিএইচএআই) বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মো. রূহুল কুদ্দুস বলেন, ট্রান্সফ্যাট নির্মূলের অর্থনৈতিক গুরুত্বও অনেক। আমাদের প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের রপ্তানি বাজার দিন দিন বাড়ছে। ট্রান্সফ্যাটমুক্ত পণ্য তৈরি করতে না পারলে আমরা আন্ত‍র্জাতিক বাজার হারাবো, অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশ। সেই সঙ্গে দেশে ট্রান্সফ্যাটজনিত হৃদরোগের ঝুঁকি এবং চিকিৎসা খাতে ব্যয় বাড়বে।

কর্মশালায় প্রজ্ঞার পক্ষ থেকে মূল উপস্থাপনা তুলে ধরেন ট্রান্সফ্যাট নির্মূল প্রকল্পের টিমলিডার মো. হাসান শাহরিয়ার এবং প্রকল্প সমন্বয়ক মাহমুদ আল ইসলাম শিহাব।

কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন এটিএন বাংলার বার্তা সম্পাদক নাদিরা কিরণ এবং প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের।

বাংলাদেশ সময়: ২০১১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮,২০২১
ইএস/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।