ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ০২ জুলাই ২০২৪, ২৪ জিলহজ ১৪৪৫

ভারত

নতুন বছরেও পশ্চিমবঙ্গে মিলছে অবৈধ রুপি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৭, ২০২৩
নতুন বছরেও পশ্চিমবঙ্গে মিলছে অবৈধ রুপি

কলকাতা: বিদায়ী ২০২২ সালে কলকাতা-সহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকা থেকে উদ্ধার হয়েছিল রাশি রাশি অবৈধ রুপি। যা দেখে চমকে গিয়েছিলেন গোটা রাজ্যবাসী।

এবার নতুন বছরে সেই তালিকায় যুক্ত হলো পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহের নাম।  
শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) খড়দহে এক অধ্যাপকের ফ্ল্যাট থেকে রাজ্য পুলিশ উদ্ধার করেছে নগদ ৩২ লাখ রুপি।

খড়দহ নাথুপাল ঘাট রোড এলাকায় শিরোমণি ভবনের একটি ফ্ল্যাটে স্ত্রী, পুত্রকে নিয়ে থাকেন অধ্যাপক অমিতাভ দাস। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই ওই ফ্ল্যাটে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ ও ব্যারাকপুর কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগের কর্তারা। সেই তল্লাশিতেই উদ্ধার হয় নগদ ৩২ লাখ রুপি। সবকটিই প্রায় ২০০০ রুপির বান্ডিল, একটি ৫০০ রুপির বান্ডিল।

কী কারণে অধ্যাপক অমিতাভ দাসের ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালানো হলো? তা নিয়ে পুলিশের তরফে কিছু বলা হয়নি। প্রতিবেশিরা জানান, অমিতাভ দাস পেশায় একজন অধ্যাপক এবং তিনি তার স্ত্রী বর্ণালী সাধুখা ও এক সন্তানকে নিয়ে ওই ফ্ল্যাটে গত আড়াই বছর ধরে বসবাস করেন। অধ্যাপকের আচারণে কোনোদিন অস্বাভাবিক কিছু চোখে পড়েনি।

তবে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার নাম করে লাখ লাখ রুপি কমিশন নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে অধ্যাপক অমিতাভ দাসের বিরুদ্ধে। সেই বেআইনি অর্থের অংশ বিশেষ নিজের ফ্ল্যাটে অমিতাভ দাস রেখেছিলেন বলে অনুমান তদন্তকারীদের।

তবে এই ঘটনায় ফিরল গত বছরের স্মৃতি। রাজ্যের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের কলকাতার টালিগঞ্জ ও বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট থেকে ২০২২-এর জুলাই মাসে নগদ প্রায় ৫০ কোটি রুপি উদ্ধার করেছিল ইডি। মিলেছিল প্রচুর স্বর্ণের গহনাসহ নানা দ্রব্য। এরপর গত সেপ্টেম্বরে কলকাতার গার্ডেনরিচে পরিবহন ব্যবসায়ী আমির খানের বাড়ি ও দফতরে হানা দিয়ে ১৭ কোটি রুপি উদ্ধার করেছিল ভারতের আর্থিক বিষয়ক তদন্তকারী সংস্থার (ইডি) কর্তারা। অমিরের বিরুদ্ধে মোবাইল অ্যাপ সংক্রান্ত প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। যদিও আমির মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরাদ হাকিম ঘনিষ্ঠ বলে অভিযোগ রয়েছে।

এরপর গত সেপ্টেম্বরে মাসে মালদহ জেলার গাজোলের ঘাকশোল এলাকার মাছ ব্যবসায়ী জয়প্রকাশ সাহার বাড়িতে অভিযান চালান সিআইডি। উদ্ধার হয় ১ কোটি ৩০ লাখ রুপি। অভিযুক্ত ব্যবসায়ী ফেনসিডিল পাচারের সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ। এছাড়া গত অগাস্ট মাসে হাওড়ার জেলার পাঁচলায় রাজ্য পুলিশের জালে ধরা পড়ে ঝাড়খণ্ডের ৩ কংগ্রেস বিধায়ক। উদ্ধার হয়েছিল প্রায় ৫০ লাখ রুপি। ঝাড়খন্ডের সরকার ফেলার ষড়যন্ত্রে ওই অর্থ তারা নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ।

এছাড়া গত বছরই অক্টোবরে হাওড়া জেলার শিবপুরে ব্যবসায়ী শৈলেশ পাণ্ডের ভাইয়ের গাড়ি ও ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালায় পুলিশ। গাড়ি থেকে ২ কোটি ও তার ফ্ল্যাটের বক্সখাট থেকে ৬ কোটি রুপি উদ্ধর করে পুলিশ। একাধিক লোককে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে প্রতারণা অভিযোগ রয়েছে শৈলেশদের বিরুদ্ধে।  

বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) কলকাতার খিদিরপুর থেকে ৩০ লাখ রুপি উদ্ধার করে ভারতের অপর এক তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। গত বছর থেকে শুরু হয়ে নতুন বছরেও বিপুল টাকার হদিস মিলছে পশ্চিমবঙ্গে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০২২
ভিএস/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।