ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ভারত

চিকিৎসকদের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন কলকাতার মেয়র

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০২৪
চিকিৎসকদের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন কলকাতার মেয়র

কলকাতা: বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে কলকাতার একাধিক হাসপাতাল বাংলাদেশি রোগী দেখবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদিও এই তথ্য হাসপাতালগুলো প্রকাশ্যে স্বীকার করেনি।

তবে তা নিয়ে চিকিৎসকদের ফোরামগুলোর নিজেদের মধ্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।

যদিও এহেন সিদ্ধান্ত নিয়ে চরম বিরোধিতা করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী, তথা কলকাতা মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেছেন, একজন চিকিৎসকের কাজ হল রোগীকে সেবা দেওয়া এবং তাকে সুস্থ করে তোলা। চরম শত্রুর সাথেও চিকিৎসকরা এই আচরণ করতে পারে না। কেউ অসুস্থ হলে তাকে সুস্থ করব না? চিকিৎসক বা চিকিৎসা কেন্দ্রের ধর্মই তো রোগীকে সুস্থ করে তোলা।

তবে জানা যাচ্ছে, চিকিৎসকরা হাসপাতালগুলোকে জানিয়ে দিয়েছে, তাদের জন্য যেন কোনো বাংলাদেশি রোগীর অ্যাপয়েন্টমেন্ট না রাখা হয়। ফলে হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীকে যা বোঝাচ্ছেন তা শুনলে, সাধারণ দৃষ্টিতে মনে হবে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক বিশেষ ব্যস্ততার কারণে তার অ্যাপয়েন্টমেন্ট মিলছে না। যদিও কলকাতার হাসপাতালগুলো জানাচ্ছে তাদের কাছে, এমন কোনো নির্দেশিকা আসেনি। ফলে বাংলাদেশি রোগী দেখা হবে না এই তথ্য সঠিক নয়।

শুক্রবার বিকেলে সামাজিক মাধ্যমে কলকাতার বেসরকারি জেএন রায় হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছে, সাম্প্রতিক পরিস্থিতির জন্য বাংলাদেশের কোনো রোগীকে তারা চিকিৎসাসেবা দেবে না। এবং ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসক শুভ্রাংশু ভক্ত প্রকাশ্যে আহ্বান করছেন, বাকি চিকিৎসকরাও যেন সাময়িক এই সিদ্ধান্ত নেয়।

জানা যায় শনিবার(২৯ নভেম্বর) দুপুর অবদি সব ঠিক ছিল। এরপর এই নিয়ে চিকিৎসকদের ফোরামে একাধিক ফোন মারফত মিটিংও হয়েছে। তারপরই হোটাসঅ্যাপ মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত এক প্রকার গোপনে ডাক্তারদের পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকরা হাসপাতালগুলো জানিয়ে দিয়েছে, বাংলাদেশি রোগীর অ্যাপয়েন্টমেন্ট যাতে না রাখে। যদিও এই সিদ্ধান্ত শুধু বাংলার মধ্যই রয়েছে।  

রোববার(১ ডিসেম্বর) সাপ্তাহিক ছুটির কারণে হাসপাতালগুলোয় এমনিতে আউটডোর রোগী(ওপিডি) দেখা হয় না। তবে একাধিক হাসপাতাল মারফত জানা গেছে, যেসব বাংলাদেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তাদের চিকিৎসা চলছে। এবং বেশ কয়েকটি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে রোববারও অপারেশন হয়েছে।  

তবে এও জানা যায়, বাংলাদেশি রোগী দেখা হবে কিনা তাই নিয়ে সোমবার( ২ ডিসেম্বর) ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ) বৈঠক ডেকেছে। তারপরই বিষয়টি স্পষ্ট হবে। যদি না দেখার বিষয়ে আইএমএ বড় কোনো সিদ্ধান্ত নেয়,তখন সেই নির্দেশনা অফিসিয়ালি আইএমএ  পৌঁছে দেবে গোটা ভারতে চিকিৎসকমহলে। তারপরই বিষয়টা প্রকাশ্যে আসবে। ফলে জেএনরায় হানসপাতাল ছাড়া কলকাতায় এখনও যা হয়েছে, তা একপ্রকার গোপনই রাখা হয়েছে।

এই মুহূর্তে চার হাজারের বেশি বাংলাদেশি কলকাতায় অবস্থান করছেন। তাদের সিংহভাগ ভারতে চিকিৎসা নিতে কলকাতায় এসেছেন। এ ধরনের সিদ্ধান্ত বিষয়ে তাদের কিছু জানা নেই। তাদের মধ্যে অনেকই ক্যান্সারসহ দুরারোগ্য রোগী আছেন। ফলে এইমুহূর্তে তারা ঠিক কি করবেন জানা নেই তাদের। তারা কি চিকিৎসার জন্য বাংলা ছেড়ে বেঙ্গালুরু বা চেন্নাই যাবে? তাও তারা বুঝতে পারছে না। আবার সোমবার থেকে গোটা ভারতে এই সিদ্ধান্ত হলে সেখানেও সমস্যায় পড়বে তারা। তাহলে কি তারা দেশে ফিরে যাবেন? এ বিষয়ে ঢাকাবাসী সামসুর বলেছেন, সোমবার অবদি অপেক্ষা করতে চাই। তারপর সিদ্ধান্ত নেবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, ১ ডিসেম্বর ২০২৪
ভিএস/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।