ঢাকা, সোমবার, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

আগরতলায় ট্যাংকের নোনা জলে গলদা চিংড়ির রেণু উৎপাদনে সাফল্য  

সুদীপ চন্দ্র নাথ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০০ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২৩
আগরতলায় ট্যাংকের নোনা জলে গলদা চিংড়ির রেণু উৎপাদনে সাফল্য  

আগরতলা (ত্রিপুরা): ডিম ফুটানো থেকে বাচ্চা হওয়া পর্যন্ত সমুদ্রের নোনা জলে বসবাস চিংড়ির। যে কারণে ট্যাংকের নোনা জলে সমুদ্রের পরিবেশ সৃষ্টি করে গলদা চিংড়ির রেণু উৎপাদন করা হয়েছে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে।

 

ত্রিপুরা সরকারের মৎস্য দপ্তরের গবেষকদের চেষ্টায় এ সাফল্য এসেছে। রাজধানী আগরতলার কলেজটিলা এলাকার মৎস্য দপ্তরের ব্রিডিং সেন্টারে গলদা চিংড়ির রেণু উৎপাদন করা হচ্ছে।

এই কেন্দ্রের সুপারিনটেনডেন্ট হীরক সরকার বলেন, বেশ আগে থেকেই রাজ্যে সমুদ্রের নোনা জলের বাইরে কৃত্রিম পরিবেশে কীভাবে গলদা চিংড়ির রেণু উৎপাদন করা যায় এই নিয়ে গবেষণা শুরু হয়। অবশেষে এই কাজে সফলতা আসে এবং এখন নিয়মিত রেণু উৎপাদন করা হচ্ছে। রাজ্যের চাষিরা এখান থেকে রেণু সংগ্রহ করে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বাণিজ্যিকভাবে চিংড়ির চাষ করছেন এবং আর্থিক লাভবান হচ্ছেন। চাষিরা বুঝতে পারছেন যে, চিংড়ি চাষ করে আর্থিকভাবে অনেক বেশি লাভবান হওয়া যায়। তাই তারা দিন দিন চিংড়ি চাষের দিকে ঝুঁকছেন, যে কারণে রেণুর চাহিদা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।

তিনি জানান, হ্যাচারির চৌবাচ্চায় নোনা পানিতে সামুদ্রিক পরিবেশ তৈরি করে এরমধ্যে চিংড়ির ডিম ফুটানো হচ্ছে এবং রেণু  লালন-পালন করা হচ্ছে।  

চাহিদার কারণে চলতি বছর অনেকটা আগে থেকেই রেণু উৎপাদন শুরু করা হয়েছে বলে জানান তিনি।  

এ মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে এবছর রেণু উৎপাদনের কাজ শুরু করা হয়েছে যা অক্টোবর পর্যন্ত চলবে।

হীরক সরকার বলেন, আগরতলার পাশাপাশি উত্তর জেলায় এবং গোমতী জেলায় একটি করে রেণু উৎপাদনের হ্যাচারি রয়েছে। বেসরকারি উদ্যোগে এমন একটি হ্যাচারি রয়েছে। রাজ্যের সব জায়গার পরিবেশ একরকম না হওয়ায় আলাদা আলাদা পরিস্থিতি বিবেচনা করে গবেষণা এবং উৎপাদনের কাজ চালাতে হচ্ছে।  

তবে এখন পর্যন্ত গলদা চিংড়ির রেণু উৎপাদনের সব হ্যাচারিতে সফলভাবে কাজ চলছে বলে জানান তিনি।  

তিনি বলেন, কলেজটিলা এলাকার হ্যাচারিতে বছরে প্রায় ৪ লাখ গলদা চিংড়ির রেণু উৎপাদন করা হয়ে থাকে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এবছরও এই লক্ষ্যমাত্রা স্পর্শ করবে।  

সুপারিনটেনডেন্ট বলেন, রেণুগুলো এক একটি সাড়ে তিন রুপি করে বিক্রি করা হচ্ছে। এই মূল্য আরও কমানো পরিকল্পনা চলছে। রেণুর মূল্য কম হলে চাষিরা আরও বেশি পরিমাণে গলদা চিংড়ি চাষে আগ্রহী হবেন। এর ফলে সাধারণ মানুষ কম দামে বাজার থেকে চিংড়ি কিনতে পারবেন।  

ব্যক্তিগত উদ্যোগে রাজ্যের যারা বিভিন্ন ধরনের মাছের রেণু উৎপাদন করছেন তাদেরও গলদা চিংড়ির উৎপাদনের প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।  

হীরক সরকার বলেন, সম্ভব হলে আরও ব্যাপক হারে রাজ্যে গলদা চিংড়ির চাষ হবে। ফলস্বরূপ সাধারণ মানুষ তাদের খাবারের পাতে বেশি পরিমাণ গলদা চিংড়ি পাবেন।  

জ্যোতিষ দেববর্মা নামে একজন মাছচাষি পশ্চিম জেলার দূর্গাচৌধুরী পাড়া থেকে কলেজটিলায় এসে ৫০০টি গলদা চিংড়ির রেণু নিয়ে যান।  

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আগে কখনো গলদা চিংড়ি চাষ করেননি। অন্যান্য মাছের তুলনায় চিংড়ি লাভজনক। তাই প্রাথমিক পর্যায়ে পরীক্ষা মূলক চাষ করার জন্য এই রেণুগুলো নিয়ে যাচ্ছি। সাফল্য এলে আগামী দিনে আরও বেশি পরিমাণে নিয়ে যাব।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২৩
এসসিএন/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।