ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ভারত

পিকে হালদারদের আরও ৩৬ দিনের জেল

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৮, ২০২২
পিকে হালদারদের আরও ৩৬ দিনের জেল

কলকাতা: বাংলাদেশের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ভারতে বন্দি বাংলাদেশি পিকে হালদারসহ ছয় অভিযুক্তকে আগামী বছরের ১৩ জানুয়ারি আদালতে তোলা হবে।  

বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) এমনই নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতার নগর দায়রা আদালতের সিবিআই স্পেশাল কক্ষ-৩ এর বিচারক শুভেন্দু সাহা।

গত ১৭ নভেম্বর শেষবার পিকে হালদারদের আদালতে তোলা হয়েছিল। ২২ দিনের মাথায় এদিন তাদের ফের আদালতে তোলা হয়। এদিন অভিযুক্ত প্রানেশ হালদারের আইনজীবী আদালতে নতুন করে জামিনের আবেদন করেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রানেশকে জামিন দেওয়া হবে কিনা তারই শুনানি হবে ৩৭ দিনের মাথায় অর্থাৎ আগামী ১৩ জানুয়ারি।

অপরদিকে বিচারক ইডির আইনজীবীকে নির্দেশ দিয়েছিলেন মামলার রিয়ালেড আপন কপি (১০০ পাতার নথির ফটোকপি) অভিযুক্তদের আইনজীবীদের হাতে দেওয়ার। তারই সফট কপি এদিন পেন ড্রাইভে জমা দিয়েছে ইডির আইনজীবী।

প্রসঙ্গত, ইডির তরফে আগে ফটোকপি দেওয়া হয়েছিল। তা অস্পষ্ট থাকায় সফট কপির দাবি করেছিলেন তারা। বিচারক তাতে অনুমতি দিয়েছিল। এদিন ইডির আইনজীবী অরিজিত চক্রবর্তী সেই সফট কপি পেন ড্রাইভে করে অভিযুক্তদের আইনজীবীদের হাতে তুলে দেন।

এছাড়া এদিন দুই অভিযুক্ত আমনা সুলতনা ওরফে শার্লি হালদার ও ইমাম হোসেনকে জেল হেফাজতে চিকিৎসার জন্য নির্দেশ দেন বিচারক।

ইডির আইনজীবী সাংবাদিকদের বলেন, এতদিন বিচার বিভাগীয় তদন্ত চলছিল, এখন বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে।

তার আগে গত ২২ সেপ্টেম্বর হালদাদের আদালতে তোলা হয়েছিল। এক সূত্র মারফত জানা যায়, এ মামলা আর দীর্ঘায়িত করতে চায় না ভারত। সে কারণে নতুন করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আদালতে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দেয়নি ইডির আইনজীবী। ভারত চাইছে না, ভারতীয় আইন অনুযায়ী মামলার নিষ্পত্তি হোক। বরং হালদারদের মামলা ভারতে দীর্ঘায়িত না করে আগামী বছরের শুরুর দিকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে পিকে হালদারসহ ছয় অভিযুক্তদের।  

সূত্র মারফত জানা যায়, হালদারদের ফেরত পাঠানো হতে পারে দুদেশের মধ্যে বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী। আগামী বছরই হালদারদের পাঠানো হবে দেশে।  

প্রসঙ্গত, হালদারদের দুটি মামলাই প্রথম থেকে দেওয়া হয়েছে। অবৈধ অর্থপাচার ও দুর্নীতি দমন আইন। আদালতে পিকে হালদাররা বাংলাদেশি প্রমাণ হয়ে গেলেও ফরেনার্স অ্যাক্ট দেওয়া হয়নি।  

সূত্র তরফে জানা যায়, ভারতে মামলাটা আর দীর্ঘয়িত করতে চায় না বলেই ফরটিন ফরেনার্স দেওয়া হচ্ছে না।

এদিন নিয়ে ২২৩ দিন ভারতের জেলে বন্দি হালদাররা। বাংলাদেশের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎকারী পিকে হালদার ও তার পাঁচ সহযোগীকে গত ১৪ মে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪পরগনার অশোকনগর থেকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় আর্থিক তদন্তকারী সংস্থা ইডি। এরপর ১৪ দিন নিজের রিমান্ডে পায় সংস্থাটি। গত ২৭ মে আদালতের রায় অনুযায়ী, বিচার বিভাগীয় তদন্তের কারণে ১১ দিনের জুডিসিয়াল কাস্টডি (জেসি) হয় পিকে হালদারদের।

ঠিক একইভাবে ৭ জুন আদালতে তোলা হলে তাদের বিরুদ্ধে ১৪ দিনের জেসি হয়। ২১ জুন আদালতের রায় অনুযায়ী, আরও ১৪ দিনের জেসি হয়। এরপর ৫ জুলাই আদালতে তোলা হলে ১০ দিনের জেসি দেন আদালত। ১৫ জুলাইয়ের রায় অনুযায়ী, ফের ১০ আগস্ট শুনানি হয় হালদারদের। ২২ সেপ্টেম্বর হালদারদের ৫৬ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারপতি। ১৭ নভেম্বর আদালতে হালদারদের পেশ করা হলে ৪ ডিসেম্বর আদালতে তোলার নির্দেশ দেন বিচারপতি। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) আদালতে তোলা হলে বিচারক আগামী ১৩ জানুয়ারি অবদি অতিরিক্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

পিকে হালদারসহ পাঁচ সহযোগী আছেন কলকাতার প্রেসিডেন্সি জেলে ও নারী সহযোগী আমিনা সুলতানা আছেন কলকাতার আলিপুর সংশোধনাগারে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০২২
ভিএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।