ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

সিজার করার সময় মূত্রথলি কেটে ফেলেন চিকিৎসক!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০২২
সিজার করার সময় মূত্রথলি কেটে ফেলেন চিকিৎসক!

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে ফাতেমা রওশন জাহান নামে এক গাইনি চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অস্ত্রোপচারের (সিজার) সময় প্রসূতির মূত্রথলি ও রক্ত সঞ্চালনের কয়েকটি রগ (শিরা) কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে।  

জরায়ুর পরিবর্তে কাটা মূত্রথলি দিয়ে নবজাতককে জোরপূর্বক বের করার চেষ্টা করা হয়।

ফলে শিশুর মাথায় জখম হয়। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মা ও শিশুকে নোয়াখালীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।  

রওশন জাহান লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের চৌপল্লী বাজারের আলহাজ সামছুল হুদা আধুনিক মা ও শিশু হাসপাতালের চিকিৎসক। তিনি চট্টগ্রামের আনোয়ার থানার মাধবপুর গ্রামের বাসিন্দা।  

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে প্রসূতির স্বামী ওমান প্রবাসী আশেক এলাহী সবুজ জেলা সিভিল সার্জন ও চন্দ্রগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।

এতে চিকিৎসক রওশন জাহান ও অপারেশন থিয়েটার (ওটি) ইনচার্জ বিলকিছ আক্তারের নামোল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় ৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।  

অভিযোগকারী সবুজ উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের কাশারী গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে।  

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ এপ্রিল সবুজের স্ত্রী শারমিন আক্তার রিমার প্রসব বেদনা উঠলে তাকে বাড়ির পাশের আলহাজ সামছুল হুদা আধুনিক মা ও শিশু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রথম থেকে পরিবারের পক্ষ থেকে চিকিৎসকদের স্বাভাবিক প্রসবের (নরমাল ডেলিভারি) জন্য চেষ্টা করার অনুরোধ করা হয়। কিন্তু চিকিৎসক রওশন ও বিলকিস কৌশলে ভয় দেখিয়ে সিজারের জন্য চাপ দেয়। এতে উপায় না পেয়ে সবুজসহ পরিবারের লোকজন রাজি হয়।

সিজারের সময় রিমার মূত্রথলি কাটা যায়। তাৎক্ষণিক রক্ত বন্ধ না করে চিকিৎসক মূত্রথলি আরও কাটে। এসময় কয়েকটি রক্ত সঞ্চালন রগ (শিরা) কাটা যায়। এতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। এর মধ্যে নবজাতককে জরায়ুর পরিবর্তে মূত্রথলি দিয়ে জোরপূর্বক বের করার চেষ্টা করা হয়। বিষয়টি দেখে অচেতন করার চিকিৎসক হুমায়ুন কবির শান্ত বারণ করেন। পরে শান্তর সহযোগিতায় সিজার সম্পন্ন হয়। কিন্তু অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রিমার ও জোরপূর্বক প্রসবে নবজাতকের মাথায় জখম হয়।  

অচেতনের চিকিৎসক হুমায়ুন কবির শান্ত সাংবাদিকদের বলেন, জরায়ু ও মূত্রথলি পাশাপাশি প্রসবের চাপ বেশি ছিল। কিন্তু জরায়ুর মুখ ছোট থাকায় নবজাতক আটকে যায়। এ সময় চিকিৎসক অস্ত্রোপচার করতে গেলে মূত্রথলি কাটা যায়। এতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। দেখতে পেয়ে আমি সিজার করতে সহযোগিতা করেছি।  

চিকিৎসক ফাতেমা রওশন জাহান বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগটি সত্য নয়। বিষয়টি নিয়ে সিভিল সার্জনের সঙ্গে দেখা করে কথা বলবো। প্রসূতি ও নবজাতক সুস্থ আছে বলে আমি জানতে পেরেছি। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে অভিযোগ করা হয়েছে।

চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোসলেহ উদ্দিন অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে বলেন, অভিযোগটি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

লক্ষ্মীপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. আহাম্মদ কবীর বলেন, ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগটি পেয়েছি। তদন্তের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০২২
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।