ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ভারত

পশ্চিমবঙ্গে ছাত্রী হত্যাকাণ্ডে মমতার মুখে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০২৪
পশ্চিমবঙ্গে ছাত্রী হত্যাকাণ্ডে মমতার মুখে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ

কলকাতা: মমতা মুখে ফের বাংলাদেশ প্রসঙ্গ। পশ্চিমবঙ্গে যখন ছাত্রী হত্যার ঘটনায় শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণ আন্দোলেন শুরু করেছে, সেই সময় বাংলাদেশের আন্দোলন প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিরোধীরা ভাবছে, বাংলাদেশের মতো আন্দোলন করে আমাকে গদিচ্যুত করবে।

কিন্তু আমি ক্ষমতা লোভী নই। আমি ন্যায়ের পক্ষে।

বুধবার (১৪ আগস্ট) ভারতে প্রাক স্বাধীনতা উপলক্ষে এক অনুষ্ঠান থেকে সিপিএম বিজেপি কংগ্রেসের উদ্দেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বাংলাদেশে একটা ঘটনা ঘটে গেছে, সেটা টেনে এনে যদি ক্ষমতা দখল করতে পারে, সেই চিন্তায় আছে ওরা। তাই ওরা একসঙ্গে জোট বেধেছে। কিন্তু আমি ক্ষমতার মায়া করি না। আমি যতদিন বাঁচবো মানুষের সেবা করে যাব। মানুষকে জাস্টিস দিয়ে যাব। যার জন্য ছাত্রী হত্যার ঘটনায় আমি ফাঁসির দাবি করেছিলাম।  

কলকাতা পুলিশের যে সেরা, তার একাধিক কি উদাহরণের মধ্যে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাবেক এমপি হত্যার ঘটনা উল্লেখ করে মমতা বলেন, বাংলাদেশের এমপিকে খুন করে তার ডেড বডি টুকরো টুকরো করে ভাঙরের খালে ফেলে দিয়েছিল। বাংলার পুলিশ না থাকলে এ সত্য উদ্ঘাটন হতো না।

একই সঙ্গে মমতা বলেন, আগে যখন বিদেশ থেকে কোনো ভিআইপি বা এমপির মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি আসত, তখন কেন্দ্রীয় সরকার সেই তথ্য রাজ্য সরকারের সঙ্গে শেয়ার করত। এখন সেসব তথ্য শেয়ার করে না। ফলে আমরা জানতে পারি না বিদেশ থেকে কে কখন আসছেন। যদি আমরা জানতে পারতাম, এমপি আনারের বিষয়টায় গুরুত্ব দিতে পারতাম। আমাদের আফসোস যে আমরা জানতাম না তিনি বাংলাদেশের এমপি। যারা খুন করেছে, যাদের ধরা হয়েছে তারাও বাংলাদেশি।

এরপরই উত্তর প্রদেশ হাথরসের নৃশংস হত্যা থেকে মনিপুর সহিংসতা এবং পশ্চিমবঙ্গের বাম আমলে একাধিক হত্যার তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, আমি কোনো কিছুই ভুলিনি। এখন একটা ঘটনা ঘটে গেছে কোথায় দুঃখ জানাবেন। তার পরিবারকে সমবেদনা জানাবেন। তা না করে সিপিএম বিজেপি রাজনীতি করছে। আন্দোলনের নামে পথে নেমেছে। ভাবছেন, বাংলাদেশে একটা ঘটনা ঘটে গেছে, আমরা সেই প্যাটার্ন টেনে যদি ক্ষমতা দখল করতে পারি? আমরাও আন্দোলন করেছি। কিন্তু আমরা কোনোদিন এ নিয়ে রাজনীতি করিনি।

এখানে বাম রাম শ্যামের খেলা চলছে (সিপিএম বিজেপি কংগ্রেস)। আন্দোলনের নামে যৌথ মঞ্চ বানিয়েছে। তার মানে কি তোমরা সব একসঙ্গে আছো? তোমাদের সবার রং এক? তোমাদের কিসের আদর্শ কিসের নীতি? কিসের আন্দোলন? আমরা শান্ত আছি, আমরা কিছু বলছি না বলে ভাবছো তোমরা এভাবে একতরফা করে যাবে-প্রশ্ন করেন মমতা।

আমি মৃত ছাত্রীর পরিবারের কাছে গিয়েছিলাম। এক ঘণ্টা সময় কাটিয়েছি। আমি এটাও বলেছিলাম, মেয়ে তো আর ফিরে আসবে না। ওর নামে যদি কিছু করতে চান আপনারা করতে পারেন। যা টাকা লাগবে আমি দেবো। কিন্তু ওর মা আমাকে জানিয়েছে, আগে মেয়ে হত্যার বিচার হোক, তারপর বলব। আমি ওনার পরিবারকেও বলেছি, যাদের যাদের প্রতি সন্দেহ হচ্ছে জানান। আর আমাকে রোববার পর্যন্ত সময় দিন। তা ওরা (আন্দোলোকারী) সময় দিল না। হাইকোর্টে গেল। সিবিআইকে তদন্ত তুলে দিল। আমরাও সিবিআইকে সমস্ত তথ্য তুলে দিয়েছি। এখন আমরা চাইবো তারা আগামী রোববারের মধ্যে সব প্রমাণ করুক। ফাঁসি আমরা চাই, বলেন মমতা।

চিকিৎসকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি বারবার আবেদন জানাচ্ছি চিকিৎসকরা ডিউটিতে জয়েন করুন। আপনারা চিকিৎসা দিতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। আপনাদের চিকিৎসা না পেয়ে তিনজন মারা গেছে। দয়া করে বলছি, অনুগ্রহ করে বলছি, পায়ে ধরে বলছি আপনারা মানুষকে পরিষেবা দিন। একই সঙ্গে অনুষ্ঠান থেকে তিনি আগামী ১৬ আগস্ট বিকেল ৩টায় কলকাতার মৌলালি মোড়ে জমায়েত হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০১০১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০২৪
ভিএস/এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।